৫ ডিসেম্বর ১৯৬৯ , বঙ্গবন্ধু পূর্ব পাকিস্তানের নামকরণ করেন বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১:২০ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৫, ২০২১

৫ ডিসেম্বর ১৯৬৯ ,  বঙ্গবন্ধু  পূর্ব পাকিস্তানের নামকরণ করেন বাংলাদেশ

 

 

রেড টাইমস প্রতিবেদকঃ ৫ ডিসেম্বর ১৯৬৯ , জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পূর্ব পাকিস্তানের নামকরণ করেন বাংলাদেশ । বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ এ দুটি নাম যেন অবিচ্ছেদ্য। বাংলাদেশের রাজনীতিতে টুঙ্গিপাড়ার খোকা আজ বঙ্গবন্ধু, জাতির পিতা। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে লাখ লাখ মানুষ আত্মাহুতি দিয়েছেন তার নামে, লক্ষ বীরনারী সম্ভ্রম বিসর্জন দিয়েছেন তার ডাকে। ইতিহাসের নিজের হাতে গড়া নেতা তিনি। আবার তিনি নিজের হাতে নতুন ইতিহাস তৈরি করে গেছেন। তাইতো তিনি বঙ্গবন্ধু, আর বঙ্গবন্ধুই বাংলাদেশ।

 

১৯২০ সালের ১৭ মার্চ গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে এক মধ্যবিত্ত পরিবারে খোকা নামের এক শিশুর জন্ম হয়। গ্রামের মানুষ ছাড়া কেউ তার জন্মের কথা জানেনি। এর পঞ্চান্ন বছর পর যখন সেই খোকার ঘাতকদলের হাতে মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে, তখন সারা বিশ্ব শোকে আচ্ছন্ন হয়েছে।
তিনি তখন টুঙ্গিপাড়ার খোকা নন, সারা বিশ্বের কাছে পরিচিত একটি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তার মৃত্যুতে ব্রিটেনের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী হ্যারল্ড উইলসন এক চিঠিতে বলেছেন, ‘It is a great national tragedy for you, but a personal tragedy for me.’ (এটা তোমাদের জন্য এক বিরাট জাতীয় ট্র্যাজেডি; কিন্তু আমার কাছে একটি ব্যক্তিগত ট্র্যাজেডি)।

 

ব্রিটিশ হাউজ অব লর্ডস-এর এক মানবতাবাদী সদস্য বলেছেন, ‘পৃথিবীর বহু নেতা তার দেশকে স্বাধীন করেছেন; কিন্তু শেখ মুজিব তার দেশকে দুবার স্বাধীন করেছেন।’ বিশ শতকের সত্তরের দশকের বিশ্বনেতাদের কাছে তিনি ছিলেন এক মহানায়ক। তাইতো ফিদেল ক্যাস্ত্রো তার সম্পর্কে বলেছেন, ‘আমি হিমালয় দেখিনি, শেখ মুজিবকে দেখেছি।’

 

লন্ডনের সানডে অবজারভার বলেছিল, ‘পোয়েট অব পলিটিকস’-রাজনীতির কবি। এই কবির কণ্ঠে মধ্যযুগীয় একটি ধর্মীয় রাষ্ট্রের কাঠামো ভেঙে বেরিয়ে এসেছিল স্বাধীন, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ। যার চারটি রাষ্ট্রীয় ভিত্তি-গণতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা। জুলিও কুরি বিশ্ব শান্তিপদক লাভের সময় শেখ মুজিবুর রহমানকে বিশ্ববন্ধু হিসাবে আখ্যা দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর জীবনকাল মাত্র পঞ্চান্ন বছর। এ পঞ্চান্ন বছরে তিনি ধর্মনিরপেক্ষ বাঙালি জাতীয়তাবাদকে সুপ্রতিষ্ঠা দিয়েছেন। অবলুপ্ত বাংলাদেশ ও বাঙালি এ দুটি নামের পুনঃপ্রতিষ্ঠা ঘটিয়েছেন। বাংলাদেশ নামে একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম দিয়েছেন।

 

বাঙালি নামে একটি স্বাধীন সার্বভৌম বাঙালি জাতির অস্তিত্ব উদ্ধার করেছেন। কৈশোরে নিজের অজান্তেই তিনি মানুষকে ভালোবাসতে শেখেন। সমাজের স্বার্থান্ধ শোষকদের ঘৃণা করতে শেখেন। জমিদার ও জোতদার এবং মহাজনদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে শোষিত গরিব মানুষের পাশে দাঁড়াতে তখন থেকেই তাকে দেখা যায়। এ জন্য তিনি কারাবরণও করেছেন। কিশোর মুজিবের মধ্যে এ তেজস্বিতা দেখেই শহীদ সোহরাওয়ার্দী তার প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিলেন এবং কলকাতায় তাকে ডেকে এনে তার রাজনীতিতে দীক্ষা দিতে চেয়েছিলেন।