৫ই মার্চ ২০২১ ইং | ২০শে ফাল্গুন ১৪২৭ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ২:১৯ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২১
সিমকী ইমাম খান
ভাষা আন্দোলন আমাদের বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের মূল ভিত্তি । পাকিস্থান প্রতিষ্ঠার মাত্র ৫ বছরের মধ্যেই এ দেশের মানুষ পাকিস্তানী জাতীয়তা বোধ থেকে বেরিয়ে আসেন , এবং বাংলা ভাষাকে কেন্দ্র করে দানা বাঁধে বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ । ১৯৭১ সালে তা চূড়ান্ত রূপ লাভ করে । জন্ম নেয় স্বাধীন বাংলাদেশ।
ভাষা আন্দোলন আমাদের জাতীয়তাবাদী চেতনার উন্মেষ ঘটায়- যার রয়েছে বিশাল এক প্রভাব। এই ভাষা আন্দোলনের পথ ধরেই পরবর্তী সব আন্দোলন-সংগ্রামের ডালপালা গজিয়েছিল। তাই ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসকে আমাদের বারবার স্মরণ করতে হয় ।
একুশের চেতনার প্রসারিত প্রভাব থেকেই ৬ দফা, ছাত্রদের ১১ দফা ও মওলানা ভাসানীর ১৪ দফা। এগুলোর সম্মিলিত ফলাফলই হল ’৬৯-এর গণজাগরণ। তার পরিণামে ’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়।
রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনকে ভিত্তি করেই বাংলাদেশের উৎপত্তি। আমাদের জাতীয়তাবোধের সবকিছুই শিখেছি ভাষা আন্দোলন থেকে। আমরা বাঙালি, বাংলা ভাষায় কথা বলি, আমাদের দেশ বাংলাদেশ- এসব বোধ এ আন্দোলন থেকেই পাওয়া। ভাষা আন্দোলন থেকেই উৎসারিত হয়েছে সব মন্ত্র।
তাই ভাষা আন্দোলন আমাদের জাতীয় জীবনে এতটা গুরুত্বপূর্ণ। ভাষা আন্দোলন-পরবর্র্তী সময়ে বাঙালিয়ানার যে জোয়ার আসে সেটাই আমাদের জাতীয়তাবোধের জন্ম দেয়। আর এই জাতীয়তাবোধের উৎসারিত চেতনা থেকেই আমরা এখনও সব আন্দোলন-সংগ্রামে প্রেরণা পাই। শোষণের বিরুদ্ধে, নির্যাতনের বিরুদ্ধে, দাবি আদায়ের সংগ্রামে আমাদেরকে উজ্জীবিত করে ভাষা আন্দোলনের স্মৃতি।
এসব প্রেরণাকে সঙ্গী করেই আমরা এগিয়ে যাই সামনের দিকে। আর আজ যতটা পথ বাংলাদেশ এগিয়েছে তার পেছনে অনুপ্রেরণা আমাদের চিরঅম্লান ভাষা আন্দোলন। আমাদের একুশের চেতনার জন্ম হয়েছিল একটি ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে। তৎকালীন পাকিস্তানে শতকরা ৫৬ জনের মুখের ভাষা বাংলা হলেও শতকরা ৭ জনের মুখের ভাষা উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয় পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী।
আর ১৯৪৮ সালে উর্দুকে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার ঘোষণা দেয়া হয়। এর প্রতিবাদে গর্জে ওঠে বাঙালি। বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে তারা আন্দোলন শুরু করে। ১৯৪৯ থেকে ১৯৫১-র মধ্যে ক্রমে জোরালো হয়ে ওঠে বাংলা ভাষার মর্যাদা আদায়ের দাবি।
১৯৫২ সালে একুশে ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে ‘রাষ্ট্রভাষা দিবস’ ও সাধারণ ধর্মঘট পালনের সিদ্ধান্ত হয়। পাকিস্তান সরকার আন্দোলন দমন করার জন্য ১৪৪ ধারা জারির মাধ্যমে জনসমাগম, জনসভা ও মিছিল নিষিদ্ধ করে দেয়। ছাত্ররা সংগঠিতভাবে ১৪৪ ধারা ভাঙলে পুলিশ গুলি চালায়। শহীদ হন সালাম, রফিক, জব্বার, বরকতসহ আরও অনেকে।এই দিনটি ইতিহাসের এক রক্ত লাল অধ্যায় হয়ে আছে ।
লেখক ঃ আইনজীবী ও বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য
Corporate Office:
6/A Eskatan Garden
Dhaka, Bangladesh.
Mobile: 017111-66826
Email: mansoumit@yahoo.com
Helpline - +88 01719305766