২৬শে ফেব্রুয়ারি ২০২১ ইং | ১৩ই ফাল্গুন ১৪২৭ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১২:০৬ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০১৯
তামান্না জেসমিন
প্রকৃতিতে যেমন দিন আছে, রাত্রি আছে, তেমনি আছে নানা বৈচিত্র্য। জীবনের প্রতিদিনেও থাকে ভালো মন্দের প্রতিফলন -যা নিয়েই আমাদের জাগতিক সুখে দুখে জীবন- যাপন। কখনো কখনো এমন মনে হয় যেনো দুখের পাহাড় আর বইতে পারবো না। কখনো আবার যেনো সুখের সাগোর ভাসিয়ে নিয়ে যায় অকূল পারাবারে আর তখুনি মনে হয়-ইশ জীবন কত্ত সুন্দর ..! আমরা পরস্পর পরস্পরের সাথে কী মায়ার জালে বাধা! এই বন্ধন এই বন্ধুতা, এই স্নেহ এই স্নিগ্ধতা, এই আনন্দ এই খুনসুটি -এর বেশী মূল্যবান অরূপ রতন আর কী ই বা হতে পারে?
শেষ পারানির সময়ে খালি হাতে সবাইকেই চলে যেতে হবে একদিন, সেদিন কোনো কিছুই
তো সঙ্গে নিতে পারবোনা ; কেবল হৃদয়কে হৃদয়ের কাছে রেখে যাওয়া ছাড়া! সেই হৃদয়ে কেবল পেলব আদর ভালবাসা ঠাই করে থাকবে সবটা, সীমাহীন। হৃদয়ে শুদ্ধতার সাথে থাকে অসীমত্ব, মহাজগতের সম পরিমান যায়গা। ভালবাসাকে ধারন করে রাখার মতন সেখানে স্থান সংকুলানের সমস্যা নেই। শুধু কতটা দিতে পারি কতটা নিতে পারি সেটাই প্রশ্ন!
আমরা সবাই সবার প্রতি কতটা আবেগমথিত! বিনি সুতায় গাথা এই সম্পর্ক সবসময় রক্তের সঙ্গে রক্তের হতে হবে-এমন তো কোনো কথা নেই। তাই যদি নাই হবে তবে সকল পিতা মাতারা তো রক্তের সম্পর্ক দ্বারা একে অন্যের সাথে যুক্ত হয়নি, বরং এক গহন নীবিড় টান দুটি হৃদয়, দুটি প্রান, দুটি দেহকে একখানে করেছে আর সেখান থেকেই তুমি আমি এবং সবাই।
গতকাল সারাদিন তেমনি এক সময়, সূর্যের আলো এবং জ্যোছনার আলো মিশে একাকার করা মুহূর্ত গুলো জ্বলজ্বলে হয়ে থাকবে স্মৃতির পাতায় অধীর হয়ে।
১৪ তারিখ প্রথম প্রহরে আমার স্বংদ্যুতীটা তার স্কুল থেকে যখন ” Best Creative Mind” award টি গ্রহন করে তখন যেনো আমার চোখের তারায় এক অনাবিল আনন্দের নাচন!
অন্তরে আর বাহিরে বলি -খুব খুব ভালোবাসি মা …
এর মধ্যেই বন্ধু ববি রহমানের সারপ্রাইজ! এজন্য আমি আনন্দিত, উতফুল্ল। হঠাৎ চমকে দেওয়া ববিকে অসংখ্য ধন্যবাদ। শুভকামনা ববি।
ওকে নিয়ে বই মেলায় ছোটা।
সেখানে আরেক সারপ্রাইজ অপেক্ষা করবে – তা কে জানতো!
ঐ যে বলেছিলাম, রক্তের সম্পর্কের ওপারেও সম্পর্ক হয়,আর সেটা দিদি আর ভাই সম্পর্ক।
ভাইফোটা একটি উদযাপন শুধুমাত্র। লেখক রনজিত সরকার আমার জন্য অপেক্ষারত ছিলো তাই নিজের বইয়ের স্টল পাঠশালা অতিক্রম করে ওর বইয়ের স্টলে যেতে হলো। তার “পূজার পড়ালেখা” বইটির মূল্য পরিশোধ করবার সময় রনজিতের অনুরোধ ছিলো বইটির উতসর্গের পাতাটি দেখার জন্য। দেখে তো আমার চোখ ছানাবড়া! কারন এমন প্রত্যাশা আমার কখনো হয়না। গ্রহনের পরিমানটা বেশী হলে বড্ড বেশি দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়ে যাই! চোখ থেকে অবিরত জল গড়ায়। রবির শেষের কবিতার অংশটি মনে পড়ে -“গ্রহন যতো করেছো, ঋনী ততো করেছো আমায় … “
এই সম্মান এই ভালবাসার ঋনমুক্ত হবার জন্য কিছুই কী সাধ্য আছে আমার? যদি হাজার কোটি টাকা থাকতো আমার আর তার সবটাই যদি দিতে পারতাম তবে কী ঋন শোধ হতো! না তা কখনোই না! অর্থ দিয়ে অনেক কিছুই হয় আবার অনেক কিছুই হয়না। এ শ্রদ্ধা, এ সম্মান, এ ভালবাসা, এ মূল্যায়ন আমি মাথায় তুলে নিলাম, আমৃত্যু তোকে ভাইফোটা দিয়ে যাবো পরম আশির্বাদ আর ভালবাসায় …
… তখন মেলার বেধে দেওয় সময় প্রায় শেষ। সন্ধ্যা থেকেই ফোন পেয়েছিলাম প্রিয় লেখক জসিম মল্লিক ভাইয়ের। আধ্যাত্মিক শক্তি না থাকলে কী এমন লেখক হওয়া সম্ভব? তার লেখায় এক নির্মল অনভূতির জলতরঙ্গ বয়ে যায় … আকূল করা সেই লেখার এক ভক্ত পাঠক আমি। তখন রাত। ডিনার টাইম। আমি ট্রিট করবো তাই জসিম ভাই, ববি এবং আমারো প্রিয় খাবার প্রিয় রেস্টুরেন্ট কোরিয়ানাতে সবাই একসাথে। সেই মুহূর্তের আনন্দ হৈচৈ, গল্প স্মৃতি হয়ে থাকবে …
দিনটির সূচনা হয়েছিলো যে ফুলের শুভেচ্ছা গ্রহনের মধ্য দিয়ে, সেই বহুদূরের ওপার হতে এক নৈশব্দিক অনুভূতিতে আচ্ছন্ন হবার মতন আবেগতাড়িত আমি! শুধু একটি কথাই বলবো – জীবন বড় সুন্দর।
শ্যাওলা পরা ময়লা পুকুরে যেমন পরিষ্কার জল খুজি তেমনি লোনা সমুদ্রেও মিঠা জল!! কারন – ভালোবাসি, ভালোবাসি …
Corporate Office:
6/A Eskatan Garden
Dhaka, Bangladesh.
Mobile: 017111-66826
Email: mansoumit@yahoo.com
Helpline - +88 01719305766