২৫শে ফেব্রুয়ারি ২০২১ ইং | ১২ই ফাল্গুন ১৪২৭ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১:০৩ পূর্বাহ্ণ, মে ১৫, ২০১৯
বিলেতের বাংলাদেশিরা বৈশাখী মেলার আয়োজন করত আষাঢ় মাসে । এ ছাড়া উপায় ছিল না। কিন্তু ২০০৬ সাল থেকে ১৪ এপ্রিলেই বৈশাখ উদ্যাপনের জোর চেষ্টা চালান একজন নারী । তার জন্য খুব খাটুনি গেছে তার । তিনি সৈয়দা নাজনীন সুলতানা । তাকে সবাই শিখা আপা নামেই চেনেন। তিনি সফল হয়েছেন যথা সময়ে বৈশাখী মেলার আয়োজন করতে ।
লন্ডনে শিখা আপার নেতৃত্বে এবার বাংলা নববর্ষ উদ্যাপন পরিষদ তিন দিন ধরে নববর্ষ উদ্যাপন করেছে তিন জায়গায়। শুধু বাংলাদেশি নয়, নানা ভাষাভাষী ও সংস্কৃতির মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছিল এ আয়োজন। এবারের তিন দিনের আয়োজনের এক দিন ছিল কবিতা উৎসব। এতে ব্রিটেন, ইরান, পাকিস্তানসহ আরো কয়েক দেশের সংস্কৃতিকর্মী ও কবিরা নিজ নিজ ভাষায় কবিতা পড়ে শুনিয়েছেন।
শিখা আপা বলছিলেন, ‘আজ সারা ব্রিটেনের অনেক সংগঠন পহেলা বৈশাখ উদ্যাপন করে। আমরা আমাদের সংস্কৃতি ছড়িয়ে দিতে চেয়েছিলাম। আজ তা সফল হয়েছে। প্রথমবার যখন শুরু করি, ভেবেছিলাম সংগঠনের সদস্য এবং তাদের পরিবার-পরিজন নিয়েই একটা দিন পান্তা-ইলিশ খেয়ে আর গান-বাজনা করে কাটিয়ে দেব; কিন্তু আমরা ভুল ভেবেছিলাম। সেইবারই অন্তত ৫০০ মানুষ যোগ দিয়েছিল। তখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এমন সরব ছিল না। বাংলা পত্রিকা আর টেলিভিশন চ্যানেল ছাড়া প্রচার-প্রচারণারও সুযোগ খুব একটা ছিল না। আমরা ভেবেছিলাম ঈদ, পূজায় যদি সবাই একসঙ্গে হতে পারি, নববর্ষে কেন নয়। আমি পহেলা বৈশাখের শুভেচ্ছা কার্ডও চালু করতে চেয়েছি, নিউ ইয়ার বা ক্রিসমাসে যেমন হয়।’
লন্ডনের পহেলা বৈশাখে চৈত্রসংক্রান্তির মেলাও হয়। মৃিশল্পের পসরা বসে। মণ্ডা-মিঠাই পাওয়া যায়। যাত্রাপালা হয়। শিখা আপারা চাইছেন যেন বিলেতে জন্ম নেওয়া শিশুটিও তার শিকড় থেকে বিচ্ছিন্ন না হয়।
শিখা আপা লন্ডনে আছেন ১৯৮৭ সাল থেকে। ১৯৯১ সালে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। রাজনীতির পাশাপাশি জাগরণ নামে একটি পত্রিকায় কাজ করেন কিছুদিন। ব্রিটেনের মূলধারার রাজিনীতিতেও সক্রিয় তিনি। তিনি টাওয়ার হ্যামলেট লেবার পার্টির বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত প্রথম এমপি রুশনারা আলীর নির্বাচনী প্রচারণায়ও সক্রিয় ছিলেন।
লন্ডনে স্থায়ী শহীদ মিনার হওয়ার আগে ব্রিকলেনের সাড়ে বায়ান্নয় একটি অস্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণ করে তাতে শ্রদ্ধা জানাতেন বাংলাদেশিরা। শিখা সে আয়োজনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।
অকপটে স্বীকার করেন তিন নারীর কথা—সাংবাদিক উর্মি রহমান, সাংবাদিক শামীম চৌধুরী ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ডলি ইসলাম। এ ছাড়া আছেন রহিমা আখতার, সিরাজুন্নেসা আলী আর বীণা দিদি। বললেন, এই মানুষগুলোই আসলে আমাকে দিয়ে নানা কাজ করিয়ে নিয়েছেন, সাহস জুগিয়েছেন, দিকনির্দেশনা দিয়েছেন পথচলায়। সামাজিক-সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি প্রগতিশীল আন্দোলন-সংগ্রামেও সক্রিয় থাকেন শিখা আপা। বাঙালি সংস্কৃতিকে বিশ্বজনীন করতেই কাজ করছেন বলে জানান তিনি। এই ধারাবাহিকতায়ই আয়োজন করেন পৌষ পার্বণ, চৈত্রসংক্রান্তি ও পহেলা বৈশাখ।
সিলেটের মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার মেয়ে শিখা। চাচা সৈয়দ আকমল হোসেন বামধারার রাজনৈতিক নেতা ছিলেন। নানাবাড়ি ছিল হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জে। মামাতো বোনেরা রেডিওতে গান গাইতেন। তাঁর বড় বোন সৈয়দা জেবুন্নেসা হক সিলেটের আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে এক পরিচিত নাম। তাঁর স্বামী এনামুল হককেও সিলেটবাসী চেনে।
২০১৭ সাল থেকে কুলাউড়া এডুকেশন অ্যান্ড অ্যাওয়ারনেস ট্রাস্ট নামের সংগঠন থেকে ১৬ জন গরিব মেধাবী শিক্ষার্থীকে আর্থিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছেন। এখন দেশে ফিরতে চাইছেন। দেশেই স্থায়ী হতে চাইছেন।
Corporate Office:
6/A Eskatan Garden
Dhaka, Bangladesh.
Mobile: 017111-66826
Email: mansoumit@yahoo.com
Helpline - +88 01719305766