আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ করার জন্য বিএনপিকে ২৬ শর্তে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুমতি দেয় ঢাকা মহানগর পুলিশ। কিন্তু নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে গণসমাবেশ করতে অনড় বিএনপি।
এমন অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে বোরবার বিকালে ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল। এ সময় প্রতিনিধি দলের সদস্যরা ঢাকার গণসমাবেশের জন্য পুলিশের কাছে বিকল্প নতুন ভেন্যু চান।
নয়াপল্টন ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান বাদে নতুন ভেন্যু হিসেবে আরামবাগের প্রসঙ্গ ওঠে। পরে এ নিয়ে রাতে পুলিশের মতিঝিল বিভাগের ডিসির সঙ্গে রাজধানীর একটি হোটেলে বৈঠক করেন বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী।
এ প্রসঙ্গে এ্যানী রাত ৯টার দিকে বলেন, মতিঝিল বিভাগের ডিসির সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। আমরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গণসমাবেশ করতে নিরাপদ মনে করছি না। তাই নয়াপল্টনের কথা আবারও তাকে বলেছি। সোমবার তারা সিদ্ধান্ত জানাবেন বলে জানিয়েছেন।
এর আগে বিকালে ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপির প্রতিনিধি দল। এ দলে ছিলেন- ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান, দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী এবং সহসাংগঠনিক সম্পাদক বেনজির আহমেদ টিটু।
আলোচনা শেষে আমানউল্লাহ আমান বলেন, তারা প্রথম থেকেই নয়াপল্টনে সমাবেশ করার বিষয়ে বলে আসছেন। এ নিয়ে পুলিশের সঙ্গে একাধিকবার আলোচনাও হয়েছে। এর মধ্যে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার অনুমতি দিয়ে পুলিশ চিঠি দিয়েছে। তারা এ চিঠি দেওয়ার আগে যদি বিএনপির সঙ্গে আলোচনা করতেন তাহলে সৃষ্ট সংকট অনেকটা এড়ানো যেত। এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী ও পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে আলোচনা করে এ বিষয়ে ঠিক করতে বলা হয়েছে।
গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করছে দাবি করে আমান বলেন, দেশের বিভাগীয় শহরে ৯টি সমাবেশ করেছি। কোথাও কোনো ঝামেলা হয়নি। ঢাকায়ও হবে না। তারপরও গ্রেফতার করা হচ্ছে। এসব গ্রেফতার সমাবেশের জনসমুদ্র থামানোর জন্য করা হচ্ছে। রাজশাহীর সমাবেশ থেকে ফেরার পথে যুবদলের সভাপতি সালাহউদ্দিন টুকু ও সহসভাপতি নুরুল ইসলাম নয়নকে আমিনবাজারে ব্যারিকেড দিয়ে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা সবগুলো মামলায় জামিনে ছিলেন। পুরান ঢাকায় ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক সমাবেশের লিফলেট বিলি করছিলেন এ সময় তার ওপর হামলা হয়েছে। বিএনপি নেতাকর্মীদের মাঝে আতঙ্ক সৃষ্টি করতে এমন গ্রেফতার ও হামলা করা হচ্ছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ফারুক হোসেন বলেন, বৈঠকে বিএনপির প্রতিনিধি দল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পরিবর্তে নয়াপল্টনে সমাবেশ আয়োজনের ইচ্ছা প্রকাশ করে। জবাবে ডিএমপি কমিশনার জানান, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পাশাপাশি বিএনপি যদি ভিন্ন কোনো স্থানের সন্ধান পায় তাহলে বিষয়টি বিবেচনা করে দেখবে ডিএমপি।
তিনি আরও বলেন, নিরাপত্তার দৃষ্টিকোণ থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুমতি দেওয়া হয়েছে। বিএনপিকে অনুরোধ করেছি ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশটি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে করার জন্য। ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশকে কেন্দ্র করে যত ধরনের নিরাপত্তা সহযোগিতা করার দরকার সেই ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করব।
নতুন ভেন্যু খোঁজার প্রস্তাব কি বিএনপির পক্ষ থেকে এসেছে-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ডিএমপি নতুন কোনো ভেন্যুর প্রস্তাব দেয়নি। কারণ এরই মধ্যে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুমতি দেওয়া হয়েছে। বিএনপি প্রস্তাব দিয়েছে তাই তারা নতুন ভেন্যু খুঁজছে। আশা করি, বিএনপি তাদের সমাবেশটি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই করবে।
সংবাদটি শেয়ার করুন