১৯শে এপ্রিল ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৭:২৩ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৪, ২০২২
সদরুল আইনঃ
অবশেষে বিরল সৌভাগ্য অর্জন করলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তাজউদ্দীন আহমদ এবং জিল্লুর রহমানের মতো মহান নেতাদের কাতারে তিনি নিজেকে উপস্থাপন করতে সক্ষম হলেন।
কারণ, এই তিনজন নেতাই তিনবার বা ততোধিক বার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। এছাড়া আর কেউই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তিন মেয়াদে দায়িত্ব পালন করতে পারেননি।
সেক্ষেত্রে ওবায়দুল কাদের এক বিরল সৌভাগ্যবান রাজনীতিবিদের আসনে অলংকৃত হলেন টানা তৃতীয়বারের মতো সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মনোনীত হয়ে। কিন্তু আওয়ামী লীগের মতো একটি বিশাল রাজনৈতিক দলের তৃতীয়বারের মতো সাধারণ সম্পাদক হওয়াটাকে যতটা আনন্দের তারচেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জের মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
বিশ্লেষকরা বলছেন যে, প্রথম দুইবার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ওবায়দুল কাদের দায়িত্ব পালন করেছেন অনেকটা নিশ্চিন্তে এবং ঝুঁকিহীন অবস্থায়। প্রথম মেয়াদে তিনি দায়িত্ব পালন করার ক্ষেত্রে যথেষ্ট সক্ষমতার পরিচয় দিয়েছিলেন, বাংলাদেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত ঘুরে বেড়িয়েছিলেন।
কিন্তু দ্বিতীয় মেয়াদে তিনি অসুস্থ থাকার কারণে দীর্ঘ সময় দায়িত্বের বাহিরেই ছিলেন। এরপর তিনি দায়িত্বে ফিরে এলেও করোনার প্রকোপের সময় একরকম ঘরে বন্দি অবস্থায় দলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
আর এই সময় তার সঙ্গে তৃণমূলের বিশদ দূরত্ব তৈরি হয়েছিলো এবং ঘর থেকে বিবৃতির মত করে বিভিন্ন রকম বাণী এবং বক্তৃতার মধ্যেই তিনি তার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত করেছিলেন।
এই সময় অনেকে মনে করছিলো যে, শারীরিক কারণে বা সবকিছু মিলিয়ে হয়তো ওবায়দুল কাদের আর দলের সাধারণ সম্পাদক থাকবেন না।
এই সময়ে দলে পঞ্চপাণ্ডবের উত্থান ঘটে। জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, বাহাউদ্দিন নাছিম, মির্জা আজম, এসএম কামাল কামাল এবং মাহবুবউল আলম হানিফ’রা সম্মিলিতভাবে পাদপ্রদীপে আসেন।
কিন্তু এর মধ্যেই যখন আওয়ামী লীগের কাউন্সিলের তারিখ ঘোষণা করা হয় তখন ওবায়দুল কাদের আবার লাইমলাইটে চলে আসেন। তিনি তার অসুস্থতা ঝেড়ে ফেলে এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত ঘুরতে থাকেন।
এই সময়ে প্রথমবারের মতো আলোচিত হয় যে, ওবায়দুল কাদের হয়তো আবার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে থাকছেন এবং আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি ভাষণে ওবায়দুল কাদেরের প্রশংসা করেন। তখন থেকেই মনে করা হয় যে, সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ওবায়দুল কাদেরই থেকে যাচ্ছেন।
কিন্তু রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, অন্য দুইবার তিনি যতটা আরাম-আয়েশে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন, এবার তার আসল চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে এবং এবারই সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তিনি আসল পরীক্ষা দিবেন।
একদিকে বিরোধী আন্দোলন, অন্যদিকে দলের অভ্যন্তরীণ সংকট, আগামী নির্বাচন এবং আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে নানামুখী চাপ- এর মধ্যে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তিনি দলকে কিভাবে নিয়ে যাবেন সেটি হলো দেখার বিষয়।
তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, আওয়ামী লীগের মূল চালিকাশক্তি হলেন প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। সাধারণ সম্পাদক প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশগুলো প্রতিপালন করেন মাত্র।
কিন্তু প্রশ্ন হলো যে, সামনের দুর্গম রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ওবায়দুল কাদের কতটুকু দায়িত্ব পালন করতে পারবেন এবং কতটুকু গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করতে পারবেন, সেটিই হলো এখন দেখার বিষয়।
RED TIMES LIMITED
116-117, Concord Emporium,
Kataban, Dhaka-1205.
Mobile: 017111-66826
Email: redtimesnews@gmail.com