সিনিয়র রিপোর্টারঃ
এবারের ঈদুল ফিতরের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নববর্ষ, সঙ্গে সপ্তাহিক ছুটিও। ফলে টানা ছয় দিনের ছুটির ফাঁদে পড়েছে দেশ।
টানা বন্ধে চাকরিজীবীদের মাঝে খুশির আমেজ বাড়লেও হতাশ কক্সবাজারের পর্যটন সংশ্লিষ্টরা। কারণ, ছয়দিনের ছুটির প্রথম দুদিন এক প্রকার পর্যটক শূন্যই গেছে।
তবে ঈদের দিন থেকে পর্যটকের ঢল নেমেছে কক্সবাজার পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে। তাছাড়া আজ শুক্রবার (১২ এপ্রিল) গরম উপেক্ষা করে বিপুল পর্যটক সমাগম হয়েছে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে। সেখানে তিলধারণেরও যেন ঠাঁই নেই। আগামীকালও এ ধারা অব্যাহত থাকবে বলে প্রত্যাশা করছেন পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।
এদিকে পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে তিনদিনের বৈশাখী মেলার আয়োজন করছে পর্যটন জোনের তারকা হোটেল ওশান প্যারাডাইস লিমিটেড কর্তৃপক্ষ। পার্কিং এলাকায় নাগরদোলা, লবিতে বৈশাখী মেলার নানা স্টল বসছে।
বৈশাখী সাজে সাজানো হয়েছে হোটেলে পার্কিং এলাকাসহ চারপাশ। বিনোদনে থাকছে জলের গান শিল্পী গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানা আয়োজন।
কক্সবাজার হোটেল-গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার বলেন, ‘এবারের রমজানের মাঝামাঝি সময় হতেই তীব্র তাপদাহ চলছে। ফলে অন্য সময়ের রমজানের চেয়ে পর্যটক শূন্যতায় ছিল কক্সবাজার।
তাছাড় ঈদের ছুটির প্রথম দুদিনে তেমন কোনো কোলাহল ছিল না বলা যায়। ফলে হোটেল-মোটেল, রেস্তোরাঁ ও পর্যটক নির্ভর ব্যবসা-বাণিজ্যে অচলাবস্থা ছিল। কিন্তু ঈদের পর থেকে পর্যটন এলাকায় জনসমাগম বেড়েছে।
গরম উপেক্ষা করেই বেলাভূমিতে আছে লোকজন। এ ধারা আরও দুদিন অব্যাহত থাকবে বলে মনে হচ্ছে।’
কক্সবাজার রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম ডালিম বলেন, ‘রমাজানের পর পর্যটক বরণে নগরীর আবাসান ও খাবারের ঘরগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়। প্রস্তুতি নেয় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী-হকাররাও।
মাস দেড়েক ধরে সুনসান নিরবতায় থাকা সৈকতজুড়ে কোলাহল মুখর পরিবেশের আশায় সবার পূর্ব প্রস্তুতি ছিল উল্লেখ করার মতো। কিন্তু পূর্বের সেই আশা পূরণ না হলেও শুক্রবার উল্লেখ করার মতো পর্যটক এসেছে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে।’
ট্যুর অপারেটর এসোসিয়েশন অব কক্সবাজার (টুয়াক) সভাপতি তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘কক্সবাজারে ৫ শতাধিক হোটেল-মোটেল, গেস্ট হাউস ও রিসোর্টে প্রায় দেড় লাখের মতো পর্যটক থাকার ব্যবস্থা রয়েছে।
রোজা শেষ হওয়ার আগে ১২-১৩ এপ্রিলের জন্য ৮০-৯০ শতাংশ রুম বুকিং হয়েছিল। টানা বন্ধ হলেও এ দুদিন একটু বেশি চাপ থাকবে বলে আশা করছি। তবে পহেলা বৈশাখেও পর্যটক উপস্থিতি মোটামুটি থাকবে বলে আশা করা যায়। সব মিলিয়ে এ তিন দিনে কয়েক লাখ পর্যটক আসতে পারে।’
তারকা হোটেল ওশান প্যারাডাইস লিমিটেডের পরিচালক আবদুল কাদের মিশু বলেন, ‘পর্যটন সেবায় আমাদের যাত্রার পর হতেই ইংরেজি ও বাংলা নববর্ষ উদযাপনে বর্ণিল আয়োজন করে থাকি।
করোনা ও রোজার মাঝে পড়ায় গত কয়েক বছর বাংলা নববর্ষ বরণে অনুষ্ঠান বন্ধ ছিল। কিন্তু এবার পুরোনো ঐতিহ্য ধরে বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে পহেলা বৈশাখ থেকে তিনদিনের মেলার আয়োজন করেছি। বাঙালিয়ানা ষোলআনা পূর্ণ করতে জলের গান ব্যান্ডদলসহ নানা আয়োজন থাকছে মেলায়।’
কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ বলেন, ‘পর্যটকের নিরাপত্তা ও সেবায় সৈকত এবং পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে সার্বক্ষণিক টহল রয়েছে। ঈদের ছুটিতে ব্যাপক পর্যটক সমাগমের কথা মাথায় রেখে সব ধরণের প্রস্তুতি নেওয়া রয়েছে।
সৈকতে পর্যটকদের ওয়ান-স্টপ সার্ভিস চালু করেছি আমরা। বিপদাপন্ন কোনো পর্যটক একটি বাটন টিপেই সেবা নিশ্চিত করতে পারবেন।’