সদরুল আইন, নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
সবুজ সঙ্কেত পেতে শুরু করেছেন আওয়ামী লীগের নতুন প্রার্থীরা।ইতিমধ্যেই ১০ জন প্রার্থি সবুজ সংকেত পেয়েছেন বলে জানা গেছে।
বিশেষ সূত্র জানায়, বর্তমান সংসদের ৯০ থেকে ১০০ জন এমপি মনোনয়নের জন্য বিবেচিত হতে পারেন।বাকিরা মনোনয়ন বঞ্চিত হবেন।ক্লিন ইমেজ নেই,জনপ্রিয়তা হারিয়েছেন,জনগনের চোখে প্রশ্নবিদ্ধ এমন প্রার্থিরা কোনভাবেই মনোনয়ন পাচ্ছেন না।
যেসব আসনে পরিবর্তন আনা হবে সেসব আসন চিহ্নিত করা হয়েছে।সেখানে একাধিক জরিপের মাধ্যমে বিকল্প প্রার্থি ঠিক করা হয়েছে।বিদ্রোহ ঠেকাতে এবার আগে থেকেই চুড়ান্ত প্রার্থিকে সবুজ সংকেত প্রদান করা হবে ধীরে ধীরে।
একই সাথে প্রচারে থাকা অন্য প্রার্থিদের নিজ প্রচারণা থেকে মাঠ থেকে সরে যেতে বলা হবে এবং মনোনীত প্রার্থির পক্ষে কাজ করতে কঠোর সাংগঠনিক নির্দেশণা ও সেই নির্দেশণা বাস্তবায়ন হচ্ছে কি না তা কেন্দ্রিয়ভাবে মনিটরিং করা হবে।
কাজী দীন মোহাম্মদ। নিউরো মেডিসিনের আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন একজন বিশেষজ্ঞ। দীর্ঘদিন ধরেই চিকিৎসা পেশায় অবদান রেখেছেন এবং একজন ভালো চিকিৎসক হিসেবে সুনাম কুড়িয়েছেন।
তার নেতেৃত্বে নিউরোসাইন্স ইন্সটিটিউট বাংলাদেশে একটি অন্যতম বিশেষায়িত চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান হিসেবে আলোচিত এবং সমাদৃত হয়েছে।
সম্প্রতি তাকে আওয়ামী লীগ সভাপতি ডেকে পাঠান। আওয়ামী লীগ সভাপতির সাথে সাক্ষাৎকালে প্রধানমন্ত্রী তাকে ফরিদপুরে যাতায়াত করতে বলেন এবং ফরিদপুরে আগামী সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বীতাও করার জন্য নির্দেশ প্রদান করেন।
যদিও কাজী দীন মোহাম্মদ এখন সরকারি চাকরিতে আছেন, বিষয়টি তিনি অবহিত করেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী তাকে নির্বাচনের প্রস্তুতি গ্রহণ করার জন্য পরামর্শ দেন। এই পরামর্শের সূত্র ধরেই কাজী দীন মোহাম্মদ এখন তার নির্বাচনী এলাকায় যাচ্ছেন এবং আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটিতে তিনি একজন সদস্য হিসেবেও মনোনীত হয়েছেন।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে সরকারি চাকরিজীবীদের বিধিনিষেধ রয়েছে। সরকারি চাকরি থেকে অবসরের পর অন্তত তিন বছর তিনি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।
সেই হিসেবে কাজী দীন মোহাম্মদ নূরুল হক এখনও চুক্তিভিত্তিক সরকারি চাকরিতে নিয়োজিত। এমন প্রশ্নের উত্তরে একাধিক আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্টে এ নিয়ে একটি রিট পিটিশন করা হয়েছিল। রিট পিটিশনে আদালত বলেছিল, যারা সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি তারা যদি আবেদন করেন, তাহলে সেক্ষেত্রে সেটি বিবেচনা করা হবে।
চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করার পর বা চাকরি ছেড়ে দেবার পর একজনকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করা অসাংবিধানিক এবং সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক বলেই মনে করছেন আইনজীবীরা।
কিন্তু সরকার আগ বাড়িয়ে নির্বাচন আইন পরিবর্তন করতে চায়না এবং এই আইনে সরকারি কর্মচারীদের যে বিধিনিষেধ আছে- তা তুলে ফেলতেও চায় না। বরং ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নির্বাচনে ঝুঁকি নিয়ে কয়েকজন প্রার্থী, যারা আরপিও’র অধীনে এখন নির্বাচনের অযোগ্য, কিন্তু জনপ্রিয়, তাদেরকে মনোনয়ন দিতে চায় এবং তাদেরকে আদালতে অবতীর্ণ হওয়ার পরামর্শও দিবে বলে জানা গেছে।
যদি আদালত তাদেরকে শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন না দেয়, তাহলে আওয়ামী লীগ বিকল্প প্রার্থী বাছাই করবে। তবে আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা আশা করছেন, দলীয় মনোনয়ন পেয়ে আদালতে গিয়ে প্রার্থীরা যদি চ্যালেঞ্জ করেন, সেক্ষেত্রে আদালত সংবিধানের বিচার-বিশ্লেষণ করে তাদেরকে মনোনয়ন দিতেও পারে।
আওয়ামী লীগ আগামী নির্বাচনে এ রকম বেশ কিছু প্রার্থীকে সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে। কাজী দীন মোহাম্মদ তাদের মধ্যে একজন।
এছাড়াও সাবেক মন্ত্রী পরিষদ সচিব কবির বিন আনোয়ার চাকরি থেকে অবসরে গেছেন। বর্তমানে তিনি পিএলআর-এ আছেন। তিনিও এখন সিরাজগঞ্জে তার নির্বাচনীয় এলাকায় যাতায়াত শুরু করেছেন। ওই নির্বাচনী এলাকা থেকে কবির বিন আনোয়ারকেও মনোনয়ন দেওয়ার সবুজ সঙ্কেত দেওয়া হয়েছে বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে।
তিনিও যদি আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পান আরপিও চ্যালেঞ্জ করে তাকে হাইকোর্টে আইনী লড়াই করতে হবে। তবে এ দুজনের বাইরে আরও অন্তত দশজন প্রার্থীর সন্ধান পাওয়া গেছে,যাদেরকে আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারক পর্যায় থেকে সবুজ সঙ্কেত দেওয়া হয়েছে- যারা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নতুন মুখ হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
আওয়ামী লীগের সূত্রগুলো বলছে, নম্বই থেকে একশ’ জন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আছেন- যারা আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন পাবেন মোটামুটি নিশ্চিত এবং তারা এলাকাতেও জনপ্রিয়।
এ রকম প্রার্থীদেরকে আওয়ামী লীগ সভাপতি যেমন সবুজ সঙ্কেত দিয়েছেন, তেমনি নতুন প্রার্থীদেরকেও আস্তে আস্তে তাদের নির্বাচনে প্রস্তুতি গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।
সংবাদটি শেয়ার করুন