ডেস্ক রিপোর্ট : হত্যা মামলার এক আসামীর নেতৃত্বে পুলিশ ফাঁড়িতে দু’ সাংবাদিকের ওপর হামলা ও প্রাণ নাশের চেষ্টা চালানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে।’ সুনামগঞ্জের তাহিরপুর থানার বাদাঘাট পুলিশ ফাঁড়িতে সোমবার রাত সাড়ে ১০ টা থেকে ১১ টার মধ্যে এমন ঘটনা ঘটলেও রহস্যজনক কারনে ফাঁড়ির ইনচার্জ অনেকটা নীরব দর্শকের ভুমিকাই পালন করে গেছেন বলেও জানা গেছে।’ হত্যা মামলার আসামী ও তার সাথে লালিত সন্ত্রাসীদের হামলা, প্রাণ নাশের চেষ্টা ও লাঞ্চিতের অপচেষ্টার ঘটনা থেকে রেহাই পেতে ভোক্তভোগী সাংবাদিকরা ফাঁড়ির ইনচার্জের নিকট সহযোগীতা চাইলেও ওই ইনচার্জ হত্যা মামলার আসামীর সাথে অতি সখ্যতার কারনে বিষয়টি এড়িয়ে গেছেন।’ কারন ওই হত্যা মামলার আসামী শাসকদলের একজন কর্তা । সেই হিসেবে থানা পুলিশ থাকে সবসময় জামাই আদর করে রাখে । এবং একটি হত্যা মামলা থেকে তাকে বাচাঁতে তাহিরপুর থানার ওসি নন্দন কান্তি ধর যোগাযোগিমুলে অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছেন ।
জানা গেছে, তাহিরপুর থানার বাদাঘাট পুলিশ ফাঁড়িতে বিনা অভিযোগে ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই তপন চন্দ্র দাস উওর বাদাঘাট ইউনিয়নের পুরান লাউড়েরগড় গ্রামের সুনস্দও আলীর ছেলে পাথর ব্যবসায়ী আক্তার হোসেনকে সোমবার সকালে জাদুকঁটা নদী থেকে আটকে করে নিয়ে এসে ফাঁড়ির হাজত খানায় আটকে রাখেন। একই রাতে একটি ছিনিয়ে নেয়া মোটরসাইকেলও উদ্ধার করে ফাঁড়িতে নিয়ে আসার পর দুৃটি ঘটনার তথ্য সংগ্রহ করতে পেশাগত কারনে সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ফাঁড়িতে যান সিএনবাংলাদেশ ডট কমের তাহিরপুর উপজেলার প্রতিনিধি মাহফুজুর রহমান পরশ ও সময়ের সংবাদ ডটকমের প্রতিনিধি আলম শেখ। এরপরই পুলিশ ফাঁড়িতে বাণিজ্যিক কেন্দ্র বাদাঘাট বাজারের বহুল আলোচিত পান দোকানদার মানিক হত্যাকান্ডের প্রধান আসামী পৈলনপুর গ্রামের মৃত রহিছ মিয়ার ছেলে মাসুক মিয়া ফাঁড়ি ইনচার্জের কক্ষে প্রবেশ করে কিছুক্ষণ পর বেড়িয়ে এসে ফাঁড়ির আশে পাশে অপেক্ষমাণ তার সাথে ১৫ থেকে ২০ দৃবৃক্তদের ডেকে এনে ফাঁড়ির ভেতর ওই দু’ সাংবাদিককে অকথ্য ভাষায় গালি-গালাজ ও এলাকায় ঘোরাফেরা করলে পিটিয়ে হাত পা ভেঙ্গে ফেলা ও প্রাণ নাশের হুমকি প্রদান করে।’ এ সময় ফাঁড়ির ভেতর কয়েকজন পুলিশ সদস্য ও ফাঁড়ির ইনচার্জ মাসুকের ধৃষ্টতাপুর্ণ আচরণ লক্ষ্য করলেও বিষয়টি এড়িয়ে যান। এক পর্যায়ে দু’ সাংবাদিককে ফাঁড়ি থেকে বেড়িয়ে গেলে ফের মাসুক সাংবাদিক আলম শেখ ও পরশকে ডেকে এনে ঠেলা-ধাক্কা দিয়ে লাঞ্চিত করে ফাঁড়ি থেকে বের করে দেয়।’
শুধু এখানেই শেষ নয় পুলিশ ফাঁড়ির আশে পাশের সড়কে কমপক্ষ্যে মাসুক তার সাথে ১৫ থেকে ২০ জনকে অবস্থান করিয়ে রাখে সুযোগ বুঝে সাংবাদিকদের ওপর ফের হামলা ও প্রাণ নাশের ঘটনা ঘটনানোর জন্য। ’
ভোক্তভোগী সাংবাদিক আলম শেখ, ও মাহফুজুর রহমান পরশ জানান, মাসুক ও তার লোকজন সোমবার রাতে পুলিশ ফাঁড়ির ভেতরই আমাদেরকে গালি –গালাজ, প্রাণ নাশের হুমকি দেয় পরবর্তীতে তারা লাঞ্চিত করে ফাঁড়ি থেকে বের করে দেয়। তারা আরো বলেন, এসব ঘটনায় আমরা তাৎক্ষণিকভাবে রাতেই ফাঁড়ির ইনচার্জ ও থানার ওসিকে অবহিত করেছি কিন্তু ফাঁড়ির ইনচার্জ মাসুকের পক্ষ্য নিয়ে উল্টো মাসুকের পক্ষেই সাফাই গাইতে থাকেন এখন আমরা রীতিমত আতংকে রয়েছি এমনকি পেশাগত দায়িত্বপালনেও মাসুক ও তার লোকজন দ্বারা বাধাগ্রস্থ্য হচ্ছি।’
সাংবাদিকদের লাঞ্চিত’ হুমকি প্রদান করা ও রাতে সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জের নিকট যাবার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মানিক হত্যাকান্ডের আসামী মাসুক মিয়া জানান, মাহফুজুর রহমান পরশ তার ফুফাতো ভাই সেই হিসেবে তিনি থাকে রাত ১১টায় দেখে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করেন । অপরএক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আলম শেখ তার সাথে ছিলো তাই থাকেও বলে দিয়েছি পরশকে নিয়ে যেন না চলে । এর চেয়ে বেশি কিছু তাদের সাথে আমার ঘটেনি ।
এদিকে সিএনবাংলাদেশ অনলাইন পত্রিকার তাহিরপুর প্রতিনিধি মাহফূজুর রহমান পরশ জানান, মাসুক তার কোন আত্মীয় নয় । পারাপ্রতিবেশি হিসেবে আমরা তাকে চিনি । তাছাড়া এসময় আমি আমার দায়িত্ব পালনে ছিলাম । এসময় তিনি আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছেন । বিষয়টি আমি সাথে সাথে থানা পুলিশকে অবহিত করেছি এবং আমার অফিস কতৃপক্ষকেও জানিয়েছি ।
তাহিরপুর থানার বাদাঘাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই তপন চন্দ্র দাসের নিকট সোমবার রাতের ঘটনা ও হত্যা মামলার আসামী মাসুক এবং তার লালিত সন্ত্রাসীদের ওই রাতের তৎপরতা ও মাসুকের সাথে তার সখ্যতা এমনকি রাতে কী কারনে মাসুক রাতে ফাঁড়িতে গিয়েছিলো সে বিষয়য়ে বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি বললেন (০১৭১২-৪৭৪১৫৬), মাসুক ভাই বড়দল উওর ইউনিয়নের প্রাক্তন ইউপি চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিনের সাথে একটি ঘাট নিয়ে বিরোধ থাকায় তার নিষ্পক্তি করে দিতে আমার নিকট গিয়েছিলেন, সাংবাদিকদের সাথে কী ঘটনা ঘটেছে তা আমি পরে জানতে পেরেছি। ’
তাহিরপুর থানার ওসি শ্রী নন্দন কান্তি ধর জানান, সোমবার রাতেই দু’ সাংবাদিক ফোন করে বিষয়টি আমাকে জানিয়েছেন, আমি সরজমিনে খোঁজ নিয়ে দেখব কি হয়েছে।
এদিকে ঘটনার রাতে সুনামগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপারকে মুঠোয়ফোনে না পেয়ে জেলা প্রশাসক মো ঃ সাবিরুল ইসলাম-র সাথে বিষয়টি সর্ম্পকে আলাপকালে তিনি বলেন, এবিষয়টি আমাকে কেউ অবগত করেনি । ওই সাংবাদিকগন যদি থানা পুলিশকে অবগত করে থাকে তাহলে পুলিশ বিষয়টি অবশ্যই খতিয়ে দেখবে । তারপরেও আমি ব্যাপারটি খোঁজ নিয়ে দেখব ।
সূত্র- cnbangladesh.com
সংবাদটি শেয়ার করুন