এসবিএন ডেস্ক: ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী, সহায়তাকারী এমনকি তাদের সন্তানেরাও বাংলাদেশের নাগরিকত্ব হারাতে যাচ্ছেন।
আজ সোমবার এমন বিধান রেখে বাংলাদেশ নাগরিকত্ব আইন-২০১৬ এর খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই আইনের খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন পায়।
১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ থেকে আলোচ্য আইনটি কার্যকর হওয়ার আগ পর্যন্ত সময়ে এখানে জন্মগ্রহণকারীদের জন্ম সূত্রে বাংলাদেশের নাগরিক বলে বিবেচনা করা হয়েছে।
এছাড়া এই আইন অনুযায়ী, কোনও ব্যক্তি বিদেশী রাষ্ট্রের প্রতি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে আনুগত্য প্রকাশ করলে, বিদেশি রাষ্ট্রের কোনও বাহিনীতে যোগদান করে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করলে বা অন্য কোনওভাবে উক্ত বাহিনীকে সহায়তা করলে তিনি বাংলাদেশের নাগরিক থাকতে বা হতে পারবেন না।
এছাড়া কেউ বিদেশি কোনও সামরিক বা আধাসামরিক বাহিনী বা অন্য কোনও বিশেষ বাহিনীতে যোগ দিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করলে বা বাংলাদেশের অস্তিত্ব অস্বীকার ও দেশ বিরোধী কোনও কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হলে তাদের সন্তানেরাও বাংলাদেশের নাগরিক হওয়ার অযোগ্য হবেন।
সংসদ সদস্য, সাংবিধানিক পদধারী এবং প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিযুক্তরাও দ্বৈত নাগরিক হতে পারবেন না। মিথ্যা তথ্য দিয়ে নাগরিক হলে তা বাতিলসহ মিথ্যা তথ্য প্রদানকারীকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা বা উভয়দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে নাগরিকত্ব প্রদান, নাগরিকত্ব বাতিলসহ প্রাসঙ্গিক বিষয় সুস্পষ্ট করার জন্য ‘দ্য বাংলাদেশ সিটিজেনশিপ (টেম্পোরারি প্রভিশনস) অর্ডার ১৯৭২ বলবৎ রয়েছে।
‘দ্য সিটিজেনশিপ অ্যাক্ট ১৯৫১’ এর অধীনে ওই আদেশ জারি করা হয়। বহিরাগমন, নাগরিকত্ব অর্জন, সংরক্ষণ, পরিত্যাগ, অবসান ইত্যাদি বিষয়ের সমাধান দেওয়া এই দুই আইনে পরিষ্কার নয়। তাই দুই আইন একীভূত করে ‘বাংলাদেশ নাগরিকত্ব আইন ২০১৬’ চূড়ান্ত করেছে সরকার।
বিদেশি বিবাহ ক্ষেত্রে আইনে বলা আছে, কোনও বাংলাদেশি নাগরিক বিদেশি কোনো ব্যক্তিকে বিয়ে করলে তাকে শর্তসাপেক্ষে নাগরিকত্ব দেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে।
বাংলাদেশি কোনও নাগরিক বিদেশি নাগরিককে বিবাহ করলে, যদি উক্ত বিবাহ সম্পর্কে বৈধতার কোনও প্রশ্ন না থাকে, সরকার ওই বিদেশি নাগরিককে তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব প্রদান করতে পারবে।
তবে এটা তখনই সম্ভব হবে যদি তিনি বাংলাদেশে কমপক্ষে ৫ বছর বসবাস করে থাকেন এবং সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ কোনও দেশের নাগরিক না হন; তার পিতা-মাতা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত না থাকেন।
বাংলাদেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই এমন কোনও দেশের নাগরিক না হন বা বিদেশি শত্রুবাহিনীর সদস্য না হয়ে থাকেন; বাংলাদেশে বেআইনি অভিবাসী না হয়ে থাকেন;
বাংলাদেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই এমন কোনও দেশের নাগরিক বা বাংলাদেশে বিবাহ নিবন্ধনে নিষিদ্ধ করা হয়েছে এমন কোনও ব্যক্তি না হয়ে থাকেন, তাহলে এসব বিদেশি নাগরিককে নাগরিকত্ব দেওয়া যাবে।
সংবাদটি শেয়ার করুন