৩য় বার রপ্তানি আয় ৪ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল

প্রকাশিত: ৭:০৪ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৩, ২০২১

৩য় বার রপ্তানি আয় ৪ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল

 

 

সিনিয়র প্রতিবেদকঃ বাংলাদেশের ইতিহাসে এ নিয়ে তৃতীয় বারের মতো একক মাসে রপ্তানি আয় ৪ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল। এর আগে অক্টোবর মাসে রেকর্ড ৪ দশমিক ৭২ বিলিয়ন ডলার ও সেপ্টেম্বর মাসে ৪ দশমিক ১৬ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয় দেশে আসে।

 

 

নভেম্বর মাসে বাংলাদেশ থেকে ৪ দশমিক ০৪ বিলিয়ন ডলার সমমূল্যের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। কোভিড মহামারির কারণে মারাত্মক পতনের মুখে পড়া যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের অর্থনীতি পুনরায় চালু হওয়ার কারণে তৈরি পোশাকের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় রপ্তানি খাতের এই চাঙ্গা ভাব অব্যাহত আছে।

 

 

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুসারে, নভেম্বরের রপ্তানি আয় গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩১ দশমিক ২৫ শতাংশ বেশি, যা সরকার নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রাকেও ছাড়িয়ে গেছে।

 

 

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিশ্ববাজারে বাংলাদেশে উৎপাদিত পোশাকের চাহিদা বেড়ে যাওয়ার কারণে গত কয়েক মাস ধরে রপ্তানির এই ঊর্ধ্বমুখী ধারা বজায় আছে। এ ক্ষেত্রে এককভাবে তৈরি পোশাক খাতের অবদান প্রায় ৮৫ শতাংশ।

 

 

জুলাই থেকে নভেম্বরের মধ্যে পোশাক রপ্তানি ২২ দশমিক ৯৭ শতাংশ বেড়ে ১৫ দশমিক ৮৫ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। এর মধ্যে ৮ দশমিক ৯৮ বিলিয়ন ডলার এসেছে নিটওয়্যার পণ্য (গেঞ্জি, টি-শার্ট) রপ্তানি থেকে। যার প্রবৃদ্ধি ২৫ দশমিক ৯১ শতাংশ। বাকি ৬ দশমিক ৮৭ বিলিয়ন ডলার এসেছে ওভেন পণ্য রপ্তানি থেকে। এর প্রবৃদ্ধি ১৯ দশমিক ৩২ শতাংশ।

 

 

তৈরি পোশাক শিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান জানান, পোশাক সামগ্রীর রপ্তানি বাড়তে শুরু করেছে গত সেপ্টেম্বর থেকে।

 

তিনি বলেন, ‘গার্মেন্টস পণ্যের চালান আগামী জানুয়ারি পর্যন্ত বাড়ন্ত থাকবে। কারণ এর মধ্যে আমরা বিভিন্ন খুচরা ক্রেতা ও ব্র্যান্ডগুলোর কাছ থেকে বাড়তি কার্যাদেশ বুক করেছি।

 

 

বিজিএমইএ সভাপতির আশাবাদ, চলতি অর্থবছরের শেষে গার্মেন্টস পণ্য রপ্তানি গত অর্থবছরের তুলনায় অন্তত ৩০ শতাংশ বাড়বে।কম্পিটিটিভ প্রাইস অফারের কারণে ভারত, চীন, ভিয়েতনাম, মিয়ানমার ও ইথিওপিয়ার মতো দেশগুলো থেকে অর্ডার স্থানান্তরিত হওয়ায় গত বছরজুড়ে বাংলাদেশের স্থানীয় সরবরাহকারীরা ২০ শতাংশ বেশি কার্যাদেশ পেয়েছেন।

 

 

সামগ্রিকভাবে জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত ১৯ দশমিক ৭৯ ডলার সমমূল্যের পণ্য রপ্তানি হয়েছে, যা ২৪ দশমিক ২৯ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে হিমায়িত ও জীবন্ত মাছের চালান ২৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ বেড়ে ২৮৬ দশমিক ৮৫ মিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। কৃষিজাত পণ্য ও সবজি রপ্তানি ২৪ দশমিক ৩৭ শতাংশ বেড়ে ৫৫৬ দশমিক ৫৬ মিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।

 

 

এ ছাড়া, ফার্মাসিউটিক্যালস পণ্য রপ্তানি হয়েছে ৯০ দশমিক ৬১ মিলিয়ন ডলারের, যা ২৯ দশমিক ৭৮ শতাংশ বেশি। এদিকে একই সময়ে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে ৪৫৬ দশমিক ৮৫ মিলিয়ন ডলারের। বেড়েছে ২৭ দশমিক ৪১ শতাংশ। আর তুলা ও সুতার চালান ৩৮ দশমিক ৭৩ শতাংশ বেড়ে ৮০ দশমিক ৪৮ মিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।

 

 

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্য অনুসারে, জুলাই থেকে নভেম্বরের মধ্যে ২০ দশমিক ২৩ মিলিয়ন ডলারের টেরি টাওয়েল রপ্তানি হয়েছে। বেড়েছে ২৫ দশমিক ৫০ শতাংশ। জুতা (চামড়াজাত নয়) রপ্তানি হয়েছে ১৭৫ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলারের। যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৭ দশমিক ১১ শতাংশ বেশি।

 

 

তবে এই ৫ মাসের মধ্যে পাট ও পাটজাত পণ্যের রপ্তানি তেমন ভালো ছিল না। এটি ১৭ দশমিক ৪৫ শতাংশ কমে ৪৫৬ দশমিক ৮৩ মিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।

 

 

সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘কার্যাদেশ অব্যাহতভাবে বাড়ছে। কাঁচামালের সরবরাহ ঠিক থাকলে আমাদের রপ্তানিও বাড়তে থাকবে।’ স্থানীয় সরবরাহকারীরা চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের কাঁচামালের ৮০ শতাংশের চাহিদা পূরণ করতে পারে।

 

 

‘সুতরাং এই খাতের প্রবৃদ্ধির জন্য কাঁচামালের সরবরাহ ঠিক থাকা দরকার’- বলেন সাইফুল। এই খাতের উদ্যোক্তারা সাভারে চামড়াশিল্প নগরের কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধনাগার পুরোপুরি কার্যকর করার আহ্বান জানান।

 

 

বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসানের ভাষ্য, করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রনের প্রাদুর্ভাব নিয়ে তারা খুব একটা উদ্বিগ্ন নন। কারণ ক্রেতারা এখনো বিপুল পরিমাণে কার্যাদেশ দিচ্ছেন। বিশ্বব্যাপী সরবরাহ চেইনও ঠিকঠাক কাজ করছে।

লাইভ রেডিও

Calendar

March 2024
S M T W T F S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31