বিএনপির নীতি নির্ধারণী সর্বোচ্চ পর্ষদ জাতীয় স্থায়ী কমিটির ‘জরুরি’ বৈঠক ডেকেছেন দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, রোববার রাত সাড়ে ৮টায় গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এই বৈঠক হবে।
আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া এতিমখানা দুর্নীতি মামলার রায় সামনে রেখে শনিবার ঢাকায় জাতীয় নির্বাহী কমিটির চার শতাধিক সদস্যের সঙ্গে সভা করেন খালেদা জিয়া।
সেখানে তিনি নেতাকর্মীদের অভয় দেওয়ার পাশাপাশি ‘যে কোনো বিপদ মোকাবিলায়’ সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।
অন্যদিকে বৈঠকে উপস্থিত তৃণমূলের নেতারা বলেন, নির্বাচনের আগে ওই রায় খালেদা জিয়ার বিপক্ষে গেলে বিএনপিকে কর্মসূচি দিতেই হবে। তবে সেই আন্দোলনে কেন্দ্রীয় নেতাদেরও সক্রিয় করতে হবে।
এদিকে জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় ঘোষণার আগেই সিলেট গিয়ে হয়রত শাহজালাল (র.) ও হযরত শাহ পরান (র.) এর মাজার জিয়ারত করবেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। সোমবার সকাল সাড়ে ৮টায় তিনি সড়ক পথে সিলেটের উদ্দেশ্যে রওনা হবেন।
গত ৩১ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ১ ফেব্রুয়ারি জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ সিলেটে গিয়ে মাজার জিয়ারত করে জনসভায় যোগ দেওয়ার মাধ্যমে প্রাকনির্বাচনী প্রচার শুরু করেন।
খালেদা জিয়া সর্বশেষ সিলেটে গিয়েছিলেন দশম সংসদ নির্বাচনের আগে ২০১৩ সালের ৪ অক্টোবর। সে সময় আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে ২০ দলীয় জোটের জনসভায় বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসন, যদিও ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির ভোট বিএনপি বর্জন করে।
ভোটের প্রচার শুরুর জন্য খালেদা জিয়া সিলেট যাচ্ছেন কিনা জানতে চাইলে রিজভী বলেন, “বেগম খালেদা জিয়া একজন ধর্মপ্রাণ মানুষ, তিনি এদেশের একজন শ্রেষ্ঠ সুফী সাধকের মাজার জিয়ারতের উদ্দেশ্যে সিলেট যাচ্ছেন। অন্য কোনো উদ্দেশ্য নেই।”
নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনে রিজভী অভিযোগ করেন, সরকার বিরোধী দলকে দমনের জন্য ‘ভয়ের পরিবেশ’ সৃষ্টি করতে চাইছে। সেজন্যই ঢাকাসহ সারাদেশে ‘দুরন্তগতিতে’ গ্রেপ্তার অভিযান চালাচ্ছে।
আগের দিন হোটেল লো মেরিডিয়ানে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির বৈঠক চলাকালে অনুষ্ঠানস্থলের বাইরে থেকে দলের অন্তত ৩৫ জন নেতা-কর্মীকে গোয়েন্দা পুলিশ আটক করে নিয়ে যায় বলেও দাবি করেন রিজভী।
তিনি বলেন, “গত পাঁচ দিনের পাঁচ শতাধিক নেতা-কর্মীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। আমরা এহেন গণগ্রেপ্তারের নিন্দা জানাই এবং অবিলম্বে তাদের মুক্তি দাবি করছি।”
রিজভীর দাবি অনুযায়ী, বিএনপির ঢাকা মহানগর দক্ষিণের মো. সুমন, অমল, মো. জনি, সুমন, আবদুল মালেক, শামীম, আহমেদ হোসেন, আবদুর রহমান, লিপটন, আনিসুর রহমান, খোরশেদ, আবদুস সালাম, মোক্তার হোসেন, রতন বাবু, কফিল উদ্দিন, খোরশেদ, মোফাজ্জল, জুয়েল, বাবু, আবু তালেব, গুলজার হোসেন, জসিমউদ্দিন, হুমায়ুন কবির, তোফায়েল হোসেন, আব্দুর রহিম, হাজি লিটন, মহানগর উত্তরের তারিকুল আলম, তেনজিং, মো. বাবুল, সাইদুল ইসলাম শাহিন, জাকির হোসেন, দিলীপ, জীবন, নাসির, কুমিল্লার নুরুল ইসলাম, কামাল হোসেন, নারায়ণগঞ্জের সালাউদ্দিন, শামসুল আলম, লুৎফর রহমান, নাসিম, আলমগীর হোসেন, টিটু, মামুন, আনিস, সোহেল রয়েছেন গ্রেপ্তারদের মধ্যে।
এছাড়া বগুড়ার শিবপুর উপজেলা ময়দান হাট্টা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি শাহ আলম সুজা এবং সৈয়দপুর ইউনিয়ন এর সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামানকে গত ২৮ জানুয়ারি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে নিয়ে যাওয়ার পর থেকে তারা নিখোঁজ রয়েছেন বলে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিবের ভাষ্য।
সংবাদটি শেয়ার করুন