বন আইনকে বৃদ্ধাংগুলি দেখিয়েছে ইন্দেশ্বর চা বাগান কর্তৃপক্ষ

প্রকাশিত: ১০:২৯ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২৩

বন আইনকে বৃদ্ধাংগুলি দেখিয়েছে  ইন্দেশ্বর চা বাগান কর্তৃপক্ষ

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:

 

রাজনগরের উত্তরভাগ ইউনিয়নে সহকারী জজ আদালতে চলমান মামলা রেখে ভূমি দখলের নামে পরিবেশ ও বন আইন অমান্য করে অপরিপক্ষ সহ মূল্যবান ফলজ, বনজ, আকাশি, বেলজিয়াম সহস্রাধিক গাছ কেটে লুট করে নিয়ে গেছে ইন্দেশ্বর টি এন্ড কো: লি:, ইন্দেশ্বর চা বাগান কর্তৃপক্ষ। এসময় আরো ৫ শতাধিক অপরিপক্ষ গাছ কেটে ফেলে রেখে যায় তারা ।

 

এছাড়াও ইউনিয়ন পরিষদের রাস্থা ও মালিকানা জমির কবর স্থান কেটে ফেলার অভিযোগও পাওয়া গেছে। ভূমি দখল ও গাছ কেটে লুট করতে ইন্দেশ্বর চা বাগান কর্তৃপক্ষ দুই সহস্রাধিক ভাড়াটে সহ বাগান শ্রমিকদেরে দেশীও অস্ত্রে সাজিত করে নিয়ে আসে। এ দৃশ্য দেখে এলাকায় আত্নংক ছড়িয়ে পড়ে। এসময় পুলিশ উপস্থিত থাকলেও নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে তারা। ফলে ইন্দেশ্বর চা বাগান কর্তৃপক্ষ পরিবেশের ক্ষতির সাথে সরকারের আর্ধ কোটি টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত করেছে।

ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার(১৩ ফেব্রুয়ারী) হলদিগুল গ্রামে। জানা যায়, হলদিরগুল গ্রামের মৌলা মিয়া(৬৫),মোস্তফা মিয়া(৬০),ছালিক মিয়া, লয়লু মিয়া, জয়নাল মিয়া ও মৃত মস্তাব মিয়া বাপ দাদার আমল থেকে  ৪ একর ৫৪ শতক ভূমিতে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসকের ১ খতিয়ানের জমিতে বসবাস করছেন। বসত ভিটা ছাড়া বাকী জমিতে ফলজ, বনজ, মূল্যবান আকাশি, বেলজিয়াম গাছ রোপন করেন। কিছু গাছ পরিপক্ষ ও অপরিপক্ষ হয়ে হিসাবে বেড়ে উঠে। কাঁঠাল, আম, জাম, কমলা, আনারস, কলা ফলবান বৃক্ষ ফল ধরে যাচ্ছে। আর এই বাগানের ফল বিক্রি এক মাত্র বসবাসকারী পরিবাররে আয়ের উৎস।

 

ইদানিং ইন্দেশ্বর চা বাগান কর্তৃপক্ষ এসে দাবী করে হলদিগুল টিজি মৌজার জেলা প্রশাসকের ১ খতিয়ানে ৪ একর ৫৪ শতক জমি সহ আশ পাশের জমিও তাদের দাবী করে বসে। উত্তরভাগ ইউনিয়ন অফিসের এশিয়ান হাইওয়ের সাথে মিলিত ৪ ফুট প্রস্থ রাস্তা তারা কেটে ফেলে। এমনকি মালিকানা ২৬ শতক জমির উপর পুরানো কবর স্থান দখল করে খোদাই করে ফেলে। ইন্দেশ্বর চা বাগান কর্তৃপক্ষের এমন কর্মকান্ডে মোস্তফা মিয়া বাদী হয়ে মৌলভীবাজার সহকারী জজ আদালতে স্বত্ত মামলা করেন। মামলা নং-১৪/২০২৩ইং। পরবর্তীতে ন্যায় বিচারের স্বার্থে অন্তবর্তী কালীন নিষেধাজ্ঞা প্রার্থনা করেন।

অন্তবর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা শুনানির দিন ১৩ ফেব্রুয়ারী ইন্দেশ্বর চা বাগান কর্তৃপক্ষ এই গাছ লুটের ঘটনা করলো। এলাকার বাসিন্ধা হেনা বেগম(৪৪), খালেদ আহমদ(৩৮), শায়েক আহমদ(৩২),শামছুদ্দিন(২৬),রাশেদ আহমদ(৩২) বলেন, ইন্দেশ্বর চা বাগান কর্তৃপক্ষ অন্যায় ভাবে ইউনিয়ন পরিষদের রাস্থা, পুরাতন কবর স্থান কেটে ফেলে। পরে জমি তাদের প্রমান দিতে না পেরে আবার ভরাট করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। বর্তমানে অন্যায় ভাবে জমি দখলের উদ্দেশ্যে গাছ লুট ও নষ্ট করে।

এ ব্যাপারে ইন্দেশ্বর চা বাগানের ম্যনেজার লোকমান চৌধূরী বলেন, মৌলা মিয়া গংদের গাছ লাগানো জমি বাগানের। আমরা দখল মুক্ত করছি।  অপরিপক্ষ ও পক্ষ, ফলজ গাছ কাটতে বন বিভাগের অনুমতি নিয়েছেন কি না জানতে চাইলে বলেন, অনুমতি নেই নাই। এটা আমাদের ভূল হয়েছে। আগামীতে আর কাটলে অনুমতি নেবো। সহকারী ম্যানেজার শায়েদুর রহমান বলেন, এরকম বহু জমি আমাদের বাগানের বেদখল রয়েছে। মামলা চলছে দীর্ঘদিন ধরে। সমাধান হচ্ছে না। আমরা দখল মুক্ত করছি। মামলায় ওরা পেলে আমরা ছেড়ে দেবো।

 

এব্যাপারে শ্রীমঙ্গল সহকারী বনরক্ষক আবুবক্কর সিদ্দিক বলেন, যে কোন ব্যক্তি গাছ কাটাতে বন বিভাগের অনুমতি অবশ্যই লাগে। আমরা সরেজমিনে লোক গিয়েছে। আগামীকাল আবার যাবে। অপরাধীদের বিরুদ্ধে কোন আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে কি না জানতে চাইলে বলেন, অবশ্যই মামলা হবে।

মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসানের সাথে মোঠোফানে আলাপকালে তিনি বলেন- যে কেহ গাছ করতে হলে বাধ্যতামুলক বনবিভাগ থেকে অনুমোধন নিতে হবে। যদি কেহ আইন অমান্য করে তাহলে বন বিভাগ মামলা করে আইনগত ব্যবস্থা নেবে।

সরকারের বন আইনের অনুমোদন না নিয়ে গাছ কর্তনকারীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনে এগিয়ে আসবে সরকার এমনটাই প্রত্যাশা সচেতন মহলের।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

লাইভ রেডিও

Calendar

March 2024
S M T W T F S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31