India's Sachin Tendulkar celebrates after he scored his 100th international century during their Asia Cup one- day international (ODI) cricket match against Bangladesh in Dhaka March 16, 2012. REUTERS/Andrew Biraj (BANGLADESH - Tags: SPORT CRICKET)
এসবিএন ডেস্ক: ৩০৯ রান কি একটু কম হয়ে গেল? ভারতের ইনিংসের পরই প্রশ্নটা জেগে উঠেছিল। টি-টোয়েন্টির যুগ, রূপ বদলে ওয়াকার ব্যাটিং পিচ বনে যাওয়া, তার ওপর অস্ট্রেলিয়ার ফর্ম—সব মিলিয়ে ভারতের ৩০৯-এর পুঁজিও খুব একটা ভরসা জোগাচ্ছিল না। শেষ পর্যন্ত ভারতীয় সমর্থকদের শঙ্কাটাই সত্যি হলো। বেশ সহজেই সিরিজের প্রথম ম্যাচটা ৫ উইকেটে জিতে নিল অস্ট্রেলিয়া।
রেকর্ড অবশ্য ভারতকে ভরসাও জোগাচ্ছিল। যতই ক্রিকেট আগের চেয়ে আক্রমণাত্মক হয়ে উঠুক, ওয়ানডেতে এখনো ‘৩০০’ চ্যালেঞ্জিং স্কোর। বিশেষ করে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে। এর আগে ক্যাঙারুদের দেশে তিন শর বেশি তাড়া করে জয় এসেছিল মাত্র পাঁচটি। এর একটিও ওয়াকাতে নয়। তিন শ দূরে থাক, ওয়াকাতে ২৫০-এর বেশিই তাড়া করে জয়ের নজিরই ছিল মাত্র চারটি। পরে ব্যাটিং করে জয়ের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি রানের রেকর্ড সেই ১৯৮৭ সালে, পাকিস্তানের ২৭৪।
তবে এই সংখ্যাগুলোকে শুধুই ভারতের দীর্ঘশ্বাস বানিয়ে দিল অস্ট্রেলিয়া। আরও নির্দিষ্ট করে বললে অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ ও জর্জ বেইলি। ভারতের হয়ে বিরাট কোহলি ও রোহিত শর্মা যা করেছিলেন, ঠিক সেটাই আরও একটু ভালোভাবে করলেন এই দুজন। তৃতীয় উইকেটে গড়লেন ২৪২ রানের জুটি। এই প্রথম ওয়ানডেতে একই ম্যাচে দুবার জুটির ‘ডাবল সেঞ্চুরি’ হলো। সেই রেকর্ডে ভাগ বসানোই সার কোহলি-রোহিদের। হাসি তো শেষ পর্যন্ত স্মিথ-বেইলির মুখেই।
ওয়ানডেতে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে চতুর্থ সর্বোচ্চ রানের জুটি গড়ে অনায়াস জয় এনে দিলেন এই দুজন। অস্ট্রেলিয়া চার বল বাকি থাকতে জিতেছে বটে, কিন্তু ম্যাচে একবারও মনে হয়নি অস্ট্রেলিয়া হারতে পারে।
না, মনে হয়েছিল। শুরুর দিকে। ‘ভারতের মুস্তাফিজ’ বারিন্দর স্রানের আলোচিত অভিষেক হয়ে গেল। নিজের দ্বিতীয় ও ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই স্রান তুলে নিলেন ওপেনার অ্যারন ফিঞ্চকে। পরের ওভারে এসে ডেভিড ওয়ার্নারকেও। ২১ রানেই নেই অস্ট্রেলিয়ার দুই ওপেনার।
কিন্তু এর পর ম্যাচ যত গড়িয়েছে, ভারতের হাসি ততই উবে গেছে। অস্ট্রেলিয়াকে পথ দেখিয়ে নিয়ে গেলেন স্মিথ-বেইলি। ডাবল সেঞ্চুরি জুটিতে সেঞ্চুরি পেয়েছেন দুজনই। বেইলি ১২০ বলে ১১২ করে যখন আউট হয়েছেন, তখনই আর জয়ের জন্য মাত্র ৪৬ রান বাকি অস্ট্রেলিয়ার। সেখান থেকে প্রায় পুরো পথটা নির্বিঘ্নে পাড়ি দিচ্ছিলেন স্মিথ। প্রায় বলতে হচ্ছে, কারণ জয় থেকে দুই রান দূরে থাকতে ব্যক্তিগত ১৪৯ রানে আউট হয়ে গেছেন অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক।
দেড়শ রানের মাইলফলক তো মিস হয়েছেই, ব্যক্তিগত একটা রেকর্ডও হাতছাড়া হয়ে গেছে স্মিথের। রান তাড়া করতে নেমে ১৫০-এর বেশি স্কোর অধিনায়কদের মধ্যে আছে কেবল অ্যান্ড্রু স্ট্রাউসের। ভারতেরই বিপক্ষে তখনকার ইংল্যান্ড অধিনায়ক করেছিলেন ১৫৮। একটুর জন্য সেখানে নাম উঠল না স্মিথের। তাতে কী, জয়ের হাসি তো তাঁর মুখেই।
গত বছরও প্রথম ম্যাচে রোহিতের সেঞ্চুরি এবং দলের হার দিয়ে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজ শুরু করেছিল ভারত। সেটির পুনরাবৃত্তি হলো আজ। তবে ভারত নিশ্চয়ই চাইবে না সিরিজের ফলের পুনরাবৃত্তিও হোক!
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ভারত: ৫০ ওভারে ৩ উইকেটে ৩০৯ (রোহিত ১৭১*, কোহলি ৯১; ফকনার ২/৬০)
অস্ট্রেলিয়া: ৪৯.২ ওভারে ৫ উইকেটে ৩১০ (স্মিথ ১৪৯, বেইলি ১১২; স্রান ৩/৫৬, অশ্বিন ২/৬৮)
ফল: অস্ট্রেলিয়া ৫ উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: স্টিভেন স্মিথ
সংবাদটি শেয়ার করুন