২৫শে জানুয়ারি ২০২১ ইং | ১১ই মাঘ ১৪২৭ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৭:২৩ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ২৭, ২০১৬
এসবিএন ডেস্কঃ একাত্তরের ২৫ মার্চ কালরাতে বর্বর পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী বাংলাদেশে যে গণহত্যা চালিয়ে তা পৃথিবীতে বিরল। এমন বর্বর এবং নৃশংস ঘটনার আর কোন উদাহরণ নেই।
পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ৩০ লাখ মানুষকে হত্যা করেছে এবং ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জত লুন্ঠন করেছে। গণহত্যার শিকার বীর বাঙালীদের গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করলেন নিউইয়র্কের বাংলাদেশীরা।
ভয়াল কাল রাতের সেই গণহত্যার প্রতিশোধ স্পৃহায় মুক্তির সংগ্রামে শামিল হয়ে বীর বাঙালী ঝাঁপিয়ে পড়েছিল মুক্তি সংগ্রামে। ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে হানাদার পাক বাহিনীকে পরাজিত করে বাংলার দামাল মুক্তিযোদ্ধারা ছিনিয়ে এনেছিল স্বাধীনতার লাল সূর্য।
একাত্তরের বিভীষিকাময় সেই ভয়াল রাতের স্মরণে এবং মহান বিজয় বিজয় দিবস উপলক্ষে ‘জেনোসাইড ৭১ ফাউন্ডেশন, ইউএসএ জ্যাকসন হাইটসের পালকি পার্টি সেন্টারে ২৫ মার্চ (নিউইয়র্ক সময়) শুক্রবার রাতে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে রাত ১২টা ১ মিনিটে আধাঁরে নিমজ্জিত কক্ষে মোমবাতি জ্বেলে কালরাতকে স্মরণ করা হয়। নিউইয়র্কে বসবাসরত একাত্তরের রণাঙ্গণের বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ প্রগতিশীল মুক্তচিন্তার মানুষেরা এতে অংশ নেন।
এর আগে সন্ধ্যা থেকে কালরাতের গণহত্যার শিকার বীর বাঙালী এবং মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের স্মরণ করেন অনুষ্ঠানে যোগ দেয়া বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ।
এ অনুষ্ঠানে ২৫ মার্চকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস ঘোষণার দাবি জানানো হয়। সরকারের পক্ষ থেকে যাতে জাতিসংঘে এই দাবি উত্থাপন করা হয় তা তুলে ধরলেন ড. প্রদীপ রঞ্জন কর।
আবৃত্তিকার জিএইচ আরজুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের শুরুতে নিহতদের স্মরণে প্রার্থণা সঙ্গীত পরিবেশন করেন জলি কর। এরপর স্বাগত বক্তব্য দেন জেনোসাইড ৭১’-এর সভাপতি ড. প্রদীপ রঞ্জন কর। অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণমূলক বক্তব্যের পাশাপাশি ছিল গান ও কবিতা।
অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধের গান পরিবেশন করেন সঙ্গীত পরিষদের শিল্পীরা। পরিচালনায় ছিলেন সঙ্গীত পরিষদের সভাপতি কাবেরী দাশ। কবিতা আবৃত্তি করেন আবীর আলমগীর, মুমু আনসারী, সেমন্তী ওয়াহেদ, পারভীন সুলতানা, শুক্লা রায় প্রমুখ। প্রার্থনা সঙ্গীত পরিবেশন করেন সুব্রত দত্ত।
আলোচনায় অংশ নেন বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা খান মেরাজ, খুরশীদ আনোয়ার বাবলু, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রহিম বাদশা, পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদের নেতা কৃষিবিদ আশরাফুজ্জামান, আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের সভাপতি মোর্শদা জামান, প্রকৌশলী আশরাফুল হক, ওয়ার্ল্ড হিউম্যান রাইটসের সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেন, বঙ্গমাতা পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক সিরাজ উদ্দিন আহমেদ সোহাগ, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি নিউইয়র্ক চ্যাপ্টারের সাধারণ সম্পাদক স্বীকৃতি বড়ুয়া প্রমূখ।
অনুষ্ঠানে ‘জেনোসাইড’ শীর্ষক এক সেমিনারের আয়োজন করা হয়। এতে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন জেনোসাইড ৭১’র সভাপতি ড. প্রদীপ রঞ্জন কর।
আলোচনায় অংশ নেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মাসুদ বিন মোমেন, নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল মো. শামীম আহসান, ঠিকানার প্রধান সম্পাদক মুহাম্মদ ফজলুর রহমান প্রমূখ।
মূল প্রবন্ধে ড. প্রদীপ রঞ্জন কর একাত্তরের গণহত্যার ইতিহাস তুলে ধরার পাশাপাশি দেশে দেশে গণহত্যা, বাংলাদেশে গণহত্যা, গণহত্যার পাশাপাশি ধর্ষণ ও নারী নির্যাতন, বাঙালীদের ওপর পাক সেনাদের নির্যাতনের নমুনা, বীরঙ্গণা নারী, গণহত্যা নিয়ে নিরবতা, পাকিস্তানীদের গণহত্যা অস্বীকারসহ নানান বিষয় তুলে ধরেন। পাশাপাশি বেশকিছু প্রস্তাবনা পেশ করে।
এসবের মধ্যে রয়েছেন গণহত্যাকারীদের বিচার ও গণহত্যা রোধে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে জনমত সংগঠিত করা, একাত্তরে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর চিহ্নিত ১৯৫ যুদ্ধাপরাধীর বিচার, বিশ্ব শান্তি ও মানবতার বোধের প্রতি বিশ্বের সকল জাতি জাতি ও রাষ্ট্রকে দায়বদ্ধ থাকা, মানব ইতিহাসে যত গণহত্যা হয়েছে এর মধ্যে বাংলাদেশের ১৯৭১’র গণহত্যা স্বপ্লতম সময়ে সর্ববৃহৎ।
তাই ২৫ মার্চকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসাবে ঘোষণার দাবি জানানো হয়।
চবি এলামনাই এসোসিয়েশন
এদিকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েশনও স্বাধীনতা দিবস পালন করেছে।
গত ২৫ মার্চ জ্যাকজন হাইটসের হাট বাজার মিলনায়তনে আয়োজন করা হয় আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের। সংগঠনের সভাপতি প্রফেসর কাজী মোহাম্মদ ইসমাইলের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এমলাক হোসেন ফয়সালের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট সাংবাদিক মনজুর আহমেদ, কলামিস্ট ডা. মিনা ফারহা, সাংবাদিক আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, মঈনুদ্দীন নাসের, মাহমুদ খান তাসের, ড. আবুল কাশেম, ডা. ফজলুল হক, শাহ নেওয়াজ, মাহতাব উদ্দিন আহমেদ, এটর্নী আব্দুল আজিজ, প্রফেসর নুরুল ইসলাম প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক ইমরান আনসারী, হেলাল উদ্দিন, মোহাম্মদ ইমতিয়াজ, সাংবাদিক জয়নাল আবেদীন, শাহ নেওয়াজ প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, আমরা একটি মানচিত্র এবং ভূখন্ড পেয়েছি কিন্তু এখনো প্রকৃত স্বাধীনতা পাইনি। বরং আমরা পাকিস্তানী দালালি থেকে মুক্ত হয়ে এখন ভারতের দালালে পরিণত হয়েছি।
তারা বলেন, আমরা এখনো গণতন্ত্র পাইনি, অর্থনৈতিক মুক্তি পাইনি, বৈষম্য দূর হয়নি। অথচ এটাই ছিলো আমাদের স্বাধীনতার মূল চেতনা।
Corporate Office:
6/A Eskatan Garden
Dhaka, Bangladesh.
Mobile: 017111-66826
Email: mansoumit@yahoo.com
Helpline - +88 01719305766