চিরকুটে বাবাকে ‘রেপিস্ট’ লেখা সানজানার মৃত্যু আত্মহত্যায়

প্রকাশিত: ৭:৩৪ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৯, ২০২৩

চিরকুটে বাবাকে ‘রেপিস্ট’ লেখা সানজানার মৃত্যু আত্মহত্যায়
সদরুল আইন, নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
রাজধানীর দক্ষিণখানে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সানজানা মোসাদ্দিকার মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা মামলার তদন্তে বেশ অগ্রগতি হয়েছে।
তালাকের পরও মায়ের সঙ্গে বাবার সম্পর্ক মেনে নিতে না পারা, পড়ালেখার খরচ না পাওয়াসহ পারিবারিক নানা সমস্যার কারণে সানজানা আত্মহত্যা করেছে বলে পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে।
গত বছরের ২৭ আগস্ট ঢাকার দক্ষিণখানের মোল্লারটেক এলাকায় ১০তলা ভবনের নিচ থেকে সানজানাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে উত্তরার একটি হাসপাতালে নেয়া হয়।
সেখান থেকে পঙ্গু হাসপাতালে নেয়া হলেও তাকে বাঁচানো যায়নি। সানজানার মৃত্যুর পর তার মা বাবা শাহীনকে অভিযুক্ত করে মামলা করেন। ওই মামলায় গ্রেপ্তার করা হয় শাহীনকে। পরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। বর্তমানে শাহীন জামিনে রয়েছেন।
সানজানার মৃত্যুর পর বাবাকে অভিযুক্ত করে লেখা একটি চিরকুট পায় পুলিশ। চিরকুটে বাবাকে ‘রেপিস্ট’, যার কাছে ‘কাজের মেয়েও রেহাই পায়নি’ বলে উল্লেখ ছিল।
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগের সপ্তম সেমিস্টারের শিক্ষার্থী সানজানার মৃত্যু নিয়ে নানা প্রশ্ন ওঠার পাশাপাশি চিরকুট নিয়ে তৈরি হয় ধোঁয়াশা। সানাজানাকে হত্যা করার অভিযোগও তোলেন সহপাঠীরা।
তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মামলার তদন্ত কাজ বেশ এগিয়েছে। সানজানার মৃত্যুর পর যে চিরকুটটি পাওয়া গিয়েছিল সেটি তার নিজেরই লেখা। ডিএনএ রিপোর্ট এবং পোস্টমর্টেম রিপোর্ট পাওয়ার পর আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করবে পুলিশ।
দক্ষিণখান থানার এসআই রেজিয়া খাতুন বলেন, সানজানার লিখে যাওয়া চিরকুটের বিশেষজ্ঞ মত পাওয়া গেছে। চিরকুটটি সানজানার নিজের হাতেই লেখা। ডিএনএ এবং পোস্টমর্টেম প্রতিবেদন পেলেই মামলার কার্যক্রম শেষ হবে।
তিনি বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে সানজানার বাবা শাহীন জানিয়েছেন, ঘটনার দিন সকালে তাদের মধ্যে ঝগড়া হওয়ার কথা। আর চিঠিতেও তো লেখা আছে, সানজানার বাবা রেপিস্ট। কাজের মেয়েকেও ছাড় দেয়নি।
আর মায়ের সঙ্গে তো বাবার তালাক হয়েছিল। এরপরও বাসায় শাহীন আসা যাওয়া করত; যা মেয়ে হিসেবে মেনে নিতে পারেনি সানজানা। সব মিলিয়েই সানজানা আত্মহত্যা করেছেন।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, মায়ের সঙ্গে বাবার বিচ্ছেদ থেকে শুরু করে পারিবারিক নানা সমস্যায় মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন সানজানা। বিশেষ করে বাবা-মায়ের মধ্যে বনিবনা না হওয়া, বাবার দ্বিতীয় বিয়ে, অভাব-অনটন এবং পড়াশোনার খরচ ঠিক মতো না পাওয়া তাকে কঠিন বাস্তবতার মুখে ফেলেছিল।
স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পরও তার বাসায় আসা-যাওয়া ছিল শাহীনের। বাবা-মায়ের এমন সম্পর্ক মেয়ে হিসেবে মানতে পারেননি সানজানা। কারণ, সানজানার ইচ্ছার কারণেই তার মা ডিভোর্স নিয়েছিলেন।
এসব কারণেই চিরকুটে বাবাকে ‘রেপিস্ট’ ও ‘অত্যাচারী’ বলে লিখেছেন সানজানা বলে ধারণা তদন্তকারীদের।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

লাইভ রেডিও

Calendar

March 2024
S M T W T F S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31