শেখ হাসিনা ও সর্বজনীন পেনশন স্কিম

প্রকাশিত: ৩:১৪ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ৫, ২০২৩

শেখ হাসিনা ও  সর্বজনীন  পেনশন স্কিম

-পরীক্ষিৎ চৌধূরী

ষাটোর্ধ্ব রিকশাচালক শাহাদাত হোসেন এবং বৃদ্ধাশ্রমে আশ্রয় নেওয়া ৭৫ বছর বয়সী নার্গিস জাহানের যে গল্প শুনেছিলাম বিবিসিতে কয়েক বছর আগে, সেই গল্প তো আমাদের আশেপাশে নিত্যই শুনতে পাই।
বিবিসির সেই প্রতিবেদনে শাহাদাত হোসেন জানিয়েছিলেন তাঁর দু:খের কথা- ’একদিন চালাই দুই-তিন দিন বসে থাকি, বয়স হয়ে গেছেতো, শরীর পাইরে ওঠে না’। বললেন, সন্তানরা বড় হলেও কেউ খোঁজ-খবর নেয়না, তাই পেটের দায়েই রিকশা চালান। তরুণ বয়সে যে কঠোর পরিশ্রম শুরু করেছিলেন অচেনা শহরে এসে, বয়স ষাট পেরিয়ে গেলেও সেই অবস্থার পরিবর্তন হয়নি। বৃদ্ধ বয়সে এভাবেই কঠিন কায়িক পরিশ্রম করে যাচ্ছেন এমন অসংখ্য প্রবীণের দেখা প্রতিনিয়ত মিলবে আমাদের চলার পথে।
অল্পবয়সে স্বামীকে হারানোর পর চাকরি করে সন্তানকে বড় করে তুলেছিলেন নার্গিস জাহান। বৃদ্ধ অবস্থায় কেউ তাঁর দেখাশোনা করতে চায়নি বলে চলে আসেন প্রবীণ হিতৈষী সংঘের প্রবীণ নিবাসে। ’বলেছি মরে গেলে লাশটা আঞ্জুমানে মুফিদুল ইসলামে দিয়ে দিতে। তারাই ব্যবস্থা করবে,’ এমনটাই ছিল বিবিসিকে দেওয়া নার্গিস জাহানের প্রতিক্রিয়া।
যদিও সরকার ২০১৩ সালে ষাটোর্ধ্বদের সিনিয়র সিটিজেন ঘোষণা করেছে, যার মাধ্যমে চিকিৎসাসহ নানা ক্ষেত্রে প্রবীণরা অগ্রাধিকারমূলক সুবিধা পাচ্ছেন। ২০১৩ সালে সন্তানের জন্য পিতা-মাতার দেখভাল বাধ্যতামূলক করে পিতা-মাতার ভরণ-পোষণ আইনও পাশ হয়েছে। কিন্তু সেটির প্রয়োগও খুব কম এবং এ নিয়ে সচেতনতারও অভাব রয়েছে।
বাংলাদেশে সরকারি এবং কিছু বেসরকারি চাকুরিতে পেনশনের আর্থিক নিরাপত্তা থাকলেও বাকিদের জন্য নেই ভবিষ্যতের কোন আর্থিক নিরাপত্তা। সব মিলিয়ে বার্ধক্যের জন্য যে দীর্ঘমেয়াদী প্রস্তুতি নেয়া প্রয়োজন, তার সুযোগ তাহলে কোথায়্? একটি নির্দিষ্ট বয়সের পর থেকে একটি সঞ্চয়ের ব্যবস্থা করা গেলে বৃদ্ধবয়সে কিছুটা হলেও আর্থিক নিরাপত্তার নিশ্চয়তা পাওয়া যায়।
এবার সেই আর্থিক নিরাপত্তার নিশ্চয়তার যুগান্তকারী দিন নিয়ে এল সরকার। গত রোববার দেশের সব নাগরিককে পেনশন সুবিধার আওতায় আনতে সর্বজনীন পেনশন স্কিমের বিধিমালা চূড়ান্ত করে গেজেট প্রকাশ করেছে সরকার এবং বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত দিয়ে এই স্কিম চালু হচ্ছে।
বাংলাদেশের জন্য, সত্যিকার অর্থেই একটা যুগান্তকারী ঘটনা ঘটতে চলেছে। এতদিন আমরা শুনতাম উন্নত দেশগুলোতে এই ধরনের উদ্যোগ চালু আছে, কিন্তু আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশ যে এটা করতে পারে, তা আমাদের চিন্তার মধ্যেই ছিলো না।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর সৃজনশীলতা দূরদর্শিতা দিয়ে ইতোমধ্যে দেশে নানান উদ্যোগ গ্রহণ করে বাস্তবায়ন করে চলেছেন। তাঁর ১০টি বিশেষ উদ্যোগ বাংলাদেশকে একটি সমাজ কল্যাণমূলক রাষ্ট্র গড়ে তুলতে ভূমিকা রাখছে। দেশের মানুষ যাতে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাষায় ‘সুন্দর, সুস্থ ও স্মার্টলি’ বাঁচতে পারে, সেলক্ষ্য নিয়ে ২০২১ সাল থেকে প্রেক্ষিত ’৪১ বাস্তবায়ন শুরু হয়ে গেছে, অর্থাৎ ’২১ থেকে ’৪১ পর্যন্ত সময়ে কীভাবে বাংলাদেশের উন্নয়ন হবে, তার একটা কাঠামো পরিকল্পনা বাংলাদেশ ইতোমধ্যেই প্রণয়ন করে ফেলেছে, যা জনগণের জন্য অন্যতম আশীর্বাদ বয়ে আনবে। ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী ২০৪১ সালের মধ্যে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’-এর অভিযাত্রা ঘোষণা করেছেন। এখানেই শেষ নয়, ২১০০ সালেও এ বঙ্গীয় বদ্বীপ যেন জলবায়ুর অভিঘাত থেকে রক্ষা পায়, দেশ উন্নত হয় তার জন্য ডেল্টা প্ল্যানও প্রণয়ণ করা হয়েছে।
বর্তমানে বাংলাদেশে ৬৫ বছরের উপরে দরিদ্র বয়স্কদের ৬০০ টাকা করে মাসিক ভাতা দেয় সরকার। ৫৮ লাখ প্রবীণ এই বয়স্ক ভাতা পাচ্ছেন। এ ছাড়া বর্তমানে ২৪ লাখ ৭৫ হাজার বিধবাকে মাসিক ৫০০ টাকা করে ভাতা দেওয়া হয়। এছাড়া প্রতিবন্ধী ভাতা, অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন কার্যক্রমের আওতায় ভাতাসহ বেশ কিছু সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনিতে বয়স্কদের জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদান করে আর্থিক ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে সরকার।
এবার দেশে চালু হচ্ছে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা। সরকারি চাকরিজীবী ছাড়া দেশের ১৮-৫০ বছর বয়সীরা সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থার আওতাভুক্ত হতে পারবে। প্রত্যেকে ৬০ বছর বয়স পর্যন্ত প্রতি মাসে নির্দিষ্ট হারে চাঁদা পরিশোধ করে ৬০ বছর পর থেকে আজীবন প্রতিমাসে পেনশন পাবেন। বর্তমানে সীমিত আকারে শুরু হলেও ২০৩০ সালের মধ্যে সারা দেশে এ সর্বজনীন পেনশন প্রকল্প চালু করা হবে।
সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা নিঃসন্দেহে একটি কল্যাণমূলক উদ্যোগ। কল্যাণমূলক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় একটি মাইলফলক। সম্পদের সুষম বণ্টন কল্যাণমূলক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থার মূলমন্ত্র। রাষ্ট্রীয়ভাবে ‘সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা’ হবে দেশের সর্বসাধারণের সামাজিক সুরক্ষার অনন্য উদ্যোগ।
বাংলাদেশের প্রথম এই সর্বজনীন পেনশন স্কিমের মৌলিক কিছু নিয়ম এখন দেখে নেওয়া যাক-
 ১৮ থেকে ৫০ বছর বয়সী সব কর্মক্ষম নাগরিক সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন। পেনশনধারীরা আজীবন পেনশন সুবিধা ভোগ করবেন।
 বিশেষ বিবেচনায় ৫০ বছরের বেশি বয়সী নাগরিকরাও স্কিমে অংশ নিতে পারবেন এবং সেই ক্ষেত্রে স্কিমে অংশ নেওয়ার তারিখ থেকে নিরবচ্ছিন্ন ১০ বছর চাঁদা দেওয়া শেষে তিনি যে বয়সে উপনীত হবেন তখন আজীবন পেনশন প্রাপ্য হবেন।
 প্রবাসী, যাদের জাতীয় পরিচয়পত্র নেই, তাঁরা তাঁদের জন্য প্রযোজ্য স্কিমে পাসপোর্টের ভিত্তিতে নিবন্ধন করতে পারবেন। তবে, সম্ভাব্য স্বল্পতম সময়ের মধ্যে জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে অনুলিপি কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিতে হবে।
 সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় থাকা ব্যক্তিরা তাদের জন্য প্রযোজ্য স্কিমে অংশ নিতে পারবেন। স্কিমে অংশ নেওয়ার পর তিনি আর সংশ্লিষ্ট সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির সুবিধা পাবেন না।
 কর্তৃপক্ষের নির্ধারিত ফরম অনলাইনে পূরণ করে আবেদন করতে হবে। আবেদনকারীর অনুকূলে একটি ইউনিক আইডি নম্বর দেওয়া হবে।
 আবেদনে উল্লিখিত আবেদনকারীর মোবাইল নম্বরে এবং অনিবাসীর ক্ষেত্রে ই-মেইলের মাধ্যমে ইউনিক আইডি নম্বর, চাঁদার হার এবং মাসিক চাঁদা দেওয়ার তারিখ অবহিত করা হবে।
যেকোনো স্কিমে নিবন্ধিত হলে কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ওই স্কিমের জন্য ধার্যকৃত হারে নিয়মিত চাঁদা দিতে হবে।
 নিবন্ধনের পর আবেদনকারী মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস, অনলাইন ব্যাংকিং, ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে বা তফসিলি ব্যাংকের কোনো শাখায় ওটিসি পদ্ধতিতে কর্তৃপক্ষের নির্ধারিত ব্যাংক হিসাবে মাসিক চাঁদা জমা করবেন।
 প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিকরা ক্রেডিট কার্ড বা ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে বৈধ চ্যানেলে বৈদেশিক মুদ্রায় মাসিক চাঁদা কর্তৃপক্ষের নির্ধারিত ব্যাংক হিসাবে জমা করবেন।
 নির্ধারিত তারিখের মধ্যে চাঁদা দিতে ব্যর্থ হলে পরবর্তী এক মাস পর্যন্ত জরিমানা ছাড়া চাঁদা দেওয়া যাবে। এক মাস অতিবাহিত হলে পরবর্তী প্রতিদিনের জন্য ১ শতাংশ হারে বিলম্ব ফি জমা দিয়ে হিসাবটি সচল রাখা যাবে।
 কেউ ধারাবাহিকভাবে ৩ কিস্তি চাঁদা জমাদানে ব্যর্থ হলে তার হিসাবটি স্থগিত হয়ে যাবে এবং বিধি অনুযায়ী সমুদয় বকেয়া কিস্তি পরিশোধ না করা পর্যন্ত হিসাবটি সচল করা হবে না।
 চাঁদাদাতা যেকোনো পরিমাণ চাঁদার টাকা অগ্রিম হিসাবে জমা দিতে পারবেন।
 কোনো প্রতিষ্ঠান স্কিমে অংশ নিলে কর্মী এবং প্রতিষ্ঠানের জন্য ধার্য করা মাসিক চাঁদা প্রাতিষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠান কর্তৃক একত্রে তহবিলে জমা করতে হবে।
 সব স্কিমের জন্য চাঁদার কিস্তি চাঁদাদাতার পছন্দ অনুযায়ী মাসিক, ত্রৈমাসিক বা বার্ষিক ভিত্তিতে পরিশোধের সুযোগ থাকবে।
 চাঁদাদাতা কর্তৃক নমিনি মনোনয়ন
স্কিমের চাঁদাদাতা, স্কিমে জমা করা অর্থ বা জমার বিপরীতে প্রাপ্য পেনশন বাবদ অর্থ তার মৃত্যুর পর গ্রহণ বা উত্তোলনের জন্য এক বা একাধিক নমিনি মনোনয়ন করতে পারবেন। যে কোনো সময় নমিনি বাতিল করে নতুন নমিনি নির্বাচন করা যাবে।
 নমিনি মৃত্যুবরণ করলে চাঁদাদাতাকে পুনরায় নমিনি মনোনয়ন করতে হবে।
 নমিনি নাবালক হলে চাঁদাদাতার মৃত্যুর পর নমিনি সাবালক না হওয়া পর্যন্ত নমিনির পক্ষে স্কিমের প্রাপ্য অর্থ গ্রহণ বা উত্তোলনের জন্য চাঁদাদাতা নমিনি প্রদানকালে যেকোনো ব্যক্তিকে মনোনয়ন দিতে পারবেন। তখন চাঁদাদাতার মৃত্যুর পর নমিনি সাবালক না হওয়া পর্যন্ত নিয়োগপ্রাপ্ত ব্যক্তি নাবালকের প্রতিনিধি হিসেবে গণ্য হবেন।
 জমাকৃত চাঁদা থেকে ঋণগ্রহণ
চাঁদাদাতা নিজের এবং পরিবারের সদস্যদের চিকিৎসা, গৃহনির্মাণ, গৃহ মেরামত এবং সন্তানের বিয়ে ব্যয় নির্বাহের জন্য প্রয়োজনে জমা করা অর্থের ৫০ শতাংশ ঋণ হিসাবে উত্তোলন করতে পারবেন। যা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ধার্য করা ফি’সহ সর্বোচ্চ ২৪ কিস্তিতে পরিশোধ করতে হবে এবং সমুদয় অর্থ চাঁদাদাতার হিসাবে জমা হবে। গৃহীত ঋণ পরিশোধ না হওয়া পর্যন্ত নতুনভাবে কোনো ঋণ নেওয়া যাবে না।
এছাড়া শারীরিক ও মানসিকভাবে অসমর্থ এবং মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তির ক্ষেত্রে, চাঁদাদাতার পেনশন হিসাব বা কর্পাস হিসাব, স্কিমের স্বত্ব, চাঁদাদাতা বা পেনশনারের মৃত্যুর পর স্কিমের বিপরীতে প্রাপ্য অর্থ প্রদানের ক্ষেত্রে পৃথক পৃথক বিধান রাখা হয়েছে।
চারটি স্কিমের মাধ্যমে এই সর্বজনীন পেনশন প্রকল্প চালু হচ্ছে। স্কিমগুলোর নাম- প্রবাস, প্রগতি, সুরক্ষা, সমতা। প্রবাস স্কিমটি শুধু প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য। তাঁরা বৈদেশিক মুদ্রায় চাঁদা দেবেন। প্রবাসীদের কেউ দেশে ফিরে এলে সমপরিমাণ চাঁদা দেবেন দেশীয় মুদ্রায়। মেয়াদ পূর্তিতে তাঁরা দেশীয় মুদ্রায় পেনশন পাবেন। একেবারে দেশে ফিরে এলে তাঁরা স্কিম পরিবর্তনও করতে পারবেন।
প্রগতি স্কিম বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবীদের জন্য। স্কিমের চাঁদা কর্মচারীরা ৫০ শতাংশ এবং মালিকপক্ষ ৫০ শতাংশ হারে বহন করবে। কোনো বেসরকারি প্রতিষ্ঠান স্কিমে অংশ নিতে না চাইলে ওই প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীরা নিজ উদ্যোগে এ স্কিমে অন্তর্ভুক্ত হতে পারবেন। সুরক্ষা স্কিম হচ্ছে অনানুষ্ঠানিক খাত। স্বকর্মে নিয়োজিত যেমন- রিকশাচালক, কৃষক, শ্রমিক, কামার, কুমার, জেলে, তাঁতি ইত্যাদি পেশার মানুষেরা এ স্কিমের অন্তর্ভুক্ত হতে পারবেন। আর সমতা স্কিম হচ্ছে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য, যাদের বার্ষিক আয় ৬০ হাজার টাকার কম।
সার্বজনীন পেনশন কার্যক্রম চালু হলে ভবিষ্যতে জনগণের মধ্যে এক ধরণের নিরাপত্তাবোধ জন্ম নিবে। আজ বয়স্ক মানুষরা যেভাবে তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবে, সেই ভাবনা তাদের মধ্যে আর থাকবে না। আর এই কারণেই শেখ হাসিনাকে জনবান্ধব রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে আখ্যা প্রদান করা যেতেই পারে।
স্বাধীনতার আগে এদেশের মানুষের গড় বয়স ছিলো ৪৭ বছর, আর এখন তা হয়েছে ৭৩ বছর। এই হার ২০৫০ সালে ৮০ বছর এবং ২০৭৫ সালে ৮৫ বছর হবে বলে প্রক্ষেপণ করা হয়েছে। জনমিতিকভাবে দেশ এখন জনসংখ্যাগত লভ্যাংশ ভোগ করছে। ২০৩০ সালের মধ্যে এ দেশ বয়স্ক জাতির পর্যায়ে প্রবেশের অপেক্ষায়। ২০৫০ সালে দেশে প্রবীণ জনসংখ্যার হার হবে ২০ শতাংশ। এই বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের চাহিদা নিরূপণ করতে হবে।
বর্তমানে দেশে শুধু সরকারি কর্মচারীরা পেনশন পেলেও বেসরকারি চাকরিজীবীসহ সবাইকে পেনশনের আওতায় আনার প্রতিশ্রুতি ছিল আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে। সরকার গঠনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবার জন্য এ সুবিধা চালু করে বাস্তবায়ন করছেন।
বর্তমানে আমাদের অভিযাত্রার গন্তব্য এখন স্মার্ট বাংলাদেশ। এই বাংলাদেশ হবে সকল স্তরের নাগরিকদের নিয়ে সত্যিকার অর্থের একটি অন্তর্ভূক্তিমূলক উন্নয়ন। যেখানে কেউ পিছিয়ে থাকবে না। এই যাত্রায় নতুন বাহন সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা, যা চালু হলে বয়স্কদের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত হওয়ার পাশাপাশি, দারিদ্র্য ও বৈষম্য দূরীকরণের গন্তব্যকে দ্রুত কাছে নিয়ে আসবে।