গত ২১ জুলাই ঘটে যাওয়া ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনার পর ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে রাজধানীর উত্তরায় অবস্থিত মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ।
১২ দিনের ছুটি ও দুই দিনের গ্রুপ কাউন্সেলিং শেষে আজ বুধবার (৬ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৮টা থেকে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরু হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটির জনসংযোগ কর্মকর্তা শাহ্ বুলবুল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, দুর্ঘটনার পর প্রথম দুই দিন ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হয় দোয়া মাহফিল, মানসিক প্রশমন কর্মসূচি এবং কাউন্সেলিং সেশন।
আজ থেকে ধাপে ধাপে শুরু হয়েছে পূর্ণাঙ্গ পাঠদান কার্যক্রম। আগামী তিন মাস চলবে মনোসামাজিক কাউন্সেলিং কার্যক্রম, যার মূল লক্ষ্য শিক্ষার্থীদের ধীরে ধীরে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা।
মাইলস্টোন কলেজের অধ্যক্ষ মো. জিয়াউল আলম জানান, “এই মুহূর্তে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো শিক্ষার্থীদের মানসিক সাপোর্ট দেওয়া। কাউকে বাধ্য করা হয়নি; অভিভাবকদের মতামতের ভিত্তিতেই ধাপে ধাপে শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে।
দুর্ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের মধ্যে বিশেষ করে ছাত্রীদের মানসিক প্রভাব তুলনামূলকভাবে বেশি, তাই তাদের জন্য বিশেষ মনোযোগসহ সেশন পরিচালনা করা হচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “একটি সেশন যথেষ্ট নয়। অনেক শিক্ষার্থীর জন্য ধারাবাহিক কাউন্সেলিং প্রয়োজন। আমরা ফর্ম মাস্টারদের মাধ্যমে ফিডব্যাক নিয়ে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নিচ্ছি।
আজ থেকে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরু হলেও প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক শ্রেণিগুলোর ক্লাস ধাপে ধাপে চালু করা হবে।”
কলেজ প্রশাসনের সূত্রে জানা গেছে, ব্র্যাক, বাংলাদেশ বিমান বাহিনী, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং কলেজের নিজস্ব সাইকোলজিস্টদের সমন্বয়ে একটি বিশেষজ্ঞ কাউন্সেলিং টিম গঠন করা হয়েছে।
শুরুতে ওয়ান-টু-ওয়ান সেশন হলেও বর্তমানে চলছে গ্রুপ কাউন্সেলিং। প্লে-গ্রুপ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত সব শ্রেণির শিক্ষার্থীদের এই প্রক্রিয়ার আওতায় আনা হচ্ছে।
কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও উপদেষ্টা কর্নেল (অব.) নুরুন নবী জানান, যারা এখনো ট্রমার মধ্যে রয়েছেন, চাইলে তারা অন্য কোনো শাখা বা প্রতিষ্ঠানে স্থানান্তর হতে পারবেন।
তিনি আরও জানান, দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ভবনে আপাতত কোনো শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হবে না। সরকার ইতোমধ্যেই তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে, যারা ভবিষ্যতে সেই ভবনের করণীয় সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেবে।
উল্লেখ্য, ২১ জুলাইয়ের দুর্ঘটনার পর কলেজ কর্তৃপক্ষ তিন দফায় ছুটি ঘোষণা করে। সর্বশেষ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কলেজটি ২ আগস্ট পর্যন্ত বন্ধ ছিল।