ত্রিপক্ষীয় ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে এবার ভারতীয় ভূখণ্ড ও অবকাঠামো ব্যবহার করে বাংলাদেশের কাছে বিদ্যুৎ বিক্রি করতে নেপালের দেয়া প্রস্তাবে সবুজ সংকেত দিয়েছে নয়াদিল্লি।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (১ জুন) নয়াদিল্লিতে সফররত নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দহল (প্রচণ্ড) ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠকে এই সংক্রান্ত দ্বিপক্ষীয় চুক্তিতে রাজি হয় ভারত।
এই চুক্তির মাধ্যমে আঞ্চলিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উম্মোচন হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকেরা। ত্রিপক্ষীয় ব্যবস্থাপনায় ভারত প্রথমবারের মতো এই ধরনের চুক্তিতে রাজি হওয়ায় বিদ্যুৎ ছাড়াও এর মাধ্যমে আঞ্চলিক বাণিজ্য বৃদ্ধি ও সহযোগিতা আরও জোরদার হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ভারতীয় কর্মকর্তারা বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দহলের মধ্যে আলোচনার সময় ভারতীয় পক্ষ নেপালকে ওই সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানিয়ে দিয়েছে।
দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কাত্রা বলেছেন, নেপাল থেকে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ভারতীয় গ্রিডের মাধ্যমে যাতে বাংলাদেশে যেতে পারে, সেটিই আমাদের উদ্দেশ্য।
উভয়পক্ষ রেলওয়ে নেটওয়ার্ক শক্তিশালী করার পাশাপাশি ভারত থেকে নেপালের বিভিন্ন শহরে বিমান যোগাযোগ চালু করার উপায় নিয়েও আলোচনা করেছে।
ভারতীয় এই পররাষ্ট্র সচিব বলেছেন, আঞ্চলিক সংযোগকে জোরদার করার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হিসাবে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ বাণিজ্যের ব্যবহারের চমৎকার সুযোগ রয়েছে। এই ক্ষেত্রে এটিই প্রথম কোনো পদক্ষেপ।
বৈঠকের পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে অংশ নিয়ে নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দহল বলেন, শিগগিরই নেপাল থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ রপ্তানি শুরু হবে। একই সাথে দ্রুত সময়ের মধ্যে ভারত, নেপাল ও বাংলাদেশের মধ্যে একটি ত্রিপক্ষীয় চুক্তি সই হবে।
ভারতীয় ট্রান্সমিশন লাইন ব্যবহার করে নেপালের বিদ্যুৎ বাণিজ্যের অনুমতির জন্য গত কয়েক বছর ধরে নয়াদিল্লিকে চাপ দিয়ে আসছিল ঢাকা ও কাঠমান্ডু। এতদিন ধরে নয়াদিল্লির সবুজ সংকেতের অপেক্ষায় ছিল উভয়পক্ষ।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নয়াদিল্লি সফরের সময় ভারতীয় ভূখণ্ড ব্যবহার করে নেপাল ও ভুটান থেকে বিদ্যুৎ আমদানির বিষয়টি উপস্থাপন করেছিলেন।
গত মে মাসের মাঝের দিকে নেপালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী নারায়ণ প্রকাশ সৌদের ঢাকা সফরের সময়ও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। ওই সময় তিনি বাংলাদেশের বিভিন্ন কোম্পানিকে নেপালের জলবিদ্যুৎ খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছিলেন।
দ্বিপাক্ষিক ঘনিষ্ঠ সম্পর্ককে আরও বিস্তৃত করার জন্য ভারত ও নেপাল পারস্পরিক যোগাযোগ, জলবিদ্যুৎ, পেট্রোলিয়াম অবকাঠামো, আন্তঃসীমান্ত লেনদেন ব্যবস্থা ও সমন্বিত তল্লাশি চৌকি নির্মাণ সংক্রান্ত সাতটি চুক্তিতে সই করেছে।
সূত্র: দ্য নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস
সংবাদটি শেয়ার করুন