মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার পশ্চিম জুড়ী ইউনিয়নের কালনীগড় গ্রামের বাসিন্দা পরেন্দ্র দাসের কিশোরী মেয়ে স্বর্ণা দাস (১৪) পার্শ্ববর্তী উপজেলা কুলাউড়া সীমান্ত এলাকায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে মারা গেছে। নিহত স্বর্ণা জুড়ীর নিরোদ বিহারী উচ্চবিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ত। গত রোববার রাতে কুলাউড়া উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের লালারচক সীমান্ত এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে তার লাশ বিএসএফ নিয়ে গেছে বলে জানা গেছে।
পরদিন সোমবার সন্ধ্যার দিকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ৪৬ ব্যাটালিয়নের একটি দল স্বর্ণাদের বাড়িতে যায়। এ সময় খবরটি এলাকায় জানাজানি হয়।
বাবা পরেন্দ্র দাস ও মা সঞ্জিতা রানী দাস বলেন, তাঁদের চার ছেলে-মেয়ে। এক ছেলে দীর্ঘদিন ধরে ভারতের ত্রিপুরায় থাকেন। ছেলেকে দেখতে সঞ্জিতা ছোট মেয়ে স্বর্ণাকে সঙ্গে নিয়ে রোববার রাতে স্থানীয় দুই দালালের সহযোগিতায় লালারচক সীমান্ত দিয়ে চোরাই পথে ভারতে যাওয়ার চেষ্টা চালান। এ সময় তাঁদের সঙ্গে চট্টগ্রামের এক দম্পতিও ছিলেন। রাত ৯টার দিকে ভারতের কাঁটাতারের বেড়ার কাছে পৌঁছালে বিএসএফ তাঁদের লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। এতে স্বর্ণা ঘটনাস্থলে মারা যায়। তাঁদের সঙ্গে থাকা দম্পতিও আহত হন। গুলি থামার পর সঞ্জিতাসহ বাকিরা লালারচক গ্রামের একটি বাড়িতে ঢুকে আশ্রয় নেন। পরে আহত দম্পতিকে চিকিৎসার জন্য সিলেটের এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
লালারচকের বাসিন্দা সেনাসদস্য জহিরুল ইসলামদের বাড়িতে আশ্রয় নেন সঞ্জিতারা। জহিরুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, ‘সীমান্তের কাছেই আমাদের বাড়ি। রোববার রাতে হঠাৎ তিনজন লোক ডাকাডাকি করতে থাকেন। পরে দেখি দুজন গুলিবিদ্ধ। তাঁরা ঘটনা খুলে বলেন। পরে বিজিবির লালারচক বিওপির দায়িত্বে থাকা লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করি। গুলিবিদ্ধ দুজনকে দ্রুত হাসপাতালে পাঠাই। সঞ্জিতা সুস্থ ছিলেন। তাঁর কাছ থেকে নাম-ঠিকানা জেনে স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করি।’
বিজিবির ৪৬ ব্যাটালিয়নের লালারচক বিওপির টহল কমান্ডার নায়েক ওবায়েদ মুঠোফোনে বলেন, কয়েকজন বাংলাদেশি চোরাইপথে ভারতে যেতে চেয়েছিলেন। এর মধ্যে একজন বিএসএফের গুলিতে মারা গেছেন বলে তাঁরা জেনেছেন। তবে এখনো ভারতীয় কর্তৃপক্ষ নিহত কিশোরীর লাশ হস্তান্তর করেনি।
