২২শে সেপ্টেম্বর ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই আশ্বিন ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১০:৪৪ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ১৭, ২০১৭
মিয়ানমারের বিরুদ্ধে প্রস্তাব পাস করেছে জাতিসংঘ । সাধারণ পরিষদের থার্ড কমিটিতে ১৬ নভেম্বর বৃহস্পতিবার এ প্রস্তাবে এখনই রাখাইনে রোহিঙ্গাদের উপর দমন পীড়নের সমাপ্তি টানতে বলেছে এই প্রস্তাবে
। জাতিসংঘ মহাসচিবকে মিয়ানমার বিষয়ে একজন বিশেষ দূতও নিয়োগ করতে বলা হয়েছে । ১৩৫টি দেশ এ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছেন, মিয়ানমারের পক্ষে ভোট দিয়েছেন ১০টি দেশ আর ২৬টি দেশ ভোট দানে বিরত থাকেন ।
থার্ড কমিটি জাতিসংঘের অন্যতম এজেন্ডা নির্ধারনী কমিটি যারা নারী, মানবাধিকার, শিশু ইত্যাদি বিষয় নিয়ে কাজ করে থাকে। মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় গত দেড় দশক ধরে এ কমিটি মিয়ানমারের বিরুদ্ধে বহু প্রস্তাব পাস করেছে।
বৃহস্পতিবার পাস হওয়া এ প্রস্তাবে রোহিঙ্গাদের পূর্ণ নাগরিকত্ব দেওয়ার আহবান জানানো হয়েছে মিয়ানমারের প্রতি। এছাড়া রাখাইন রাজ্যে জাতিসংঘ প্যানেল যাতে নির্বিঘ্নে কাজ করতে পারে, সেটির নিশ্চয়তাও চাওয়া হয়েছে মিয়ানমারের কাছে।
গত ২৫ আগষ্ট রাখাইনের কিছু পুলিশ তল্লাসী চৌকিতে সন্ত্রাসী হামলার প্রেক্ষাপটে ব্যাপক সেনা অভিযান শুরু করে সেনাবাহিনী। সেনা অভিযান শুরুর সাথে সাথেই বাংলাদেশ অভিমেুখে লাখো রোহিঙ্গার ঢল শুরু হয়। এখন পর্যন্ত ৬ লাখের বেশি রোহিঙ্গা সেনা অভিযান থেকে পারিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। এখনো প্রতিদিনই রোহিঙ্গারা বাংলাদেশ সীমান্ত পাড়ি দিচ্ছে।
সর্বশেষ রোহিঙ্গা সঙ্কট শুরুর পর থেকেই রোহিঙ্গা পুনর্বাসনে মিয়ানমারকে ভূমিকা নিতে বাধ্য করাতে উদ্যোগী হয় বাংলাদেশ। দেশে বিদেশে নানা রকমের কূটনৈতিক তৎপরতা শুরু করে দেশটি। বিভিন্ন প্রভাবশালী দেশ থেকেও মিযানমারের প্রতি রোহিঙ্গা পুনর্বাসন শুরু করতে চাপ আসে। সর্বশেষ কয়েকদিন আগে মিয়ানমার সফরে আসেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন। তিনি রোহিঙ্গা সমস্যাটিকে চিহ্নিত করে সমাধানের উদ্যোগ নেওয়ার অহবান জানিয়েছেন।
সর্বশেষ জাতিসংঘ অধিবেশনে নিজের বক্তৃতায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্ব নেতাদের সামনে রোহিঙ্গা সঙ্কটের ভয়াবহতা তুলে ধরে এটির সমাধানে ৫টি প্রস্তাব দেন।
ব্যাপক বৈশ্বিক চাপের মধ্যে পড়ে মিয়ানমার সেনাবাহিনী রাখাইনে সেনা নির্যাতনের বিষয়ে একটি অভ্যন্তরীণ তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এ রিপোর্টে সেনাবাহিনী দাবি করে, রোহিঙ্গাদের উপর সেনা নির্যাতনের কোনো প্রমাণ পাননি তারা। প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর অরেকদফা সমালোচনায় বিদ্ধ হয় মিয়ানমার। মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, রাখাইনে রোহিঙ্গাদের উপর ব্যাপক দমন নির্যাতনের ঘটনাগুলোকে মিয়ানমার সেনাবাহিনী আড়াল করতে চাইছে, এ প্রতিবেদন তার সর্বশেষ প্রমাণ। মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, বহু ঘটনা ও স্যাটেলাইট চিত্র বিশ্লেষণ করে আমরা এ কথাই শুধু বলতে পারি যে, রাখাইনে জাতিগত নিধন চালাচ্ছে সেনাবাহিনী।
এদিকে মিয়ানমারের রাখাইনে সেনাসদস্যদের গণহত্যা চালানোর পাহাড়সম প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়াভিত্তিক দুটি পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা। সেনাসদস্যরা মুসলিম সংখ্যালঘুদের গলা কাটা ছাড়াও পুড়িয়ে দেওয়ার মতো অপরাধ করেছে বলে সংস্থা দু’টির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের হলোকাস্ট মেমোরিয়াল মিউজিয়াম এবং দক্ষিণপূর্ব এশিয়াভিত্তিক ফরটিফাই গ্রুপ বুধবার যৌথভাবে ওই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। গত বছরের ৯ অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর এবং এ বছরের ২৫ আগস্ট থেকে ‘ব্যাপক ও পদ্ধতিগত হামলার’ ঘটনা নথিভুক্ত করা হয়েছে।
RED TIMES LIMITED
116-117, Concord Emporium,
Kataban, Dhaka-1205.
Mobile: 017111-66826
Email: redtimesnews@gmail.com