আমিনুল ইসলাম
‘মাঝে মাঝে কিছুই থাকে না কান্নার চেয়ে
বেশি প্রিয়, আমাকে কাঁদতে দিও
মেলোডি কোটেড বেদনার ফোঁটা-
টুপ টুপ ঝরে পড়ে
কপোল বেয়ে অভিযোগহীন সন্ধ্যার;
কান পাতে কার্নিশ,
ভেন্টিলেটর,
টিকিটিকি
মানুষের কণ্ঠ কী করে ধারণ করে-
অশ্রুর এমন সুরমাখা অনুবাদ! এবং এতটা!
তবে কী সে কাঁদলেও তাঁর
অশ্রুর সঙ্গে মিশে থাকে সুরের তালমিশ্রি দানা?
আজকের নাগরিক অবসর–সে তো কাশের
রোগীর শ্বাস! কখনো সখনো তারি মাঝে
বেজে ওঠে-
‘আমার মনপাখিটা যায় রে উড়ে যায়
কীসের কাজ! মতিঝিল ব্যাংক কলোনী
উড়ে চলে সুরের সোলেমানী তখ্তে….
ঠায় পড়ে থাকে ব্যালান্স শীটের ভাঁজ,
ভল্টের চাবি, অস্বাক্ষরিত স্টেটমেন্ট;
কোথায় বঙ্গভবন! কীসের সচিবালয়?
যেখানেই চোখ যায়—সবখানেই
কৈশোরের কাশবন,
হাওয়ায় মাতোয়ারা ধানক্ষেত
আম কুড়োনো উঠোনে-
কোকিল শ্যামার যুগল বন্দিশের আসর!
ও ফেসবুক-মানুষ, নাচবে একবার ভুলে
যাওয়া নাচ? তো তাকিয়ে দেখো-
অঙ্গে ঢেউ তুলে গাইছেন দমা দম গার্ল:
‘দমা দম মাস্ত কালান্দার’
আর মেঘেরা নাচছে ধেই ধেই
আনন্দে আবেশে এবং উত্তেজনায়
তালে তালে নাচছে বনের বৃক্ষ
কণ্ঠ মেলাচ্ছে আড়াল
নৃত্য ও গীতে মুখরিত সবুজের আঙিনা !
পণ্যায়িত ছায়া; পণ্যায়িত রোদ; কোথায় প্রশান্তি?
ডাক দিতেই গেয়ে ওঠে বৈশ্বিক বাগানের কোকিল:
‘গুলমে রঙ ভারে বাদে নওবাহার চালে.
সচকিত হয়ে ওঠে আরবসাগর থেকে
উঠে আসা মৌসুমী হাওয়ার কান ;
বড়ে গুলাম আলীর সমাধিতে বিস্ময় জাগিয়ে
গেয়ে যায় পাখি-
‘কাফাস উদাস হে ইয়ারো,
সাবা সে কুচ তো কাহো…. ‘
ধীরে ধীরে দুনিয়া হয়ে ওঠে-
মোগলে আজমের শাহীবাগ;
কানখাড়া ফেরেশতাদের আসমান-
ঝুঁকে আসে ধুলিমাখা মানুষের পৃথিবীর দিকে
সংবাদটি শেয়ার করুন