মোবাইলের মাধ্যমে ঘটনার ৬ষ্ঠ দিনেও গণধর্ষনের শিকার কলেজ ছাত্রীর ধর্ষকদের গ্রেফতার না হওয়ায় ক্ষোভে ফুঁসছে লালমনিরহাটের শিক্ষাঙ্গন গুলো। ক্ষোভ ও ঘৃণা জানিয়ে জেলার বিভিন্ন শিক্ষাঙ্গনের শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে।বিক্ষোভে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি অংশ নিয়েছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
বৃহস্পতিবার (২২ জুন) দুপুরে জেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ শেষে পুলিশ সুপার ও জেলা প্রশাসকের নিকট ধর্ষকদের দ্রুত গ্রেফতারের মৌখিক দাবি জানান।
জানা যায়, দুই বছর আগে বিমানবাহিনীর সদস্য পরিচয়ে সোহাগ নামে এক যুবক লালমনিরহাটের একটি কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্রীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। তাদের এই প্রেমের সম্পর্ক চলতে থাকে দুই বছর ধরে। একপর্যায়ে গত শনিবার (১৭ জুন) বিকেলে এয়ারপোর্টে দেখা করতে মোবাইলে কলেজছাত্রীকে ডেকে নেন কথিত প্রেমিক সোহাগ। সেখানে গল্প করতে করতে অন্ধকার ঘনিয়ে আসে। এক পর্যায়ে অন্ধকার নেমে আসলে পাশের ভুট্টা ক্ষেতে নিয়ে ওই কলেজ ছাত্রীকে জোর পুর্বক ধর্ষণ করেন সোহাগ। এরই মধ্যে পুর্বে থেকে লুকিয়ে থাকা সোহাগের দুই বন্ধু সেখানে উপস্থিত হলে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী সোহাগ সেখান থেকে চলে যান। পরে তার দুই বন্ধুর একজন ওই কলেজছাত্রীকে মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ করে রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে পালিয়ে যায়। এতে ওই কলেজ ছাত্রী গুরুতর অসুস্থ হয়ে সেখানে পড়ে থাকে।
রাত হলেও ওই কলেজছাত্রী বাড়ি না ফেরায় স্বজনরা তার মোবাইলে কল করলে তাকে না পাওয়ায় সাংবাদিক ও পুলিশকে বিষয়টি অবগত করেন। পরে তার পরিবারের সদস্যরা সাংবাদিক ও পুলিশ নিয়ে রাত ৮টার দিকে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় ভুট্টা ক্ষেত থেকে কলেজছাত্রীকে উদ্ধার করে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনায় ঠিকানাহীন কথিত প্রেমিক সোহাগের মোবাইল নম্বর দিয়ে লালমনিরহাট সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন নির্যাতিত কলেজছাত্রীর বড় বোন। এ মামলায় সদর থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে সোয়াইব সরকার সজীবকে নামে এক যুবককে ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অপরাধে গ্রেফতার করে।
লালমনিরহাট পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম ঘটনাটিকে ‘অত্যন্ত দুঃখজনক উল্লেখ করে বলেন, বিষয়টি তিনি গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন। ইতিমধ্যে ধর্ষকদের একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনার মুল হোতাসহ বাকি আসামীকে দ্রুত খুঁজে বের করে গ্রেফতার করা হবে বলেও জানান তিনি।