সদরুল আইন, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার:
গাজীপুর জেলার শ্রীপুর পৌরসভা বৈশ্বিক মহামারি করোনাকালীন ২০২০ সালে বিতর্কিত একটি নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনা করে বলে অভিযোগ রয়েছে।
উক্ত নিয়োগে ১০ দশ জনের স্থায়ী নিয়োগদানের সংবাদ প্রকাশ হয়। এর মধ্যে একই পরিবার থেকে বেশ কয়েকজনকে নিয়োগ দেয় শ্রীপুর পৌর কর্তৃপক্ষ।
উক্ত অবৈধ নিয়োগের প্রতিবেদন চেয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো: আব্দুর রহমান গত ৯/২/২৩ ইং সাক্ষরিত স্মারক নং ৪৬.০০.০০০০.০৬৩.১১.০০৫.২০.২৫০ এ সংক্রান্ত পত্রটি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইড
www.lgd.gv.bd সচিবালয় ও
বহুল আলোচিত মোঃ সবুজ মিয়ার আপন মামাতো ভাই (১)আব্দুল আলিমকে সহকারী কর আদায়কারী, পৌরসভার নকশাকার জসিমের স্ত্রী(২)লিজা আক্তারকে সহকারী লাইসেন্স পরিদর্শক, শ্যালক ফেরদৌস আহমেদকে স্বাস্থ্য সহকারী ও বোন জান্নাতুল ফেরদৌসিকে-সহকারী কর আদায়কারী পদে নিয়োগ প্রদান করা হয়।
একই নিয়োগে মোঃ সবুজ মিয়া রোড রোলার চালক ও এবং সবুজের নিকট আত্মীয় (৬)মাসুম বিল্লাহ হিসাব সহকারী, নিয়োগ কমিটির আত্মীয় হিসেবে পরিচিত ফেরদৌসী আক্তার-স্টোর কিপার, খালিদ হাসান সাগর-টিকাদানকারী, সাজ্জাদ হোসেন রায়হান-সার্ভেয়ার এবং নাসরীন সুলতানা রিপা-টিকাদানকারী পদে নিয়োগ পান।
নিয়োগদাতা কর্তৃপক্ষ ১/২০২০-৪৫৩ স্মারক মূলে ১০ জনকে নিয়োগ দেওয়ার দীর্ঘদিন পর সম্প্রতি মন্ত্রনালয় কর্তৃক ওয়েবসাইটে প্রকাশিত অবৈধ নিয়োগের বিষয়টি জনসাধারণের দৃষ্টিগোচর হয়।
জানা যায়, মন্ত্রনালয় কর্তৃক ৮ জনের ছাড়পত্রের আড়ালে ১০ জনকে নিয়োগ প্রদান করায় সে সময় এ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা এবং সবুজ মিয়াকে নিয়ে বিভিন্ন পত্র পর্ত্রিকায় ব্যাপক লেখালেখি এবং টিভি চ্যানেলগুরোতে একাধিক সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
অবৈধ নিয়োগ দিয়ে চাকুরী প্রত্যাশীদের কাছ থেকে আনুমানিক চার কোটি টাকার নিয়োগ বানিজ্যের অভিযোগ উঠে। যা দিয়ে সিন্ডিকেট প্রধান সবুজ উত্তরা ১২ নাম্বার সেক্টরে ৯ নাম্বার রোডে দেড়-কোটি টাকা মূল্যের বিলাসবহুল একটি ফ্ল্যাট ক্রয় করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
এছাড়া সবুজ মিয়া চাকুরীর বয়সসীমা অতিক্রান্ত হলেও প্রকৃত সত্য গোপন করে নকল পরিচয়পত্র তৈরী করে সরকারী চাকুরী গ্রহন করে। এসব কারণে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন( ইসি )দ্বৈত ভোটার হওয়ার অপরাধে ২০২২ সালের ৮ নভেম্বর গফরগাঁও থানায় সবুজের বিপরীতে মামলা দায়ের করে। মামলা নং ৫/২০২।
শ্রীপুর পৌরসভার এরকম অসংখ্য অভিযোগের পরিপ্রক্ষিতে উপসচিব মো: আব্দুর রহমান সাক্ষরিত একটি পত্র সম্প্রতি প্রেরণ করে । যার স্মারক নম্বর:৪৬,০০,০০০০,০৬৩.১১.০০৫.২০-২৫০। উক্ত পত্রে উল্লেখ্য করা হয় উপর্যুক্ত বিষয় ও সূত্রস্থ স্মারকের পরিপ্রেক্ষিতে শ্রীপুর পৌরসভায় ইতঃপূর্বে ৮ টি পদে ১০ জনের অবৈধ নিয়োগের আনীত অভিযোগটি তদন্ত করে মতামত প্রদানের জন্য ২নং সূত্রস্থ স্মারকে অনুরোধ করা হয়।
কিন্তু চাহিত প্ৰতিবেদন অদ্যাবধি এ বিভাগে পাওয়া যায়নি। উল্লেখ্য এর পূর্বেও উক্ত অবৈধ নিয়োগের নথিপত্র চেয়ে স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ পৌর-১ শাখা বাংলাদেশ সচিবালয় হতে অনুরোধ করা হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এর কোন কর্ণপাত করেনি। পূর্বের স্মারক নম্বর নং-৭১০; তারিখ: ১৯/১২/২০২২ খ্রিঃ। স্থানীয় সরকার বিভাগের পৌর-১ শাখার পত্র নং-৯৮১; তারিখ: ২১/১০/২০২১ খ্রি:।
পৌরসভার কর্মচারী নিয়োগ সম্পর্কিত অনিয়ম ও দুর্নীতি প্রসঙ্গে ২০০৯ সালের ২১ আগষ্ট তৎকালীন শ্রীপুর পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র জনাব আব্দুল জলিল একটি লিখিত অভিযোগ প্রদান করেন। পরবর্তীতে ২০১০ সালের ১২ আগস্ট ২১ নং স্মারকে নিয়োগ কমিটির সভাপতি বর্ণনা করেন যে, তিনি নিয়োগ কমিটির আহবায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি নিয়োগ সংক্রান্ত সকল কাজ সম্পন্ন করেন। কোন অনিয়ম হয়ে থাকলে তা আহবায়কের দেখার বিষয় হতে পারে না। নিয়োগ কমিটির সংশিষ্ট সদস্যগণ এব্যপারে দায়ী থাকবেন।
২০০৯ ও ২০২০ সালের দুটি নিয়োগ বিতর্কিত প্রক্রিয়ায় হলেও প্রার্থী ভিন্ন হওয়ায় এবার সব প্রকাশ্যে চলে এসেছে।
এ ব্যাপারে আজ(১৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০ টা ১০ মিনিটে শ্রীপুরের পৌর মেয়র আলহাজ্ব আনিছুর রহমানের বক্তব্য নিতে তার মুঠোফোনে ফোন করলে তার মোবাইলটি বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য গ্রহন করা সম্ভব হয়নি।