
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
রাজনীতির মাঠে হঠাৎ করেই থমথমে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এক ধরনের অজানা আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। আর নানা রকম গুজব পল্লবিত হচ্ছে।
আওয়ামী লীগ বিএনপি যখন রাজপথে বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে পরস্পরের মুখোমুখি, সেই সময় রাজনীতির বাইরের কিছু ইস্যু এক ধরনের শঙ্কা এবং থমথমে ভাব তৈরি করেছে।
জনজীবনে এর প্রভাব পড়ছে। এক ধরনের অস্বস্তি এবং উৎকণ্ঠা তৈরি হয়েছে। একাধিক কারণে রাজনীতিতে এই অজানা আশঙ্কা এবং থমথমে ভাব তৈরি হয়েছে। তার মধ্যে প্রধান ইস্যু হলো বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতা।
বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা ভালো নয়। তার যেকোনো সময় যেকোনো কিছু ঘটতে পারে এমন গুঞ্জন এখন সর্বত্র। যেকোনো রাজনৈতিক দলের অফিসে বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অসুস্থতার বিষয়টি আলোচনায় মুখ্য বিষয়ে পরিণত হয়েছে।
খালেদা জিয়ার যদি খারাপ কিছু হয় তাহলে কি হবে তা নিয়ে নানারকম কথাবার্তা এবং আলোচনা শোনা যাচ্ছে। বিএনপি এবং আওয়ামী লীগ উভয় রাজনৈতিক দলের কার্যালয়েই এই ধরনের আলোচনা এখন বেশ গুরুত্ব পাচ্ছে। এই নিয়ে রাজনীতিতে একটা থমথমে ভাব বিরাজ করছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুপস্থিতি রাজনীতিতে একটা শঙ্কার পরিবেশ তৈরি করেছে। বিশেষ করে আওয়ামী লীগের মধ্যে এ ধরনের আলোচনা হচ্ছে যদি বেগম খালেদা জিয়ার কিছু হয় এবং প্রধানমন্ত্রী বিদেশে থাকা অবস্থায় এটি ঘটে, তাহলে সেক্ষেত্রে কি হবে? পরিস্থিতি কি আওয়ামী লীগের বর্তমানে থাকা নেতারা সামাল দিতে পারবেন?
এরকম প্রশ্নের উত্তরে আওয়ামী লীগের অনেকের মধ্যেই চিন্তার ভাঁজ লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
রাজনীতিতে যখন এইরকম একটি গুমোট পরিস্থিতি বিরাজ করছে ঠিক সেই সময় আকাশে-বাতাসে নানা রকম গুজব পল্লবীত হচ্ছে। বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং বিভিন্ন ব্যক্তির মাধ্যমে যে যেভাবে পারছে গুজব ছড়াচ্ছে।
এর একটি বড় কারণ হলো বিএনপি এই গুজব গুলোকে পল্লবিত হবার সুযোগ দিচ্ছে। বিএনপির পক্ষ থেকে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো ব্রিফিং দেওয়া হচ্ছে না।
কিছুদিন আগেও বেগম জিয়ার চিকিৎসক ড. জাহিদ খালেদা জিয়ার শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে গণমাধ্যমকে ব্রিফিং দিতেন। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে এ ধরনের আনুষ্ঠানিক ব্রিফিং দেয়া বন্ধ হয়ে গেছে।
বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে বিএনপির নেতারাই একেকজন একেকরকম কথাবার্তা বলছেন।
এভারকেয়ার হাসপাতালে বেগম জিয়া চিকিৎসাধীন রয়েছেন। কিন্তু এভারকেয়ার হাসপাতালের কোন দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসকও বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে কোন রকম কথা বলছেন না।
সরাসরি তথ্যপ্রাপ্তির উৎস যখন বন্ধ হয় তখন গুজব পল্লবিত হয়। বেগম জিয়ার ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটছে।
এই সমস্ত গুজবগুলো সমাজের বিভিন্ন স্তরে কল্লোলিত হচ্ছে। যার ফলে মানুষের মধ্যে নানা রকম বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। যে যার মত করে পারছেন, সে তার মতো করে কথাবার্তা বলছেন। এর ফলে রাজনীতিতে যারা নাশকতা করতে চায়, যারা ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চায়, তারা সুযোগ পাচ্ছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা আসলে কি এবং তার কি ধরনের চিকিৎসা করা উচিত বা তার চিকিৎসার সর্বশেষ পরিস্থিতি কি, এ নিয়ে এভারকেয়ার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কিংবা বিএনপির দায়িত্বরত চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে নিয়মিত ব্রিফিং দেওয়া উচিত।
পাশাপাশি এই বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন রকম যে গুঞ্জন ও গুজব ছড়ানো হচ্ছে তাদেরকে শনাক্ত করা দরকার বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।