২৯শে মার্চ ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৯:১১ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৩, ২০১৭
অভিনব উদ্যোগে সামিল হয়েছে রাজ্যের ১২টি সংগ্রহশালা। রয়েছে কলকাতার বালিগঞ্জ সার্কুলার রোডে মৌলানা আজাদ মিউজিয়াম , ব্যারাকপুরের গান্ধী মিউজিয়াম , নৈহাটির ঋষি বঙ্কিম সংগ্রহশালা , গুরুসদয় দত্ত মিউজিয়াম , শান্তিনিকেতনের রবীন্দ্র ভবন মিউজিয়ামের মতো ঐতিহ্যশালী প্রতিষ্ঠানগুলি। এঁরাই সচিত্র বিবরণ , কিছু প্রামান্য নথি , তথ্য জানাচ্ছেন তাঁদের মিউজিয়ামের কথা। বিড়লা মিউজিয়াম বা কলকাতা যাদুঘরের যাদু দেখতে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসেন মানুষ। কিন্তু রাজ্যের এক কোনে কোথায় সামলানো হচ্ছে গান্ধীজীর ব্যবহার করা জিনিস বা কোথায় অত্যন্ত যত্নসহকারে রাখা হয়েছে গুপ্ত যুগের মুদ্রা সেই খবর ভুলেও কেউ রাখতে যান না। জানা থাকলেও সেখানে কেউ ঢুঁ মেরে একবার দেখেও আসেন না। ফলে অজানার তকমা নিয়েই পড়ে থাকে ঐতিহাসিকভাবে দামী জিনিস সংগ্রহ করা রাজ্যের ছোট ছোট মিউজিয়ামগুলি। এদের গুরুত্ব বোঝাতেই শান্তিনিকেতনের পৌষ মেলায় আয়োজিত হল ‘মিউজিয়াম অফ বেঙ্গল’। পৌষমেলা মানে সেখানে হাতে তৈরি জিনিস বেশী বিক্রি হয়। সেখানেই মিউজিয়াম সম্বন্ধে জানানোর অভিনব উদ্যোগ আয়োজিত হয়েছে। রাজ্যের প্রান্তিক মিউজিয়ামগুলির সম্বন্ধে জানা যাবে ২৮ তারিখ অবধি।পাঁচ দিন ধরে রাজ্যের ছোট ছোট মিউজিয়ামের গুরুত্ব বোঝাবে ‘মিউজিয়াম অফ বেঙ্গল’। হাওড়া জেলার পুরাবৃত্তি নিয়ে তৈরি হয়েছে বাগনানের ঘোরাঘাটা মিউজিয়াম। দক্ষিণ ২৪ পরগণার বারুইপুরে রয়েছে প্রত্নত্বাত্বিক মিউজিয়াম। কিন্তু এসবের খোঁজ এলাকার মানুষ রাখেন না। গেঁয়ো যোগী ভিখ না পেলে যা অবস্থা হয় ঠিক তেমনই অবস্থা এইসব মিউজিয়ামের। সবাই এসে ভিড় জমান কলকাতার বড় মিউজিয়ামগুলিতে।
ব্যারাকপুরের গান্ধী মিউজিয়ামের কিউরেটর প্রতীক ঘোষ বলেন , “সার্বিকভাবে সংগ্রহশালা সম্পর্কে গণসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষে ও ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা সংগ্রহশালাগুলি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল করতে শান্তিনিকেতনের পৌষ মেলায় এই প্রদর্শনীর আয়োজন হচ্ছে৷ রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি , বেসরকারি সংগ্রহশালার কর্মকর্তারা একসঙ্গে এই উদ্যোগ নিয়েছেন।”
প্রতীক ঘোষ জানিয়েছেন, “কলকাতার জাদুঘরে মানুষ ওই পাথর দেখে দারুণ আনন্দ পেয়ে চলে যায়। কিন্তু এসব জিনিস যে ঘরের পাশেই রয়েছে সেটার চেষ্টা করা হয় না।” ফলে মিউজিয়ামগুলির অবস্থা দিনে দিনে খারাপ হয়ে পড়ে।” এইসব মিউজিয়ামের সম্বন্ধে জানাতেই আয়োজিত হচ্ছে ‘মিউজিয়াম অফ বেঙ্গল।
উদ্যোক্তারা আশাবাদী এতে সংগ্রহশালায় যাওয়ার প্রবণতা বাড়ানো সম্ভব হবে৷ তাতে সংগ্রহশালাগুলির রুগ্ণ দশা দূর হবে৷ নতুন প্রজন্মকে সংগ্রহশালার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে আগ্রহী করতে চেষ্টা করছেন তাঁরা। কলকাতার মৌলানা আজাদ মিউজিয়ামের কিউরেটর স্বরূপ ভট্টাচার্য বলেন , ‘২০১৪ সাল থেকেই এই চেষ্টা চালাচ্ছিলাম। ২০১৭তে এসে সেই কাজের পথের একটু এগোলাম আমরা। আশা করছি আজকের এই পাঁচদিনের পর থেকে আগামী সময়ে ছোট মিউজিয়ামের গুরুত্বও বাড়বে।” তিনি এও জানিয়েছেন, “পৌষ মেলায় অনেক মানুষ ঘুরতে আসেন। তাঁদের জেলাতেই যে এরকম জিনিস রয়েছে তাঁরা জানেন না। এরপর তাঁদের কাছেই এইসব মিউজিয়ামের গুরুত্বও বাড়বে।”
প্রদর্শনী থেকে বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা সংগ্রহশালার তথ্য ভান্ডারের হদিস মিলবে৷শুধু মহানগরই ঐতিহাসিক জিনিস সংগ্রহ করে না বা মাটির তলা থেকে পাওয়া পাথর গুছিয়ে রাখে না। সবজান্তা শুধু কল্লোলিনী নয় , অনেক কিছু বোঝেন ও জানেন ছোট ছোট গ্রাম , মফঃস্বলের মানুষও। ধারনার পরিবর্তন শুরুটা এখান থেকেই হবে, আশা কর্তৃপক্ষের।
সুত্র: কলকাতা 24×7
RED TIMES LIMITED
116-117, Concord Emporium,
Kataban, Dhaka-1205.
Mobile: 017111-66826
Email: redtimesnews@gmail.com