দেশে ৬২০০টি আইসোলেশন বেড প্রস্তুত আছে ঃ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর

প্রকাশিত: ৭:৫১ অপরাহ্ণ, মার্চ ৩০, ২০২০

দেশে  ৬২০০টি আইসোলেশন বেড প্রস্তুত আছে ঃ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর

দেশব্যাপী নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে ও এই ভাইরাসসৃষ্ট রোগ কোভিড-১৯ এ আক্রান্তদের চিকিৎসায় নানা ব্যবস্থা নিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

সোমবার করোনাভাইরাস নিয়ে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রন ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) নিয়মিত ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ প্রস্তুতির বিষয়ে জানান ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের পরিচালক হাবিবুর রহমান।

তিনি এদিন জানান, কোভিড-১৯ আক্রান্তদের সেবা দিতে সারা দেশে বিভিন্ন হাসপাতালে ৬২০০টি আইসোলেশন বেড প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

হাবিবুর রহমান জানান, দেশে সব মিলিয়ে ৫৫ হাজার ৫৮৩ জনকে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছিল। যাদের মধ্যে ২৯ হাজার ৫৬০ জনের কোয়ারেন্টিনের মেয়াদ শেষ হয়েছে। এখন হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন ২৬ হাজার ২৩ জন।

দেশের ৬৪টি জেলায় ৩২৩টি প্রতিষ্ঠানকে প্রস্তুত করা হয়েছে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের জন্য, যেগুলো ১৮ হাজার ৯২৩ জনকে সেবা দিতে পারবে বলে জানান হাবিবুর।

বিভিন্ন বিমান, স্থল ও সমুদ্র বন্দর দিয়ে যারা দেশে প্রবেশ করছেন, তাদেরও স্ক্যানিং করা হচ্ছে নিয়মিত। এ পর্যন্ত ৬ লাখ ৬৫ হাজার ২৯৬ জন যাত্রীকে স্ক্যান করা হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় স্ক্যান করা হয়েছে ২৮৩ জনকে।

হাবিবুর রহমান জানান, কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণে ১৭টি গাইডলাইন প্রস্তুত করা হয়েছে। এই গাইডলাইনগুলোর মধ্যে রয়েছে-

কভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীর হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা
পিপিই-র যুক্তিসঙ্গত ব্যবহার
জীবাণু সংক্রমন ও পরিবেশ সংক্রান্ত নির্দেশনা
কুসংস্কার দূরীকরণ
মৃতদেহ দাফন ও সৎকারের ব্যবস্থাপনা
কোয়ারেন্টিন ব্যবস্থাপনা

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩ ও জরুরি স্বাস্থ্য সেবার ৩৩৩ নম্বরে কল করে এ পর্যন্ত নয় লাখ ৫৫ হাজার ৪৩৫ জন করোনাভাইরাস বিষয়ক সেবা নিয়েছেন বলে জানান হাবিবুর।

লজিস্টিক সেবার বিষয়ে হাবিবুর রহমান জানান, এ পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানে তিন লাখ ২৫ হাজার ৭০টি ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম (পিপিই) বিতরণ করা হয়েছে। এখন মজুদ রয়েছে ৪১ হাজার ৯৩০টি পিপিই। আরও ১০ লাখ পিপিই সংগ্রহ করা হচ্ছে।

জ্যাক মা ফাউন্ডেশন থেকে আসা ৩০ হাজার টেস্টিং কিট, ২ লাখ ২৭ হাজার ফেইস মাস্ক, ৩০ হাজার এন-নাইনটি ফাইভ মাস্ক মজুদ রয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে।

আইইডিসিআর ছাড়াও ইতোমধ্যে ঢাকা শিশু হাসপাতাল, আইপিএইচ ইনস্টিটিউট, চট্টগ্রামের ফৌজদারহাটে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিকাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস, কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আইইডিসিআরের ফিল্ড ল্যাবরেটরিতে করোনাভাইরাসের পরীক্ষা শুরু হয়েছে।

পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা রয়েছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বরিশালের শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।

সোমবারের ব্রিফিংয়ে যুক্ত হয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম (এমআইএস) বিভাগের পরিচালক ডা.হাবিবুর রহমান জানিয়েছেন, সোমবারের মধ্যেই ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কোভিড-১৯ পরীক্ষা পিসিআর টেস্ট শুরু হয়ে যাওয়ার কথা রয়েছে।

এদিন হাবিবুর রহমান বলেন, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই খুলনা, বরিশাল ও সিলেটের মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পিসিআর টেস্ট শুরু হবে।

তিনি জানান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর পিসিআর টেস্টের জন্য ইতোমধ্যে ৯২ হাজার টেস্ট কিট সংগ্রহ করেছে। বিভিন্ন পিসিআর সেন্টারে ২০ হাজার কিট বিতরণ করা হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাতে এখনও ৭২ হাজার টেস্ট কিট রয়েছে।

হাবিবুর রহমান জানিয়েছেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ইতোমধ্যে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ৭৩০ জন চিকিৎসক ও ৪৩ জনকে নার্সকে কোভিড-১৯ আক্রান্তদের চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়ে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। নমুনা সংগ্রহের জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে দেশের মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের। যারা বাকি রয়েছেন তাদের সোমবার বিকালে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দেওয়ার কথাও জানান তিনি।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

লাইভ রেডিও

Calendar

March 2024
S M T W T F S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31