যে কোন সময় গ্রেপ্তার হতে পারেন ডা. সাবরিনা

প্রকাশিত: ১০:৩২ অপরাহ্ণ, জুলাই ১১, ২০২০

যে কোন সময় গ্রেপ্তার হতে পারেন ডা. সাবরিনা

যে কোন সময় গ্রেপ্তার হতে পারেন জেকেজি হেলথ কেয়ারের প্রধান নির্বাহী (সিইও) আরিফুল চৌধুরীর স্ত্রী ডা. সাবরিনা আরিফ চৌধুরী। গ্রেপ্তার আরিফুল চৌধুরীও জোবেদা খাতুন সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবার (জেকেজি হেলথ কেয়ার) সাথে সাবরিনার সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছেন। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন জেকেজির প্রতারণার সাথে শুরু থেকেই জড়িত সাবরিনা। তিনিই জেকেজির চেয়ারম্যান।

পুলিশের পক্ষ থেকেও বলা হচ্ছে জেকেজির প্রতারণা থেকে সাবরিনার দায় এড়ানোর সুযোগ নেই। কারণ তার স্বামী আরিফ চৌধুরি জিজ্ঞাসাবাদে প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সাবরিনার সক্রিয় সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছেন।
২৩ জুন (মঙ্গলবার) জেকেজি হেলথ কেয়ারের সিইও আরিফুল হক চৌধুরীসহ পাঁচজনকে আটক করে পুলিশ। এরপর একে একে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য বেরিয়ে আসতে শুরু করে। জানা যায়, জেকেজি হেলথ কেয়ারের কোনো ল্যাব বা পরীক্ষাগার ছিলো না। কম্পিউটারে ফলাফল লিখে ই-মেইলে তা রোগীর কাছে পাঠিয়ে দিতেন।

তেজগাঁও জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার মো.হারুন অর রশিদ বলেন, ‘জেকেজির সঙ্গে কারা কীভাবে জড়িত, তা তদন্তে উঠে আসছে। প্রতারণা করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে তারা। প্রতারণায় সম্পৃক্ততা আসায় ডা. সাবরিনাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আরো অনেক তথ্য বেরিয়ে আসবে। তার বিরুদ্ধে চার মামলায় চার্জশিট প্রস্তুতের কাজ চলছে।’

তিনি বলেন, আমরা যখন আরিফুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি তখন তিনি সাবরিনার কথা বলেছেন যে, তিনি আমার স্ত্রী এবং জেকেজির চেয়ারম্যান। তবে, তার নামে আমরা সরাসরি কোনো অভিযোগ পাইনি বলে কিছুটা সময় নিচ্ছি, তদন্ত চলছে। আমরা কিছু প্রমাণ পেলেই, তার জড়িত থাকার সম্পৃক্তটা পেলেই তার বিরুদ্ধে চার্জশিট গঠন করা হবে। আমরা সাবরিনাকে জিজ্ঞাসাবাদ করবো।

সূত্র মতে, জেকেজির করোনা নমুনা পরীক্ষার ফলাফল দেয়া হতো রোগীর বাহ্যিক উপসর্গ দেখে। নমুনা সংগ্রহের সময় ছয় সদস্যের দলের দুই সদস্য রোগীর উপসর্গ দেখে রিপোর্ট পজেটিভ হবে না নেগেটিভ তা ঠিক করে দিতেন। বাকি সদস্যদের কাজও ছিলো ভাগ করা।

জেকেজি নমুনা সংগ্রহ করে কোনো পরীক্ষা না করেই প্রতিষ্ঠানটি ১৫ হাজার ৪৬০ জনকে করোনার টেস্টের ভুয়া রিপোর্ট সরবরাহ করেছে। একটি ল্যাপটপ থেকে গুলশানে তাদের অফিসের ১৫ তলার ফ্লোর থেকে এই মনগড়া করোনা পরীক্ষার প্রতিবেদন তৈরি করে হাজার হাজার মানুষের মেইলে পাঠায় তারা। তাদের কার্যালয় থেকে জব্দ ল্যাপটপ পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর করোনা টেস্ট জালিয়াতির এমন চমকপ্রদ তথ্য মিলেছে।

জানা যায়, জেকেজির টেস্টে জনপ্রতি নেয়া হতো সর্বনিম্ন পাঁচ হাজার টাকা। বিদেশি নাগরিকদের কাছে জনপ্রতি এক শ ডলার। এ হিসাবে করোনার টেস্ট বাণিজ্য করে জেকেজি হাতিয়ে নিয়েছে সাত কোটি ৭০ লাখ টাকা। করোনা মহামারিতে মানুষের জীবন নিয়ে এমন নির্মম বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত জেকেজির চেয়ারম্যান ও জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের চিকিৎসক ডা. সাবরিনা চৌধুরী ও তার স্বামী প্রতারক আরিফ চৌধুরী।

জেকেজির কেলেঙ্কারিতে আরিফসহ কয়েকজন গ্রেপ্তার হলেও সাবরিনা পলাতক। করোনা হাসপাতাল হিসেবে রিজেন্টের অপকর্ম ঘিরে যখন নানামুখী আলোচনা তখনই জেকেজির চারটি মামলার তদন্ত করতে গিয়ে মিলল এমন তথ্য। একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্রে এসব তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।

আরিফুল হক চৌধুরী গ্রেপ্তারের পর থেকেই অভিযোগ ওঠে তার স্ত্রী ডা. সাবরিনা আরিফ চৌধুরী জেকেজির সার্বিক কাজে শুরু থেকে তাকে সহায়তা করে আসছিলেন। সাবরিনা নিজে জানিয়েছেন তিনি তিতুমীরের স্বেচ্ছাসেবীদের প্রশিক্ষণ দিয়েছেন যারা কিনা গ্রেপ্তার আতঙ্কে কলেজ ছেড়ে পালিয়েছেন। অভিযোগ রয়েছে ভুয়া পরীক্ষা সনদ দিতেন এসব কথিত স্বেচ্ছাসেবীরাও। আর তাদের প্রশিক্ষণ দিয়েছেন সাবরিনা আরিফ।

লাইভ রেডিও

Calendar

March 2024
S M T W T F S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31