১৮ই এপ্রিল ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১২:০১ অপরাহ্ণ, মে ১১, ২০১৮
মহাকাশে প্রায় ৫০টির উপর দেশের দুই হাজারের উপর স্যাটেলাইট বিদ্যমান। এগুলোর মধ্যে রয়েছে-আবহাওয়া স্যাটেলাইট, পর্যবেক্ষক স্যাটেলাইট, ন্যাভিগেশন স্যাটেলাইট ইত্যাদি। তবে বিএস-ওয়ান হল যোগাযোগ ও সম্প্রচার স্যাটেলাইট। এর কাজ: টিভি চ্যানেলগুলোর স্যাটেলাইট সেবা নিশ্চিত করাই বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের প্রধান কাজ। এর সাহায্যে চালু করা যাবে ডিটিএইচ বা ডিরেক্ট টু হোম ডিশ সার্ভিস। এছাড়া যেসব জায়গায় অপটিক কেবল বা সাবমেরিন কেবল পৌছায় নি সেসব জায়গায় এ স্যাটেলাইটের সাহায্যে নিশ্চিত হতে পারে ইন্টারনেট সংযোগ। থ্যালাস অ্যালেনিয়ায় নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট।
স্যাটেলাইটের ফুটপ্রিন্ট: বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের অবস্থান ১১৯.১ ডিগ্রী পূর্ব দ্রাঘিমার কক্ষপথে। এর ফুটপ্রিন্ট বা কভারেজ হবে ইন্দোনেশিয়া থেকে তাজিকিস্তান পর্যন্ত বিস্তৃত। শক্তিশালী কেইউ ও সি ব্যান্ডের মাধ্যমে এটি সবচেয়ে ভালো কাভার করবে পুরো বাংলাদেশ, সার্কভুক্ত দেশসমূহ, ফিলিপাইন এবং ইন্দোনেশিয়া।
স্থায়িত্ব: ১৫ বছরের জন্য রাশিয়ার কাছ থেকে অরবিটাল স্লট কেনা হয়েছে। তবে বিএস ওয়ানের স্থায়িত্ব হতে পারে ১৮ বছর পর্যন্ত।
স্যাটেলাইট নির্মাণ: ৩.৭ টন ওজনের বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটটির ডিজাইন এবং তৈরি করেছে ফ্রান্সের কোম্পানি থ্যালাস অ্যালেনিয়া স্পেস। আর যে রকেট এটাকে মহাকাশে নিয়ে যাচ্ছে সেটি বানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের স্পেসএক্স। উৎক্ষেপণ হচ্ছে ফ্লোরিডার লঞ্চপ্যাড থেকে।
বিএস-ওয়ানের খরচ: শুরুতে বাজেট ধরা হয় ২৯৬৭.৯৫ কোটি টাকা। শেষ পর্যন্ত অবশ্য ২৭৬৫ কোটি টাকায় এ পুরো প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব হল। এর মধ্যে ১৩১৫ কোটি টাকা দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার আর বাকিটা বিদেশি অর্থায়ন।
স্যাটেলাইট অপারেশন: আর্থ স্টেশন থেকে ৩৫ হাজার ৭৮৬ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে স্যাটেলাইটটির কক্ষপথে যেতে সময় লাগবে ৮-১১ দিন। আর পুরোপুরি কাজের জন্য প্রস্তুত হবে ৩ মাসের মধ্যে। এরপর প্রথম ৩ বছর থ্যালাস অ্যালেনিয়ার সহায়তায় এটির দেখভাল করবে বাংলাদেশ। পরে পুরোপুরি বাংলাদেশী প্রকৌশলীদের হাতেই গাজীপুর ও রাঙামাটির বেতবুনিয়া আর্থ স্টেশন থেকে নিয়ন্ত্রিত হবে এটি। খবর-বিবিসি ।
দেশের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ বা স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১ নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছাবে মহাকাশযান ফ্যালকন-৯-এর মাধ্যমে। কয়েকটি ধাপের পর আকাশ সীমা পেরিয়ে জিওস্টেশনারি ট্রান্সফার কক্ষপথে যাবে বঙ্গবন্ধু-১। বাংলাদেশ সময় ১০ মে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ২টায় মার্কিন কোম্পানি স্পাসেক্সের ফ্যালকন-৯ রকেটের মাধ্যমে কেপ ক্যানাভেরালের লঞ্চ প্যাড থেকে স্যাটেলাইটটি উৎক্ষেপণ করা হবে।
মহাকাশে স্যাটেলাইটটির উৎক্ষেপণকারী প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্স এক বিবৃতি বলেছে, বঙ্গবন্ধু-১ বহনকারী ফ্যালকন-৯ উৎক্ষেপণ প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর উড্ডয়নের আগে সময় নেবে ৩৮ মিনিট এবং রকেটটি জিওস্টেশনারি ট্রান্সফার কক্ষপথে পৌঁছাতে সময় নেবে প্রায় ৩৩ মিনিট । তবে এই সময়সীমা আবহাওয়ার ওপর নির্ভর করবে ।
কাউন্ট ডাউনের মাধ্যমে উৎক্ষেপণ প্রক্রিয়া শুরু হবে। প্রথমেই স্পেসএক্সের লঞ্চিংবিষয়ক পরিচালক জ্বালানিবাহিত (প্রপেল্যান্ট) অংশ যাচাই করবেন। ৩ মিনিটের মাথায় রকেটে আরপি-১ বা রকেট গ্রেড ক্যারোসিন ভর্তি করা হবে। একই সময় প্রথম স্টেজে এলওএক্স বা লিকুইড অক্সিজেন প্রবেশ করানো হবে। ১৬ মিনিটের মাথায় দ্বিতীয় স্টেজে এলওএক্স প্রবেশ করানো হবে। উড্ডয়নের ৭ মিনিট আগে ফ্যালকন-৯-এর ইঞ্জিন ঠান্ডা করা হবে। উড্ডয়নের ১ মিনিট আগে রকেটটি শেষবারের মতো যাচাই করা হবে। উড্ডয়নের ৪৫ সেকেন্ড আগে লঞ্চিংবিষয়ক পরিচালক উড্ডয়নের বিষয়ে নির্দেশনা দেবেন। ৩ সেকেন্ডের মাথায় ইঞ্জিন কন্ট্রোলার ইঞ্জিন চালু করে দেবেন এবং ০০ সেকেন্ডে রকেটটি উড্ডয়ন করবে।
উড্ডয়নের ২ মিনিট ৩১ সেকেন্ডের মাথায় প্রথম স্টেজের ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যাবে। এর দুই সেকেন্ডের মাথায় প্রথম ও দ্বিতীয় স্টেজ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। ২ মিনিট ৩৬ সেকেন্ডে দ্বিতীয় স্টেজের ইঞ্জিন চালু হবে এবং নির্দিষ্ট গন্তব্যে যেতে থাকবে। ৮ মিনিট ১০ সেকেন্ডের মধ্যে প্রথম স্টেজ ল্যান্ডিং স্টেশনে ফিরে আসবে। ৮ মিনিট ১৯ সেকেন্ড সময়ে দ্বিতীয় স্টেজের ইঞ্জিন বন্ধ হবে এবং ২৭ মিনিট ৩৮ সেকেন্ডে পুনরায় সেটি চালু হবে। উড্ডয়নের ২৮ মিনিট ৩৭ সেকেন্ডে দ্বিতীয় স্টেজের ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যাবে। সেই সঙ্গে উড্ডয়নের ৩৩ মিনিট ৩৮ সেকেন্ডের মাথায় জিওস্টেশনারি ট্রান্সফার কক্ষপথে পৌঁছাবে বঙ্গবন্ধু-১।
RED TIMES LIMITED
116-117, Concord Emporium,
Kataban, Dhaka-1205.
Mobile: 017111-66826
Email: redtimesnews@gmail.com