তৈয়বুর রহমান (কালীগঞ্জ) গাজীপুর:
গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান ফটকের মাত্র ২০ গজের মধ্যে গড়ে উঠেছে ‘হলি কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টার’ নামের একটি প্রাইভেট ডায়াগনস্টিক সেন্টার। উপজেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের চোখের সামনে এ ধরনের বেসরকারি প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠলেও বিষয়টিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো দৃশ্যমান উদ্যোগ বা প্রতিক্রিয়া নেই।
স্থানীয়রা বলছেন, সরকারি হাসপাতালের এত কাছাকাছি প্রাইভেট ডায়াগনস্টিক সেন্টার বা ক্লিনিক গড়ে উঠলে সরকারি স্বাস্থ্যসেবার প্রতি মানুষের আস্থা কমে যাবে। একই সঙ্গে বাড়বে দালালচক্রের তৎপরতা, যা জনস্বার্থে মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
জানা গেছে, বাংলাদেশ প্রাইভেট ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার (নিবন্ধন ও নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০১২ অনুযায়ী, কোনো প্রাইভেট ক্লিনিক বা ডায়াগনস্টিক সেন্টার হাসপাতালের সীমানার খুব কাছে স্থাপন করা যাবে না, যদি তা সরকারি স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার স্বাভাবিক কার্যক্রমে বিঘ্ন সৃষ্টি করে। একই সঙ্গে এসব প্রতিষ্ঠানের সুনির্দিষ্ট অনুমোদন প্রয়োজন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও সংশ্লিষ্ট সিভিল সার্জন অফিসের কাছ থেকে।
তবে বাস্তবে সরকারি হাসপাতালের প্রধান ফটকের সামনে প্রাইভেট হাসপাতাল, ক্লিনিক বা ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে অনৈতিক ও অগ্রহণযোগ্য বিবেচনা করা হয়। কারণ এতে দালালচক্র, রোগী টানাটানি এবং সরকারি সেবায় বিঘ্ন ঘটে।
হলি কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের স্বত্বাধিকারী মো. কবির হোসেন বলেন, ‘গাজীপুরের সিভিল সার্জন স্যার আমাদের সেন্টার ভিজিট করেছেন এবং বলেছেন, সব ঠিক আছে, কোনো সমস্যা নেই। আমি তার অনুমোদন নিয়েই এখানে চালু করেছি।’
তবে সরকারি হাসপাতালের গেটের সামনে প্রাইভেট ডায়াগনস্টিক সেন্টার চালানো কি বিধিসম্মত কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এটা খোলা যাবে না, এই ধরনের কোনো গেজেটেড আইন নেই। এটি মৌখিক কথা। সিভিল সার্জনের অফিসের সামনেও অনেক ডায়াগনস্টিক সেন্টার আছে। এগুলো লুকানোর কিছু নেই। কেউ আইন দেখাতে পারবে না।’
এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচএনএফপিও) ডা. রেজওয়ানা রশিদ বলেন, ‘গাজীপুরের সিভিল সার্জন মহোদয় হলি কেয়ার ভিজিট করেছেন। স্যার কী বলেন, আগে সেটা জেনে নেই, তারপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
অপরদিকে, গাজীপুর জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. মামুনুর রহমান স্পষ্ট করে বলেন, ‘সরকারি হাসপাতালের গেটের সামনে ডায়াগনস্টিক সেন্টার কোনোভাবেই হতে পারে না। আমি শুধু ভিজিট করেছি, কিন্তু কোনো অনুমোদনের প্রশ্নই আসে না। এমনকি ওই প্রতিষ্ঠানের মালিকের সাথেও আমার দেখা হয়নি, আমি শুধু তাদের প্রতিনিধির সাথে কথা বলেছি।’
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তনিমা আফ্রাদ বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা ছিল না। এটা কোনোভাবেই অনুমোদনযোগ্য নয়। আমি ইউএইচএনএফপিও’কে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনা দিয়েছি।’
RED TIMES LIMITED
116-117, Concord Emporium, Kataban, Dhaka-1205.
Mobile: 017111-66826
Email: redtimesnews@gmail.com
Copyright © 2025 RED TIMES. All rights reserved.