২২শে সেপ্টেম্বর ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই আশ্বিন ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১১:৪৩ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ১, ২০১৮
শেলী সেনগুপ্তা
সংস্কৃতির বিষয়ে সবচেয়ে সহজ ও যুক্তিগ্রায্য কথা বলো- আমি যা,তাই আমার সংস্কৃতি। আমার আচার, আমার ব্যবহার ,আমার পরিচ্ছেদ,আমার খাদ্য, আমার সঙ্গীত, আমার সাহিত্য—এইসব কিছু নিয়েই আমার সংস্কৃতি। তাই বলা চলে সংস্কৃতির সবচেয়ে বড় সংজ্ঞা হচ্ছে ‘ culture is what i am’.
এই সংজ্ঞাকে সাথে নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার পথেও অনেক বাধা ছিলো। অনেক ভ্রান্তিবীক্ষণও ছিলো। সংস্কৃতির বিকাশের জন্য অনুকূল বাতাবরণও ছিলো না।
নারী ও পুরুষের মূল্যায়ণ, যোগ্যতাবিচার, পোষণা ও পৃষ্টপোষণার সময় আমাদের সবার দু’চোখের দৃষ্টি সমান ছিলো না। সব কাজের জন্য নারীর উপযোগিতাও আমরা সমান আন্তরিকতায় আবিস্কার করতে পারিনি। তার উপর আমরা আবার নারী এবং পুরুষকে সবার আগে লিঙ্গভিত্তিক বিচারে টেনেছি,তারপর যদি মন চায় তাদের সক্ষমতা বিচারে আগ্রহী হয়েছি।
এতে ক্ষতি যা হওয়ার তা আমাদেরই হয়েছে, চোখের উপর যে প্রতিবন্ধকতা, তা দেখার মনকেও বিনাশ করেছে। আমাদের মনির উপর চেপে বসা ছানীও সময়মতো অপসারণ করা সম্ভব হয়নি।
তবে আশার কথা, আমাদের কাজের পরিবেশ পাল্টেছে। মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের পক্ষে কাজ করার সুযোগ আমাদের পরিবেশ পালটে দিয়েছে। আমাদের অন্তরের সকল স্বরলিপি এখন সুন্দর ,শুভ এবং কল্যাণের পক্ষে সাজানো হয়েছে। এখন আমরা বুঝতে পেরেছি, নারী সমাজের অর্ধেক অংশ। এই অংশকে কে অবহেলা করে, ভিন্ন দৃষ্টিতে বিচার ব্যবচ্ছেদ করে সমাজকে এগিয়ে নেয়া যায় না। দেহের সব রক্ত এক জায়গাতে টেনে নেয়া কখনোই সুস্বাস্থ্যের লক্ষণ নয়।
সাংস্কৃতিক বিকাশের কয়েকটি প্রত্যক্ষফল হচ্ছে আপন আপন যোগ্যতার বলে দেশের সরকারপ্রধান,জাতীয় সংসদের স্পিকার,জাতীয় সংসদের উপনেতাসহ প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদে সমাসীন হয়েছেন নারী। নারী এখন সিনিয়ার সচিব এবং সচিব , বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও উপ-উপাচার্য, বিজ্ঞানী,গবেষক, চিকিৎসক ও প্রকৌশলী। পূর্বে যেসব পেশায় নারীর দায়িত্ব পালন দৃশ্যমান হত না , এখানেও এখন তাদের অন্তর্ভূক্তি হচ্ছে। এতে তাদের বিপরীত পরিচয়ের মানুষের আনন্দ-অনূমোদন আমাদের উল্লাসিত করছে। সমাজ বিকাশের এই ধারাবাহিকতায় আমরা অনুপ্রাণিত হচ্ছি।
তাছাড়া আমরা আনন্দের সাথে লক্ষ্য করছি- নারী এখন পাইলটের আসনেও বসছে। গ্রাম থেকে আসা নারী এখন দপ্তরের গাড়িচালকের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। অথচ একসময় তাদের জীবন ছিলো ‘ভোজনের পরে রন্ধন আর রন্ধনের পর ভোজন’ এর ধারাবাহিক চক্কর। উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার পাশাপাশি নারী এখন মিডিয়া কর্মী, সাংবাদিক, ফটোগ্রাফার, ক্যামেরাম্যান, ভারী যানবাহনের চালক। নারী এখন গোয়েন্দা কর্মকর্তা, শুল্ক বিভাগের আধিকারিক এবং আইন শৃঙ্খলা ও প্রতিরক্ষাবাহিনীর সদস্য। তার রাষ্ট্রদূত ও বিচারপতি, আইনজীবী ও চেম্বার সদস্য, ব্যবসায়ী ও শিল্প উদ্যোক্তা, মানবাধিকারকর্মী ও ক্রিকেটার-ফুটবলার। তাছাড়া বলা যেতে পারে নারী শ্রমের উপর দাঁড়িয়ে আছে আমাদের উল্লেখযোগ্য ধনভান্ডার পোশাকশিল্প।
সমাজ-প্রগতির এমন কোন বিষয় নেই যেখানে নারী যুক্ত হয়নি। সুতরাং এখন যা করনীয়, তা হলো সবসময় কর্মমুখর ও শ্রমশীল থাকতে হবে যেন উন্নয়ণ ও অগ্রগমনের এ ধারায় যতি না বসে। সাথে সাথে মজবুত অর্থনীতিতে নারীর ভুমিকাও যেন ক্রমবর্ধিষ্ণু হয়। #
RED TIMES LIMITED
116-117, Concord Emporium,
Kataban, Dhaka-1205.
Mobile: 017111-66826
Email: redtimesnews@gmail.com