আজ শিক্ষামন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষ, বাংলাদেশ সচিবালয়ে শিক্ষামন্ত্রী প্রেসবিওফিং করে যা বলেছেন তা নিম্নে দেয়া হলঃ
সুপ্রিয়সাংবাদিকবন্ধুরা,
আসসালামুআলাইকুম। উপস্থিত সকল সাংবাদিকবন্ধুদেরকে স্বাগত জানাচ্ছি। গত ২৪/১২/২০১৭ তারিখে শিক্ষাভবনের একটি অনুষ্ঠানের সংবাদ বেশিরভা গগণমাধ্যমে যথাযথভাবে তুলেধরাহলেও কতিপয় পত্রিকাও অনলাইন মিডিয়ায় আমার বক্তব্য খতিগ্রস্ত ভাবে প্রকাশিত হওয়ায় জনমনে বিভ্রান্তির সৃষ্টিহয়েছে। সেইবিভ্রান্তির উপরভিত্তি করেইক তিপয়বি শিষ্টজন ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের মতামত ও জনমনে বিভ্রান্তিছড়াচ্ছে। সে বিষয়টি স্পষ্টীকরণের জন্য আজকের এই প্রেসব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়েছে।
২০০৯ সালের জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম দিনে শিক্ষামন্ত্রণালয়ের সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে বৈঠকে বসেছিলাম। সেখানে আমি বলে ছিলাম- আমাদের সম্পদ কম। যতটুকু সম্পদ আছে তার সবটুকু সুষ্ঠু ভাবে কাজে লাগাতে হবে। দুর্নীতি, অপচয় এবং অপব্যয় বন্ধ করতে হবে।
এক টাকা দিয়ে দুই টাকার কাজ করতে হবে। সেই ধারাবাহিকতায় অব্যাহত ভাবে নানা মুখী কার্যক্রম গ্রহণকরেছি। ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয়ের অধীনস্ত বিভিন্ন দপ্তর, সংস্থা ও পরিদপ্তরে এই ধারনাপরিস্কার হয়েছে। অভূতপূর্ব অগ্রগতি ঘটেছে শিক্ষাখাতের বিভিন্ন অঙ্গে। ভর্তি, ক্লাস, পরীক্ষা, শিক্ষাক্রম, অবকাঠামো, তথ্য প্রযুক্তিগত উন্নয়ন, জবাব দিহিতা, শৃঙ্খলাসহ সর্বক্ষেত্রে আধুনিকায়ন ও পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। এসব পরিবর্তনের অংশীদার আপনারাও। প্রথম থেকেই আপনাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা আমি পেয়ে এসেছি ।
২০০৯ সালে বর্তমান সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের সময়ে শিক্ষামন্ত্রণালয়ের অধীনস্ত বিভিন্ন দপ্তর, অধিদপ্তর ও সংস্থাসমূহের মধ্যে ভাবমূর্তির দিক থেকে সবচেয়ে পিছিয়ে ছিলপ রিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর (ডিআইএ)। চরম দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা, মনিটরিং দুর্বলতা ছিল দৃশ্যমান। কর্মকর্তারা ঘুষ-দুর্নীতিতে ছিল আকণ্ঠ নিমজ্জিত।এসবই ছিল পূর্ববর্তী বিএনপি-জামাত সরকারের অপশাসনের ফসল । সেই সময় ডিআইএ কর্মকর্তারা স্কুল-কলেজ পরিদর্শনে গিয়ে অসহায় শিক্ষক-কর্মচারীদের কাছ থেকে ভয় দেখিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকার ঘুষের খাম গ্রহণ করার সময় বলতো এর ভাগ উপরেও দিতে হয়। তাতে শিক্ষক-কর্মচারীরা মনে করতে বাধ্য হতো- তাদের প্রদত্ত ঘুষ শুধু পরিদর্শনকারী অফিসাররাই খায়না, উর্ধ্বতন আমলারাও পায়, এমন কি মন্ত্রী হিসেবে আমিও পাই। স্বাভাবিক ভাবেই শিক্ষক-কর্মচারীরা মনে করতো- ‘অফিসাররা চোর, মন্ত্রীও চোর’।
সেই সময়ে তাদেরকে ঘুষ-দুর্নীতি থেকে বিরত রাখার পরিবেশ তো ছিলইনা। অনেক শিক্ষক এসে আমার কাছে কান্নাকাটি করে বলতো- আমরানিম্ন বেতনের চাকরি করি, এতো টাকা আমরা কোথা থেকে দেবো ? এক মাসের সম্পূর্ণ বেতনের টাকা ঘুষ দিলে পরিবার-পরিজন নিয়ে আমরা খাব কী ? ঘুষের মাত্রা আরেকটু সহনীয় হলেওবাঁচতাম বলে তারা মন্তব্য করতো।
২৪/১২/২০১৭ তারিখের অনুষ্ঠানের বক্তৃতায় অতীতের ঐ সব ঘটনার উদাহরণ তুলে ধরতে গিয়েই আমি উদ্ধৃতি দিয়েছিলাম- ‘ঘুষের সহনীয় মাত্রা’ এবং ‘অফিসাররা চোর’ ‘মন্ত্রী চোর’।
প্রিয় সাংবাদিকগণ,
বিএনপি-জামাতের সেই অরাজকতা থেকে ডিআইএ-কে আজকের স্বচ্ছ ও জবাবদিহি মূলক অবস্থায় নিয়ে আসা হয়েছে। ঘুষ-দুর্নীতির বিষয়ে জিরোটলারেন্স সমিতি জোরদার করা হয়েছে। ডিআইএ’র পুরানো দুর্নাম ঘুচানোর জন্য মন্ত্রণালয়ের মনিটরিংপদ্ধতি জোরদার করা হয়েছে, কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকে ইতিবাচক হতে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে, অভিযোগ পাওয়ামাত্র ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। পিয়ার ইন্সপেকশন পদ্ধতি চালুকরণ, ডিজিটাল মনিটরিং পদ্ধতি চালুকরণ, ৩৬,৭০০ স্কুল-কলেজকে ডিজিটাল অটোমেশনের কার্যক্রম চালুর উদ্যোগ গ্রহণ, ওয়েবসাইট, ফেসবুক, ইউটিউব চালুকরাসহ নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। সম্প্রতি ডিআইএ-এর এক জন কর্মকর্তাকে ঘুষসহ দুদকের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। ডিআইএ এখন পূর্বের তুলনায় অনেক খানি স্বচ্ছ, জবাবদিহি মূলক প্রতিষ্ঠান। আমরা একে দুর্নীতিমুক্ত করার সর্বাত্মক প্রচেষ্ঠা অব্যাহত রেখেছি।
বর্তমান সরকারের নানামুখী ইতিবাচক পদক্ষেপের ফলে শিক্ষাখাতের দুর্নীতি বিশ্বের তুলনায় অনেক কম। বিশ্বে শিক্ষাক্ষেত্রে গড় দুর্নীতিরহার ১৭% হলেও বাংলাদেশে তা ১২%। আমরা এ হারকে শুন্যের কোটায় নামিয়ে আনতে কাজ করে চলেছি। বেশকটি দপ্তর, পরিদপ্তরে ইতোমধ্যে স্বচ্ছতা এসেছে, দুর্নীতি মুক্ত হয়েছে। ঘুষ-দুর্নীতি প্রতিরোধে আমাদের জিরোটলারেন্সনীতি অব্যাহত আছে এবং থাকবে।
বিশিষ্টজনদের কেউ কেউ কতিপয় মিডিয়া ও ভিত্তিহীন সংবাদের ওপর ভিত্তি করে আমার বিরুদ্ধে নানা প্রশ্ন তুলছেন। তাদের উদ্দেশ্যে সবিনয়ে বলতে
চাই- সুদীর্ঘ কাল ধরে আপনারা আমার
সংবাদটি শেয়ার করুন