৭ই ডিসেম্বর ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ২২শে অগ্রহায়ণ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৫:৩৯ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৩, ২০১৫
এসবিএন ডেস্ক:
ভুয়া পরিচয়পত্র ব্যবহার করে মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্ট তৈরির বিষয়টি উঠে আসার পর বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, তারা ব্যাংকগুলোকে জাতীয় পরিচয়পত্রের ডাটাবেইজে প্রবেশাধিকার দেয়ার চেষ্টা করছে, যাতে তারা নতুন মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্টের পাশাপাশি পুরনো একাউন্টগুলোও পুনরায় যাচাই করতে পারে। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট বা বিআইবিএমের একটি গবেষণায় বলা হয়, যেসব মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্ট দিয়ে যেসব প্রতারণা হয়, তার প্রায় পুরোটাই হয় ভুয়া পরিচয়পত্র ব্যবহার করে। বিআইবিএমের গবেষণা অনুযায়ী, বাংলাদেশে এখন মোবাইল ব্যাংকিংয়ে গ্রাহকের সংখ্যা প্রায় তিন কোটি। টাকা লেনদেনের সহজ মাধ্যম হিসেবে এই মোবাইল ব্যাংকিং যেমন জনপ্রিয়তা পেয়েছে, একইসাথে এই মাধ্যমটি ব্যবহার করে প্রতারণা, চাঁদাবাজী এবং মুক্তিপণ আদায়েরও ঘটনা ঘটছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ময়মনসিংহের একজন বাসিন্দা বলছিলেন, গত বছর তিনি এভাবে একটি মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্টে টাকা পাঠিয়ে প্রতারিত হয়েছিলেন। আমাকে ফোন করে বলে যে আপনি একটা পুরস্কার জিতেছেন, পুরস্কারের টাকাটা নেয়ার জন্য কিছু কর দিতে হবে। এরপর আমি বিকাশের মাধ্যমে ২৯০০০ টাকা পাঠাই। এই ভুক্তভোগী অবশ্য পরে ভয় পেয়ে আর পুলিশের কাছে এ নিয়ে অভিযোগ করেননি। বিআইবিএমের সহযোগী অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান আলম বলছেন, ২০১৪ সালে এ ধরণের ঘটনায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে প্রায় ৫০০ টি অভিযোগ এসেছে। একজন পুলিশ কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব অভিযোগের ৯৯% ক্ষেত্রেই দেখা গেছে প্রতারণায় ব্যবহৃত মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্ট তৈরি করা হয়েছিল ভুয়া পরিচয়পত্র ব্যবহার করে।
বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে তারা মানুষকে ফোন করে, তারপর তারা বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে তাদের ফলস একাউন্টে টাকাটা নেয়ার চেষ্টা করে। একদল সিএনজি বা গাড়ি চুরি করে টাকা পাঠাতে বলে। আবার কিছু টিভিতেও বিজ্ঞাপন দেয়, যে তারা বিভিন্ন তাবিজ দিয়ে মুশকিল আসান করবে। তারপর মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্ট দিয়ে টাকা নেয়। বলেন আলম। সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, সামরিক কর্মকর্তা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পর্যন্ত এ ধরণের প্রতারণার শিকার হয়েছেন বলেও গবেষণায় দেখা গেছে। কিন্তু কিভাবে ভুয়া পরিচয়পত্র ব্যবহার করে মোবাইল ব্যাংক একাউন্ট খোলা সম্ভব হয়? ঢাকায় একজন মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্ট দেলোয়ার হোসেন জানান, তারা জাতীয় পরিচয়পত্র বা পাসপোর্ট দেখে তার ফটোকপি রাখেন এবং তারপর একাউন্ট তৈরি করে দেন। একাউন্ট যাচাই করার কোন উপায় তাদের কাছে নেই।
বাংলাদেশের অন্যতম মোবাইল ব্যাংকিং সংস্থা বিকাশের মুখপাত্র জাহেদুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী তারা একাউন্ট খোলার সময় এজেন্টদের মাধ্যমে ফটো আইডি এবং ছবির সাথে ফরমের চেহারা এবং ঠিকানা মিলিয়ে দেখেন। তবে জাতীয় পরিচয়পত্রের ডাটাবেসে প্রবেশাধিকার থাকলে তারা সেটি পুনরায় যাচাই করতে পারতেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন নির্বাহী পরিচালক শুভঙ্কর সাহা বলেন, ব্যাংকগুলো অনলাইন ডাটাবেস থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র যাঁচাই করতে না পারায় এবং অনেক ক্ষেত্রে মোবাইলের সিম ভুয়া রেজিস্ট্রেশনের কারণে মিথ্যা পরিচয়ে মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্ট খোলা সম্ভব হয়।
বিটিআরসি এখন সিম যে পুনরায় রেজিস্ট্রেশন করছে, তারপর ভুয়া রেজিস্ট্রেশনের সিমগুলো বন্ধ হয়ে যাবে। আর আমরা চাইছি প্রত্যেকটা ব্যাংক যদি জাতীয় পরিয়পত্রের ডাটাতে প্রবেশাধিকার পায় তাহলে তারা তাদের কাছে রক্ষিত সকল একাউন্টই যাচাই করতে পারবেন। সাহা বলেন, জাতীয় পরিচয়পত্রের ডেটাবেসে প্রবেশাধিকার পেলে বর্তমান মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্টগুলোও তারা ব্যাংকগুলোকে পুনরায় যাচাইয়ের নির্দেশ দেয়ার কথা ভাবছেন।
RED TIMES LIMITED
116-117, Concord Emporium,
Kataban, Dhaka-1205.
Mobile: 017111-66826
Email: redtimesnews@gmail.com