তৈয়বুর রহমান (কালীগঞ্জ) গাজীপুর :
গাজীপুরের কালীগঞ্জে নানা অনিয়ম, দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত পুনসহি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ১২ ঘন্টা অবরুদ্ধ থাকার পর পদত্যাগ করেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম ইমাম রাজী টুলু ।
মঙ্গলবার উপজেলার জাঙ্গালিয়া এলাকার পুনসহি উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
পদত্যাগকারী প্রধান শিক্ষক মোঃ হারুনুর রশিদ মুন্সী ২০২১ সাল থেকে পুনসহী উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।
জানা গেছে, মঙ্গলবার সকাল দশটা থেকে রাত দশটায় পর্যন্ত পুনসহি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নানা অনিয়ম, দুর্নীতি, আর্থিক কেলেঙ্কারি সহ বহু অপরাধে অভিযুক্ত করে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের মাঠে একসাথে জড়ো হয়ে স্লোগান দিতে থাকে। এ সময় তারা প্রধান শিক্ষকের প্রত্যাহার দাবি করে। প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত তাকে বিদ্যালয়ে অবরুদ্ধ করে রাখারও ঘোষণা দেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। পরে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে রাত দশটার দিকে প্রধান শিক্ষক পদত্যাগ করেন।
বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী হাফিজুল ইসলাম জানান, প্রধান শিক্ষক শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে রশিদ বিহীন অতিরিক্ত অর্থ আদায় করেন। যার কোন হিসাব তিনি বিদ্যালয়ের আয় ব্যয়ের মধ্যে আনেননি। এছাড়াও তিনি ঠিকমতো ক্লাস নিতেন না। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ইউনিক আইডির কথা বলে ৫’শ টাকা করে নিলেও সে আইডি তিনি আর করেননি।
নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী তৃষা রানী চন্দ্র বলেন, আমাদের প্রধান শিক্ষক একজন চরিত্রহীন লম্পট। তিনি কারণে-অকারণে আমাদের গায়ে হাত দেন। গায়ে হাত দেওয়ার জন্য তিনি সবসময় সুযোগ খুঁজতে থাকেন। ইনিয়ে বিনিয়ে মেয়েদের হাতে হাত রেখে কথা বলেন। এ বিষয়ে প্রতিবাদ করতে গেলে তিনি স্কুল থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দিতেন।
আরেক শিক্ষার্থী সুমনা রানী জানান, আজ থেকে বছর দেড়েক আগে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের জন্য দেয়া উপহার ডিজিটাল ডিভাইস ট্যাব আত্মসাৎ করেন। পরে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মিথিলা তার ওর জন্য বরাদ্দকৃত ট্যাব চাইতে গেলে তাকে তিনি টিসি দিয়ে বের করে দেন।
অবরুদ্ধ থাকা প্রধান শিক্ষক বলেন, শিক্ষার্থীরা স্থানীয় কিছু লোকজনের ইন্ধনে আমাকে জোর করে পদত্যাগ করতে বাধ্য করেছে। গ্রামের অসাধু একটি চক্র আমাকে এই বিদ্যালয়ে রাখতে চায় না। কারণ আমি থাকলে তাদের অন্যায় কাজ তারা করতে পারতো না।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নুরই জান্নাত বলেন, অবরুদ্ধ থাকা অবস্থায় প্রধান শিক্ষক আমার সাথে যোগাযোগ করলে আমি তাকে চলে আসতে বলি। শিক্ষার্থীরা তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করলে বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বলেন, মঙ্গলবার বিকেলে পুনসহি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা লিখিত অভিযোগ নিয়ে আমার কাছে এসেছিল। আমি তাদের সাথে ব্যক্তিগতভাবে কথা বলেছি। যেহেতু তিনি পদত্যাগ করেছেন, সেহেতু তার ব্যাপারে আনীত অভিযোগগুলো তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সংবাদটি শেয়ার করুন