২৮শে ফেব্রুয়ারি ২০২১ ইং | ১৫ই ফাল্গুন ১৪২৭ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ২:২৬ অপরাহ্ণ, মে ১০, ২০১৯
সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে সোনাগাজী মডেল থানার ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে । ফেনীর মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় গাফিলতির প্রমাণ পাওয়ার পর এই ব্যবস্থা নেয়া হয় ।
শুক্রবার পুলিশের সহকারী মহাপরিদর্শক (মিডিয়া) সোহেল রানা জানান , মোয়াজ্জেম হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করে রংপুরে ডিআইজির কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে।
পুলিশ সদর দপ্তরের গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মোয়াজ্জেম হোসেন আপাতত বেতন-ভাতা ও পদ অনুযায়ী সুযোগ-সুবিধা পাবেন না। শুধু নিয়ম অনুযায়ী খোরাকি ভাতা পাবেন।
নুসরাত হত্যার ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে তদন্ত শেষে পুলিশ সদর দপ্তরের তদন্ত দল ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনসহ অন্তত চারজনের গাফিলতির প্রমাণ পাওয়ার কথা জানিয়ে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছিল।
ডিআইজি এস এম রুহুল আমিনের নেতৃত্বে গঠিত পাঁচ সদস্যের ওই তদন্ত দল গত ৩০ এপ্রিল তাদের প্রতিবেদন দেন।
সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলার বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের মামলা তুলে না নেওয়ায় গত ৬ এপ্রিল কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় ওই মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাতের গায়ে।
এ ঘটনায় নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান ৮ এপ্রিল সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলাকে প্রধান আসামি করে ৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত পরিচয় আরও ৪/৫ জনকে আসামি করা হয় সেখানে।
কিন্তু অনেকেই এ ঘটনায় সোনাগাজীর পুলিশের বিরুদ্ধে গাফিলতি এবং আসামি ধরতে গড়িমসির অভিযোগ করেন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে।
নুসরাতের গায়ে আগুন দেওয়ার সময় পরীক্ষা কেন্দ্রে পুলিশ ছিল, তারপরও এ রকম ঘটনা কীভাবে ঘটল, দোষীরা কীভাবে পালিয়ে গেল এবং ওই ঘটনার পর আসামি গ্রেপ্তারে পুলিশের কেন তিন দিন সময় লাগল- সেই প্রশ্নও ওঠে।
এই পরিস্থিতিতে ১০ এপ্রিল মোয়াজ্জেম হোসেনকে সোনাগাজী থানার দায়িত্ব সরিয়ে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নে বদলি করা হয়। মামলার তদন্তভার দেওয়া হয় পিবিআইয়ের হাতে।
ওই দিন রাতেই ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান নুসরাত। তার ভাইয়ের দায়ের করা হত্যাচেষ্টা মামলাটি রূপান্তরিত হয় হত্যা মামলায়।
তখন অভিযোগ ওঠে, ঘটনা ভিন্নখাতে নেওয়ার জন্য ওসি মোয়াজ্জেম নুসরাতের মৃত্যুর বিষয়টি ‘আত্মহত্যা’ বলার চেষ্টা করেন।
নুসরাতের গায়ে আগুন দেওয়ার ওই ঘটনা সারা দেশে ক্ষোভের সৃষ্টি করলেও পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর ঘটনার তদন্তে যাথাযথ গুরুত্ব দেননি বলেও অভিযোগ ওঠে।
এই প্রেক্ষাপটে অবহেলার পাশাপাশি সার্বিক বিষয় খতিয়ে দেখতে ১৩ এপ্রিল পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত দল গঠন করে দেয় পুলিশ সদর দপ্তর।
ওই তদন্ত দলের সদস্যরা ১৭ এপ্রিল থেকে ২০ এপ্রিল এবং ২২ ও ২৩ এপ্রিল দুই দফর ফেনী গিয়ে তদন্ত করেন। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সাতজন চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র, দুইজন শিক্ষার্থী এবং ৪/৫ জন সাংবাদিকদেরও বক্তব্য শোনেন তারা।
এদিকে নুসরাতের মৃত্যুর পরদিন ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, থানায় ওসির সামনে অধ্যক্ষ সিরাজের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ তুলে ধরতে গিয়ে অঝোরে কাঁদছেন ওই তরুণী। নিজের মুখ তিনি দুই হাতে ঢেকে রেখেছিলেন।
সে সময় ওসি মোয়াজ্জেম ‘মুখ থেকে হাত সরাও, কান্না থামাও’ বলার পাশাপাশি এও বলেন, ‘এমন কিছু হয়নি যে এখনও তোমাকে কাঁদতে হবে’।
ওই ভিডিও ধারণ এবং তা ফেইসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ায় মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা দায়ের করেন সৈয়দ সায়েদুল হক নামের এক আইনজীবী।
ওই মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য পুলিশকে ২৭ মে পর্যন্ত সময় দিয়েছে বাংলাদেশ সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনাল।
Corporate Office:
6/A Eskatan Garden
Dhaka, Bangladesh.
Mobile: 017111-66826
Email: mansoumit@yahoo.com
Helpline - +88 01719305766