শফিউজ্জামান আতা,রংপুর প্রতিনিধি:
মানুষের অধিকার আদায় ও বিশ্বশান্তির জন্য সারাজীবন সংগ্রাম করেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বিশ্বের সর্বত্র শান্তি বজায় রাখতে ও সুসংহত করতে বিশ্বদরবারে তিনি বক্তব্যের মধ্যদিয়ে তা বাস্তবায়নের আওয়াজ তুলেছিলেন। যখনই মানবধিকার লঙ্ঘিত হবে শান্তিবিঘ্নত হবে, তখনই মনে হবে বঙ্গবন্ধুর কথা, জুলিও কুরি শান্তি পদকের কথা। ৫০ বছর পর আজও বঙ্গবন্ধুর শান্তির আহ্বান প্রাসঙ্গিক।
রোববার (২৮ মে) সকাল দশটায় রংপুর শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন অতিথিরা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘জুলিও কুরি’ শান্তি পদক প্রাপ্তির ৫০ বছরপূর্তি উদযাপন উপলক্ষে রংপুর জেলা প্রশাসন এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এবছর ‘বঙ্গবন্ধু শুধু বাংলার নন, তিনি বিশ্বের এবং তিনি বিশ্ববন্ধু’ স্লোগানে ‘জুলিও কুরি’ শান্তি পদক প্রাপ্তির ৫০ বছরপূর্তি উদযাপন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন রংপুর বিভাগীয় কমিশনার হাবিবুর রহমান। জেলা প্রশাসক ড. চিত্রলেখা নাজনীনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন পুলিশের রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি মোহাঃ আবদুল আলীম মাহমুদ, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার নুরেআলম মিনা, জেলা পুলিশ সুপার ফেরদৌস আলী চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক এ.কে.এম. ছায়াদত হোসেন বকুল, মহানগর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ডা. দেলোয়ার হোসেন প্রমুখ।
সভায় বক্তারা বলেন, জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান ‘বঙ্গবন্ধু’ হয়েছিলেন সেই ১৯৬৯ সালে। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ তাঁকে ‘অবিসংবাদিত নেতা’য় পরিণত করে। আর বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিতে পান শান্তি পদক ‘জুলিও কুরি’।
স্বাধীনতার পরপরই বিশ্বশান্তি পরিষদ ১৯৭২ সালের ১০ অক্টোবর পদকপ্রাপ্ত হিসেবে বঙ্গবন্ধুর নাম ঘোষণা করে। বিশ্বশান্তি পরিষদের প্রেসিডেনশিয়াল কমিটির ঐ সভায় ১৪০টি দেশের প্রায় ২০০ সদস্য উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা সবাই একমত হয়েছিলেন, সারা জীবনের দর্শন আর বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়কত্বের প্রেক্ষাপটে বঙ্গবন্ধুকে জুলিও কুরি পদক প্রদান করার। পরের বছর ১৯৭৩ সালের ২৩ মে এশীয় শান্তি সম্মেলনের এক আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানে সেই পদক বঙ্গবন্ধুকে প্রদান করা হয়েছিল। স্বাধীন বাংলাদেশে কোনো রাষ্ট্রনেতার সেটিই ছিল প্রথম আন্তর্জাতিক পদক লাভ। সাম্রাজ্যবাদ ও ফ্যাসিবাদ বিরোধিতা এবং মানবতার ও বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় যাঁরা অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন, তাঁরা ১৯৫০ সাল থেকে এই পদকে ভূষিত হয়ে আসছিলেন।
আলোচনা শেষে বিষয়টি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। পরে স্থানীয় শিল্পীরা সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় অংশ নেন। পুরো আয়োজনে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ছাড়াও বিভিন্ন পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
এরআগে সকাল নয়টায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘জুলিও কুরি’ শান্তি পদক প্রাপ্তির ৫০ বছরপূর্তি উদযাপন উপলক্ষে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামন থেকে শুরু হয়। র্যালিটি নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে রংপুর টাউন হলে গিয়ে শেষ হয়। এসময় রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সুসজ্জিত একটি বাদক দল র্যালির সম্মুখভাগে থেকে র্যালিটির শোভাবর্ধন করে।
সংবাদটি শেয়ার করুন