লন্ডনে শহীদ জননী জাহানারা ইমামের ৯৫তম জন্মদিন উপলক্ষে ভার্চুয়াল স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত

প্রকাশিত: ৯:১৫ অপরাহ্ণ, মে ৫, ২০২৪

লন্ডনে শহীদ জননী জাহানারা ইমামের ৯৫তম জন্মদিন উপলক্ষে ভার্চুয়াল স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত
প্রবাসী প্রতিনিধি:
দেশমাতৃকার মু্ক্তির লক্ষ্যে নিজ সন্তানকে উৎসর্গ করে তিনি হয়ে উঠেছিলেন সব মুক্তিযোদ্ধাদের মা। আর একাত্তরের ঘাতকদের বিচারের দাবিতে গণআদালত গঠন করে বাঙালির হৃদয়ে তিনি জ্বেলেছিলেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনার শিখা। তাঁর মৃত্যু নেই, বাঙালির হৃদয়ে তিনি অমর হয়েই থাকবেন।
শহীদ জননী জাহানারা ইমামের ৯৫তম জন্মদিন উপলক্ষে শুক্রবার ৩ মে) স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় লন্ডনে অনুষ্ঠিত এক ভার্চুয়াল স্মরণ সভায় এমন মন্তব্যই উঠে আসে বক্তাদের মুখ থেকে।
একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি যুক্তরাজ্য শাখা আয়োজিত স্মরণ অনুষ্ঠানে যৌথভাবে মূল আলোচক হিসেবে উপস্থিতি ছিলেন সংগঠনের উপদেষ্ঠা ব্রিটেনে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক মাহমুদ এ রউফ ও রণাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রবীণ সাংবাদিক সত্যবাণীর উপদেষ্টা সম্পাদক আবু মুসা হাসান।
একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি যুক্তরাজ্য শাখার সভাপতি সাংবাদিক সৈয়দ আনাস পাশার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আবৃত্তিকার মুনিরা পারভিনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত ভার্চুয়াল আলোচনায় বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাবেক সভাপতি সৈয়দ এনামুল ইসলাম, সহ-সভাপতিসাংবাদিক নিলুফা ইয়াসমীন, সহ-সভাপতি জামাল আহমেদ খান, সহ-সাধারণ সম্পাদক জুয়েল রাজ, সাংগঠনিক সম্পাদক সুশান্ত দাশ প্রশান্ত, গোলাম কিবরিয়া ও যুক্তরাজ্য একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির
সহ-সভাপতি এবং ওয়েলসের সভাপতি সাংবাদিক মোহাম্মদ মকিস মনসুর প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
বক্তারা, শহীদ জননীকে মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশের অন্যতম অভিভাবক মন্তব্য করে বলেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য অসাম্প্রদায়িক মানবিক চেতনার একটি স্বাধীন দেশের স্বপ্ন দেখেই তিনি নিজের সন্তানকে যুদ্ধের মাঠে উৎস্বর্গ করেছিলেন। তার এই আত্মত্যাগ ছিলো নজিরবিহীন।
বক্তারা শহীদ জননীকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অতন্দ্র প্রহরী আখ্যায়িত করে বলেন, যখনই জাতির পতাকা খামচে ধরতে চেয়েছে সেই পুরোনো শকুন, তখনই তিনি এদের প্রতিরোধে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে মাঠে নেমেছেন। একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি গঠন করে ঘাতকদের বিচার যেভাবে তিনি আদায় করেছেন, ঠিক তেমনি তার-ই চেতনায় বলিয়ান হয়ে গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলন এই বিচারের রায় কার্যকরে ভূমিকা রেখেছে।

 

একটি পরিপূর্ণ অসাম্প্রদায়িক চেতনার বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত শহীদ জননীর চেতনায় কাজ করার উপর গুরুত্বারোপ করে বক্তারা বলেন, তিনি বিশ্বাস করতেন ভবিষ্যৎ প্রজন্মগুলোর মনে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে উজ্জীবিত রাখতে পারলে এদেশের কল্যাণের জন্য ত্যাগ স্বীকারে ইচ্ছুক মানুষের অভাব হবে না। তিনি বলতেন, এই প্রজন্মের মধ্যেই লুকিয়ে আছে আগামী দশকগুলোর যোগ্য প্রতিনিধি। আর সে লক্ষ্যেই এ প্রজন্মকে তিনি গঁড়ে তুলতে চেয়েছিলেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনায়। তরুণদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেছেন, জেনো, সাহসই হচ্ছে সবচেয়ে বড় হাতিয়ার।
বক্তারা আক্ষেপ করে বলেন, স্বাধীনতার এত বছর পরেও মৌলবাদীরা বারবার মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে, সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়ায়, এরপরও আমাদের হতাশ হলে চলবেনা। তাই জাহানারা ইমামের জন্মবার্ষিকীতে আসুন আমরা আবার শপথ নেই যে, তিনি যে আন্দোলন এবং সংগ্রাম শুরু করে গিয়েছিলেন সেই লড়াই আমাদের চালিয়ে যেতে হবে।
আলোচনার শেষ পর্যায়ে যুক্তরাজ্য একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সাধারণ সম্পাদক মুনিরা পারভিন একটি কবিতা আবৃত্তির মাধ্যমে শহীদ জননীকে স্মরণ করেন।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

লাইভ রেডিও

Calendar

May 2024
S M T W T F S
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031