তাপস দাশ : মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলে পর্যটন শিল্পের বর্তমান অবস্থা ও আমাদের করণীয় শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) শহরের ভানুগাছ সড়কের টি ভ্যালী রেস্টুরেন্টে সকাল ৯টায় ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব মৌলভীবাজার (টোয়াম) এর
উদ্যোগে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের আয়োজনে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশয় ট্যুরিজম বোর্ড-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (অতিরিক্ত সচিব) আবু
তাহের মুহাম্মদ জাবের, বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড এর উপ-পরিচালক
(পরিকল্পনা ও গবেষণা) মো: মাজহারুল ইসলাম। আরও উপস্থিত ছিলেন টোয়াম এর
আহবায়ক মো: খালেদ হোসেন।
চায়ের রাজধানীখ্যাত শ্রীমঙ্গল তথা মৌলভীবাজারের পর্যটন শিল্পকে এগিয়ে নিয়ে যেতে মূলত এই সেমিনারের আয়োজন করা হয়। এই শিল্পের বিকাশে বিভিন্ন সমস্যা ও করণীয় নিয়ে বক্তব্য রাখেন লিটন ইকো ট্যুরস এর অপারেটর লিটন দেব, স্মার্ট ট্যুরিজম এর অপারেটর এম এ রাকিব, বৈশাখী ট্যুর এর সিইও
মো: শফিকুল ইসলাম রুম্মন, রাহা ট্যুরিজম এর ট্যুর অপারেটর লুৎফুর রহমান, অতিক্রম ট্যুরিজম এর সাইফুল ইসলাম, গ্রিন লিফ ইকোট্যুরিজম এর ট্যুর অপারেটর তাপস দাশ, ওয়ান ওয়ার্ল্ড এর পরিচালক মোতাহের আলম, ট্যুর গাইড পংকজ ভট্টাচার্য, জামাল হোসেন, সাজু
মারচিয়াং, শ্যামল দেব বর্মা, আহাদ মিয়া, ইউসুফ আলী, গ্রিণ লিফ গেষ্ট হাউসের স্বত্তাধীকারী
এস কে দাশ সুমনসহ স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীরা।
সেমিনারে বক্তারা পর্যটন উন্নয়নকল্পে টি-ট্যুরিজম উন্নয়ন, ঢাকা-সিলেট ও ঢাকা-চট্রগ্রাম রুটে অন্তত দুটি আন্তনগর ট্রেন সংযোজন, প্রকৃতিনির্ভর পর্যটনে বিশেষ গুরুত্বারোপ করা, পরিবেশবান্ধব ও হাওর-পর্যটন ব্র্যান্ডিং করা, শমশেরনগর বিমানবন্দর পুনরায় চালু করা, প্রান্তিক অঞ্চলের তরুণ উদ্যোক্তাদের সহজ শর্তে ঋণ প্রদানসহ সব ধরনের পৃষ্ঠপোষকতা এবং দায়িত্বশীল পর্যটন শিল্প বিকশিত করার দাবী জানানো হয়।
ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, আমি বাংলাদেশ ট্যুরিজম-কে বিশ্বের দরবারে প্রচার করতে চাই। কিন্তু আমাকে যদি এই কাজ করার জন্য পঞ্চাশ লক্ষ টাকা দেয়া হয়। যেখানে ইন্ডিয়াতে ১৮৬ কোটি ৯৭ লক্ষ রুপি দেওয়া হয় শুধু এক বছরের প্রমোশনাল কাজের জন্য। তাহলে আমার দেশে ট্যুরিস্ট ভীড় জমাবে নাকি ইন্ডিয়াতে? ট্যুরিজম বোর্ড কি করেছে আমি সে বিষয়ে বলতে চাই না। তবে টি – ট্যুরিজম নিয়ে আমরা একটা কার্যক্রম করার চেষ্টা করেছিলাম কি বোর্ডের সাথে। কিন্তু টিবোর্ড এর কর্মকর্তা এবং চা শ্রমিক মালিকদের অসহযোগিতার কারণে আমরা ব্যর্থ হয়েছি। মৌলভীবাজারে নতুন জেলা প্রশাসক যোগদান করা মাত্র চা বাগানের মালিক ও পর্যটন সংশ্লিষ্ট সকল স্টেক হোল্ডারদের নিয়ে একটি ওয়ার্কশপ করতে চাই। তখন আপনারা আপনাদের দাবী-দাওয়া তুলে ধরবেন।
প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আরও বলেন, শ্রীমঙ্গলে আমরা একটা ট্যুরিস্ট ইনফরমেশন সেন্টার স্থাপন করবো। এছাড়া শ্রীমঙ্গল পর্যটন উন্নয়নের লক্ষ্যে যাবতীয় বিষয় লিখিত আকারে পেশ করার জন্য অনুরোধ জানান। সেক্ষেত্রে সেসব ডিপার্টমেন্টের সাথে আমরা যোগাযোগ করতে পারি।
ট্যুর অপারেটর ও ট্যুরিস্ট গাইডদের জন্য করা নতুন আইনের বিষয় নিয়েও তিনি কথা বলেন। আইন এবং বিধিমালা যখন তৈরি করা হয়, তখন ট্যুরিজম বোর্ড কোনো ধরনের ফি আরোপ করার কথা বলেনি। আমরা যখন প্রস্তাব পাঠাই তখন একটি টাকাও আরোপের কথা উল্লেখ করি নি। শুধুমাত্র একটা সাধারণ নিবন্ধন ফি’র প্রস্থাব দিয়েছি। যখন এটি মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে, তখন স্টেক হোল্ডারদের মিটিং হয়েছে। সেখানে ট্যুর অপারেটর এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে ফি আরোপের কথাটি উঠে আসে। সেখানেই অপারেটররা দশ লক্ষ, তিন লক্ষ টাকা আরোপের প্রস্তাব দেয়।
এছাড়া শ্রীমঙ্গল শহরের সৌন্দর্য বর্ধন ও পরিবেশ রক্ষায় ট্যুরিজম বোর্ডের পক্ষ থেকে ৫০টি ডাস্টবিন ট্যুর অপারেটরদের নিকট দ্রুত প্রদান করার আশ্বাস দেন।
সংবাদটি শেয়ার করুন