শৈত্য প্রবাহে স্থবির হয়ে গেছে উত্তরের জনপদ । উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে চলা তীব্র শৈত্য প্রবাহে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে জনজীবন। গত ৫০ বছরের মধ্যে বাংলাদেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ধরা পড়েছে নীলফামারীর সৈয়দপুরে । সেখানে তাপমাত্রা নেমে এসেছে ২ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত যে তথ্য পেয়েছে, তাতে সৈয়দপুরের তাপমাত্রা ছিল ২ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ডিমলায় ছিল ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এর আগে ১৯৬৮ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি শ্রীমঙ্গলে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
২০১৩ সালের ১১ জানুয়ারি সৈয়দপুরের তাপমাত্রা ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে এসেছিল । কিন্তু নিকট অতীতে বাংলাদেশের কোথাও থার্মোমিটারের পারদ ৩ ডিগ্রির নিচে নামেনি।
পৌষের দ্বিতীয়ার্ধে এসে গত ৪ জানুয়ারি থেকে দেশের ছয় বিভাগের ওপর দিয়ে এই শৈত্য প্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। শুরুতে এর মাত্রা মৃদু (৮-১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস) থেকে মাঝারি (৬-৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস) হলেও শনিবার রাজশাহী ও চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে আসে।
তাপমাত্রা ৪-৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে এলে আবহাওয়াবিদরা একে বলেন তীব্র শৈত্য প্রবাহ। আবহাওয়া অফিস বলছে, রাজশাহী, পাবনা, দিনাজপুর ও কুষ্টিয়া অঞ্চলের ওপর দিয়ে এখন তীব্র শৈত্য প্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।
আর শ্রীমঙ্গল ও সীতাকুণ্ড অঞ্চলসহ ঢাকা, ময়মনসিংহ ও বরিশাল বিভাগ এবং রাজশাহী, রংপুর খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্য প্রবাহ।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে , সোমবার সারা দেশে রাত ও দিনের তাপমাত্রা মোটামুটি অপরিবর্তিত থাকবে। পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় তাপমাত্রায় সামান্য পরিবর্তন হতে পারে। আর এ সপ্তাহের শেষ দিকে রাতের তাপমাত্রা বেড়ে শীতের প্রকোপ কিছুটা কমে আসতে পারে।
শীতজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত শিশু ও বৃদ্ধদের ভিড় বেড়েছে উত্তরের জেলাগুলোর হাসপাতালে। পাবনা সদর হাসপাতালে শতাধিক শিশু ভর্তি হয়েছে নিউমোনিয়া, ব্রঙ্ককাইটিস ও কোল্ড ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে।
শীত মৌসুমে প্রতিদিনই মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত কুয়াশা থাকে। সোমবারের আবহাওয়ার বুলেটিনে বলা হয়েছে, দেশের কোথাও কোথাও কুয়াশার দাপট দুপুর পর্যন্ত চলতে পারে।
এদিকে টানা পাঁচ দিনের শৈত্য প্রবাহে দেশের উত্তরাঞ্চলের জীবনযাত্রা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। হাড় কাঁপানো শীতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে শ্রমজীবী মানুষ।
আমাদের নীলফামারি, দিনাজপুর, পাবনা ও রাজশাহী প্রতিনিধি জানান, জরুরি প্রয়োজন ছাড়া সকালের দিকে ঘর থেকে বের হচ্ছে না মানুষ। বেলা ১১টা পর্যন্ত রাস্তা-ঘাট ফাঁকাই দেখা যাচ্ছে। স্কুল কলেজেও শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কমে গেছে।
ঘন কুয়াশার কারণে মহাসড়কে দিনের বেলাতেও হেডলাইট জ্বালিয়ে ধীরগতিতে চলছে যানবাহন।
সংবাদটি শেয়ার করুন