২রা মার্চ ২০২১ ইং | ১৭ই ফাল্গুন ১৪২৭ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৫:৫১ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৪, ২০১৯
রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরীতে স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটির ছাত্রী রুবাইয়াত শারমিন রুম্পার ময়নাতদন্তের তিনটি প্রতিবেদনের মধ্যে একটি হাতে পাওয়া গেছে ।তাকে হত্যা করা হয়েছে, না তিনি আত্মহত্যা করেছেন- তা পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন পাওয়ার আগে বলা যাচ্ছে না । ঢাকা মেডিকেলের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান সোহেল মাহমুদ বলেছেন, সেখানে ধর্ষণের আলামত মেলেনি।
পূর্ণাঙ্গ ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন দিতে আরও কিছু সময় লাগবে জানিয়ে তিনি বলেন,
ময়নাতদন্তের সময় যেসব নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে সেগুলো সংশ্লিষ্ট বিভাগে পাঠানো হয়েছিল পরীক্ষার জন্য। তার মধ্যে মাইক্রোবায়োলজিক্যাল রিপোর্ট এসেছে, সেখানে ধর্ষণের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি।
প্রাথমিক এই প্রতিবেদন রোববার তদন্ত কর্মকর্তার কাছে হস্তান্তর করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, আরও দুটি বাকি আছে। তদন্ত সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে, পারিপার্শ্বিক অবস্থা বিবেচনা করে পূর্ণাঙ্গ ময়নাতদন্ত রিপোর্ট দাখিল করা হবে।
রুম্পাকে হত্যা করা হয়েছে, না তিনি আত্মহত্যা করেছেন- তা পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন পাওয়ার আগে বলা সম্ভব নয় বলে জানান এই চিকিৎসক।
পুলিশ পরিদর্শক রোকনউদ্দিনের মেয়ে রুম্পা স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষে পড়ছিলেন। গত ৪ ডিসেম্বর রাত পৌনে ১১টার দিকে সিদ্ধেশ্বরী সার্কুলার রোডে আয়েশা শপিং কমপ্লেক্সের পেছনের গলি থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
আশপাশের কোনো ভবন থেকে পড়ে ওই তরুণীর মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করলেও সেই রাতে তাকে শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ। পরদিন পরিবারের সদস্যরা মর্গে গিয়ে রুম্পাকে শনাক্ত করেন।
ঘটনাটি রহস্যজনক হওয়ায় রমনা থানার এসআই আবুল খায়ের সেই রাতেই অজ্ঞাতপরিচয় আসামিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর ১১ ডিসম্বের রুম্পার বন্ধু আব্দুর রহমান সৈকতকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নেয় পুলিশ।
আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজের বিবিএর ছাত্র সৈকতের সঙ্গে রুম্পার প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ছাত্রীর সহপাঠীদের ভাষ্য। সৈকতও আগে স্ট্যামফোর্ডে পড়তেন।
রুম্পার লাশ শনাক্ত হওয়ার পর স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা একে হত্যাকাণ্ড দাবি করে তার বিচারের দাবিতে সড়কে নামে। তাদের মুখে আসে সৈকতের নাম, প্ল্যাকার্ডে ধর্ষণের অভিযোগও লেখা হয়।
১২ ডিসেম্বর সৈকতকে আদালতে হাজির করে রিমান্ডের আবেদনে তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক শাহ মো. আকতারুজ্জামান ইলিয়াস বলেন, ৪ ডিসেম্বর রাতে রুম্পার লাশ পাওয়ার আগে বিকালে স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটির সিদ্ধেশ্বরী ক্যাম্পাসের বাইরের রাস্তায় তাকে সৈকতের সঙ্গে দেখা গিয়েছিল।
রুম্পার এক বান্ধবীর সঙ্গে সৈকতের যে কথোপকথনের অডিও ক্লিপ ছড়িয়েছে, তাতেও স্পষ্ট ঘটনার দিনও রুম্পার সঙ্গে তার দেখা হয়েছিল।
অডিওতে সৈকতকে বলতে শোনা যায়, ৪ তারিখে আমার একটা ফ্রেন্ডের বার্থডে ছিল। আমাকে ইনভাইট করা হয়েছিল আমাদের ফ্রেন্ডের মাধ্যমে। দেন আমি ওইখানে গেছিলাম আর কি। আমি তো রুম্পাকে বুঝায়ে বলছি যে আমাদের মধ্যে রিলেশন সম্ভব না।
এ ঘটনাকে হত্যাকাণ্ড ধরে পুলিশ তদন্ত চালালেও বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর না মেলায় এখনও পর্যন্ত নিশ্চিত হতে পারেননি তারা।
পরিবারের সদস্যরা জানান, দুটো টিউশনি করতেন রুম্পা। সেদিনও সন্ধ্যার আগে বাসা থেকে টিউশনিতে বেরিয়েছিলেন। পরে সাড়ে ৬টার দিকে বাসার নিচে এসে ফোন করে পুরানো একজোড়া স্যান্ডেল পাঠিয়ে দিতে বলেন। স্যান্ডেল বদলানোর সময় কানের দুল, আংটি, মোবাইল ফোন দিয়ে আবার বেরিয়ে যান তিনি।
তদন্তের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পুলিশের এক কর্মকর্তা গত রোববার বলেছিলেন, যে তিনটি ভবনের মাঝে রুম্পার মৃতদেহ পাওয়া গেছে, সেখানকার একটি ভবনের প্রবেশমুখে ৬টা ২৭ মিনিটে রুম্পার শারীরিক গঠনের মতো একজনকে ঢুকতে দেখা গেছে সিসিটিভি ভিডিওতে। কিছুটা অস্পষ্ট ওই ছবি, ফলে সেটা রুম্পা কি না, তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
Corporate Office:
6/A Eskatan Garden
Dhaka, Bangladesh.
Mobile: 017111-66826
Email: mansoumit@yahoo.com
Helpline - +88 01719305766