‘তরুণদের জন্য বিনিয়োগ না হলে সংকটে পরবে বাংলাদেশ’

প্রকাশিত: ৪:৫৫ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১৮

‘তরুণদের জন্য বিনিয়োগ না হলে সংকটে পরবে বাংলাদেশ’

২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ঢাকা, একশনএইড বাংলাদেশঃ  তরুণদের শিক্ষা, দক্ষতা ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধিতে বিনিয়োগ না হলে ২০৪১ সালের পর মারাত্মক আর্থ-সামাজিক সমস্যায় পরবে বাংলাদেশ। একইসঙ্গে মধ্যম আয়ের দেশে পৌঁছানো ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনও সম্ভব হবে না বাংলাদেশের পক্ষে।

এমন মতামত দিয়ে বাংলাদেশের তরুণদের নিয়ে কাজ করা নীতি নির্ধারক, গবেষক, উন্নয়ন সহযোগিরা বলেছেন, মোট জনগোষ্ঠীর অর্ধেক তরুণ হওয়ায় বাংলাদেশ একটি সুবিধাজনক অবস্থানে আছে। তবে ২০৪১ সালের পর বর্তমানের তরুণরা কর্মক্ষমতা হারাবে। তাই তরুণদের শিক্ষার মান, কর্মদক্ষতা ও কর্মক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য বিনিয়োগ বাড়াতেই হবে। তবে সেই বিনিয়োগ এখনও আশাব্যঞ্জক নয়। কারণ চলমান এবং গত কয়েক বছরের বাজেটে দেখা গেছে, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের বাজেট বরাদ্দ মোট বাজেটের এক শতাংশেরও কম।

মঙ্গলবার ঢাকার গুলশানের একটি হোটেলে “তরুণদের জন্য বিনিয়োগ” শিরোনামে দু’দিনব্যাপি যুবা সম্মেলনের উদ্ভোধনী অনুষ্ঠানে এমন তথ্য ও বক্তব্য উঠে আসে। অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে একশনএইড বাংলাদেশ।

একশনএইড বাংলাদেশ গেল প্রায় একদশক ধরে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় তরুণদের উন্নয়নে কাজ করছে। কাজ করতে গিয়ে তরুণের সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে গবেষণা ও নানা প্রতিবেদনও তৈরি করেছে প্রতিষ্ঠানটি। এই কাজের প্রেক্ষাপটে তরুণদের নেতৃত্ব ও দক্ষতা বৃদ্ধিতে সম্মেলনে একটি ‘উন্নয়ন সহায়িকা’ প্রকাশ করে প্রতিষ্ঠানটি। যেখানে তরুণদের সমস্যা ও সম্ভাবনার বিষয়গুলোও উঠে এসেছে।

একশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ্ কবির বলেন, “বাংলাদেশের প্রায় অর্ধেক মানুষ এখন বয়সে তরুণ। এদেশের যেকোন পরিস্থিতির উন্নতির কথাই আমরা বলি না কেন, তরুণদের লাগবেই। তারা যদি দক্ষ ও যোগ্য না হয় তাহলে আমাদের দেশের উন্নয়নে যথাযথ ভূমিকা রাখতে পারবে না। তাই তরুণদের কথা শুনতে হবে। জানতে হবে তরুণদের চিন্তা-ভাবনা। বিনিয়োগ করতে হবে তরুণদের জন্য।”

এনজিও বিষয়ক ব্যুরোর মহাপরিচালক আবদুস সালাম বলেন, “বাংলাদেশে তরুণ মানুষের সংখ্যা বেশি। এদের কাজে লাগাতে না পারলে আমরা যে সম্ভাবনা ও উন্নয়নের কথা বলছি তা হবে না। মধ্যম আয়ের দেশ কিংবা টেকসই উন্নয়ণ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে তরুণদের সাথে নিয়ে কাজ করতেই হবে। যে কারণে তরুণদের দক্ষতা বৃদ্ধি করতে হবেই। বাড়াতে হবে বিনিয়োগ।”

একশনএইড বাংলাদেশ, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কাজ করতে গিয়ে দেখেছে, এদেশের তরুণদের প্রধান সমস্যাগুলো হলো, যুগপোযোগি শিক্ষার অভাব, কারিগরী ও প্রযুক্তিগত দক্ষতার অভাব ও কাজের জন্য যে দক্ষতা দরকার তা না থাকা। এই বিষয়গুলো জাতীয় পর্যায়ে নিয়ে আসতেই এই সম্মেলনের আয়োজন করে প্রতিষ্ঠানটি।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রী ড. বীরেন শিকদার বলেন, “যদি তরুণদের নিয়ে আমরা কাজ করতে না পারি তাহলে বাংলাদেশ কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবে না। তরুণরাই পারবে স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে, তার কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছে দিতে। আমরা এসডিজি অর্জন করবো নির্দিষ্ট সময়ের আগেই যদি তরুণদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত হয়।”

তিনি আরো বলেন, “তরুণরাই সবকিছু করেছে এদেশে। তরুণ জনগোষ্ঠীর যে সুবিধা তা আমরা ২০৪১ সাল পর্যন্ত পাবো। তাই এর সুফল পাওয়ার জন্য আমাদের সকলকে সুযোগ দিতে হবে। ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ বিনির্মাণ, এসডিজি অর্জন এবং বাংলাদেশকে কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে তরুণদের দায়িত্ব পালনের জন্য তৈরি করতে হবে”।

অনুষ্ঠানে ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ক্লাইমেইট চেইঞ্জ এন্ড ডেভেলপমেন্ট-এর পরিচালক সালিমুল হক বলেন, “দুর্যোগ ও জলবায়ু পরিবর্তনসহ বাংলাদেশ নানা সমস্যার একটি দেশে। আবার তরুণদের কারণে অপার সম্ভাবনারও দেশ। যথাযথ বিনিয়োগের মাধ্যমে এদেশের তরুণদের কর্মদক্ষ করতে পারলে বাংলাদেশ যেকোন সমস্যা মোকাবেলা করতে পারবে। আর তরুণদের দায়িত্ব হলো, জলবায়ু পরিবর্তনসহ কোথায় কি রকম সমস্যা হচ্ছে তার খোঁজ খবর রাখা। ”

ডেনমার্ক সরকারের উন্নয়ন সহযোগি সংস্থা ডানিডা, বাংলাদেশ প্রধান পিটার বোঘ জেনসেন বলেন, “বাংলাদেশকে তরুণদের উন্নয়নে কাজ করতেই হবে। সেকারণে আমরাও বাংলাদেশের যুবাদের উন্নয়নে কাজ করছি।”

তরুণদের উন্নয়নে তাদের প্রতি বিনিয়োগ বাড়ানোর বিষয় নিয়ে দু’দিনব্যাপি এই সম্মেলনের আয়োজন। যেখানে কর্মসংস্থান, দক্ষতা উন্নয়ন, জীবিকা এবং প্রযুক্তিসহ তরুণদেও জন্য প্রয়োজনীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। তরুনদের নিয়ে কাজ করছেন সরকারের নীত-নির্ধারক, গবেষক, উন্নয়ন সহযোগি, শিক্ষক, ব্যবসায়ী ও দেশের বিভিন্ন প্রান্তের তরুণরা এতে অংশ নিচ্ছেন।-বিজ্ঞপ্তি

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

লাইভ রেডিও

Calendar

May 2024
S M T W T F S
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031