১৬ই মে ২০২২ খ্রিস্টাব্দ | ২রা জ্যৈষ্ঠ ১৪২৯ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১১:৩৪ পূর্বাহ্ণ, মে ৬, ২০২২
সদরুল আইনঃ
বর্তমান সরকারের সকল অর্জনকে বিতর্কিত করতে এবং সরকারকে বিপদে ফেলতে সারাদেশে নিত্যপন্য ভোজ্য তেল নিয়ে চলছে কারসাজি।
এই কারসাজি চক্রের কাছে রীতিমতো জিম্মি হয়ে পড়েছে ভোক্তারা। ঈদের দুই দিন আগে থেকে রাজধানীসহ সারাদেশে সয়াবিন, পাম অয়েল অনেকটা উধাও হয়ে গেছেে। সোনার হরিণ! ভোজ্য তেল বাড়তি টাকা দিয়েও অনেকেই পাচ্ছেন না।
আবার কোনো কোনো দোকানে পাওয়া গেলেও তেলের সঙ্গে অন্য পণ্য কিনতে শর্ত জুড়ে দেওয়া হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বাজারে বেশির ভাগ দোকানে সয়াবিনের সরবরাহ নেই। একই অবস্থা পাম অয়েলের ক্ষেত্রেও। খুচরা ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, কোম্পানির পরিবেশক ও পাইকারদের কাছে থেকে তারা তেল পাচ্ছেন না।
অথচ মিলে যথেষ্ট পরিমাণে তেল রয়েছে।খুচরা বিক্রেতারা জানান, বারবার তাগাদা দিয়েও তারা কোম্পানির পরিবেশক ও পাইকারদের কাছ থেকে তেলের সরবরাহ পাচ্ছেন না।
ঈদের দুই দিন আগে কাওরান বাজারে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের অভিযানের পর সয়াবিন, পাম অয়েল অনেকটা উধাও।
মুদি দোকানদাররা বলেন, কোম্পানির পরিবেশকদের কাছে বারবার চেয়েও সয়াবিন তেল পাওয়া যাচ্ছে না। ঈদের আগে পরিবেশককে খুশি করে ২/৩ কাটুন তেল পাওয়া গিয়েছিল যা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুণমল। কবে নাগাদ পরিবেশকদের কাছ থেকে তেল পাওয়া যাবে তা জানেন না খুচরা ব্যবসায়িরা।
এদিকে সরকারের বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) তাদের বাজারদরের প্রতিবেদনে সয়াবিন, পাম অয়েলের চড়া দামের কথা জানিয়েছে। সংস্থাটি জানিয়েছে, প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৮৫ থেকে ১৯০ টাকায়। পাম অয়েল বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকায়। তবে বাজারে যে দু-একটি দোকানে তেল পাওয়া যাচ্ছে। সেখানে সয়াবিন প্রতি লিটার ২০০ থেকে ২১০ টাকা ও পাম অয়েল ১৯০ টাকা লিটারে বিক্রি করা হচ্ছে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
রমজানের শুরুতে প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন ১৫২ থেকে ১৫৮ টাকা, পাম অয়েল ১৪০ থেকে ১৪৪ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এছাড়া ৫ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন ৯০০ টাকায় বিক্রির অবিযোগ পাওয়া গেছে।
উল্লেখ্য, গত প্রায় দুই বছর ধরেই ভোজ্য তেলের বাজার অস্থির। প্রতিনিয়ত দাম ওঠানামা করছে। কিন্তু গত এক মাসের ব্যবধানে কী এমন হলো যে, বাজার থেকে ভোজ্য তেল উধাও হওয়ার মতো অবস্থা হয়েছে? এ প্রশ্ন ভোক্তাদের।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, দেশের ভোজ্য তেলের বাজার মূলত আমদানিনির্ভর। সম্প্রতি ইন্দোনেশিয়া পাম অয়েল রপ্তানি বন্ধ ও আর্জেন্টিনা রপ্তানি সীমিত করার ঘোষণা দেওয়ার পর থেকে ভোজ্যতেলের বাজার হু হু করে বাড়ছে।
সেই সঙ্গে রয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের নেতিবাচক প্রভাবও। তবে বর্তমানে দেশের বাজারে যে সয়াবিন, পাম অয়েল বিক্রি হচ্ছে তা আগের আমদানি করা। এখনই ইন্দোনেশিয়ার পাম অয়েল রপ্তানি বন্ধের প্রভাব বাজারে কেন পড়বে? সংশ্লিষ্টরা বলেছে, এটা কারসাজি ছাড়া আর কিছুই না।
এক শ্রেণির অসত্য ব্যবসায়ী কারসাজি করে অধিক মুনাফার লোভে হু হু করে তেলের দাম বাড়াচ্ছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, গত এপ্রিলে বসুন্ধরা, সিটি, মেঘনা, বাংলাদেশ এডিবল অয়েল, টিকে ও সেনা কল্যাণ সংস্থা এই ছয় কোম্পানি ৮ কোটি লিটার সয়াবিন তেল বাজারজাত করেছে।
এর মধ্যে বসুন্ধরা গ্রুপ সোয়া ৩ কোটি লিটার, সিটি গ্রুপ ১ কোটি ৪৩ লাখ লিটার, মেঘনা ১ কোটি ৩০ লাখ লিটার, বাংলাদেশ এডিবল অয়েল ৮৮ লাখ লিটার, টিকে গ্রুপ ৮৭ লাখ লিটার ও সেনা কল্যাণ এডিবল অয়েল ৫৪ লাখ লিটার সয়াবিন তেল বাজারজাত করেছে। তাহলে এত তেল যাচ্ছে কোথায়?
এ প্রসঙ্গে সিটি গ্রুপের পরিচালক বিশ্বজিত সাহা বলেন, বাজারে প্রতিদিনি যে পরিমাণ তেল সরবরাহ করা হচ্ছে তাতে তো কোনো সংকট হওয়ার কথা নয়। সরবরাহ ব্যবস্থার কোনো স্তরে সমস্যা আছে কি না, তা খুঁজে বের করতে হবে।
উল্লেখ্য, দেশে প্রতি মাসে গড়ে ১ লাখ টন সয়াবিন তেলের চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে প্রতি মাসে গড়ে ৬৫ হাজার টন অপরিশোধিত সয়াবিন তেল আমদানি হয়। এ ছাড়া সয়াবিন বীজ মাড়াই করেও প্রতি মাসে ২৮ হাজার টন সয়াবিন তেল উৎপাদন করা হয়।
প্রতি বছর পাম অয়েলের চাহিদা প্রায় ১৩ লাখ টন। এই চাহিদার ৯০ শতাংশ আসে ইন্দোনেশিয়া থেকে। বাকিটা আসে মালয়েশিয়া থেকে।
চট্টগ্রাম কাস্টমসের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৮ এপ্রিল ইন্দোনেশিয়া পাম অয়েল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা জারির আগে দেশের আমদানিকারকরা এপ্রিল মাসেই প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার টন পাম অয়েল আমদানি করেছে।
নিষেধাজ্ঞার কারণে ইন্দোনেশিয়ায় কমপক্ষে ২০ হাজার টন পাম অয়েল আমদানির চালান আটকে গেছে। তবে যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এলসি করা হয়েছে তাই এই তেল আসবে।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে, বর্তমানে কোম্পানিগুলো ও আমদানিকারকদের কাছে যে পরিমাণ সয়াবিন, পামঅয়েলের মজুত আছে, তাতে দেশের বাজারে ভোজ্য তেলের কোনো সংকট হওয়ার কথা না। কিন্তু একটি চক্র কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে।
সরকারকে এখনই এই কারসাজি চক্রতে আইনের আওতায় আনতে হবে। না হলে ভোক্তাদের ভোগান্তি পোহাতে হবে।সেই সাথে সরকারের প্রতি সাধারন মানুষের বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হতে পারে।
Editor in Chief
Contact: 017111-66826
National Desk In-charge
ᴍᴅ. ꜱʜᴀꜰɪqᴜʟ ɪꜱʟᴀᴍ ᴀᴢᴀᴅ ᴋʜᴀɴ
Contact: 01712805804
RED TIMES LIMITED
116-117, Concord Emporium,
Kataban, Dhaka-1205.
Mobile: 017111-66826
Email: redtimesnews@gmail.com