প্রিন্ট এর তারিখঃ জুলাই ১২, ২০২৫, ৩:৩০ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ জুলাই ১০, ২০২৫, ২:৫৪ অপরাহ্ণ
ভোলার নোমান হাসানের বিসিএস সাফল্যের হৃদয়স্পর্শী গল্প

গাজী তাহের লিটন, ভোলা:
দ্বীপজেলা ভোলার বোরহানউদ্দিনের ফুলকাচিয়া গ্রামের মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান মো. নোমান হাসান। অদম্য ইচ্ছাশক্তি, মেধা ও সংগ্রামের স্বপ্নবুনে অর্জন করেছেন সেরা সাফল্য। স্ত্রী সন্তানের পরম মমতার ভালোবাসার মুহূর্তগুলোকে বিসর্জন দিয়েছেন প্রায়শঃই। অবশেষে, ৪৪তম বিসিএস'র চূড়ান্ত ফলে শিক্ষা ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন তিনি। তাঁর এ সাফল্যের আনন্দ যেনো নিজ গ্রামের প্রতিটি ঘরে, ঘরে।
মো. নোমান হাসান ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার কাচিয়া ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ফুলকাচিয়া গ্রামের সাবেক ব্যবসায়ী আব্দুর রব মিয়া ও আমেনা বেগম দম্পতির সন্তান। ছোটবেলা থেকেই মেধাবী নোমান পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণিতে পেয়েছেন মেধাবৃত্তি। তিনি ২০১১ সালে এসএসসি ও ২০১৩ সালে এইচএসসি পাস করেন। এরপর ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে। সেখান থেকে ২০১৮ সালে সম্মান এবং ২০১৯ সালে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন।
বিসিএস ক্যাডার হওয়ার অনুভূতি জানিয়ে তিনি বলেন, সাফল্য সব সময় আনন্দের। বিসিএস ক্যাডার হওয়া জীবনের সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত অর্জনগুলোর একটি। এর অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। প্রস্তুতির সময় স্ত্রী-সন্তানদের সময় দিতে পারিনি। আমার স্ত্রী ত্যাগ, ধৈর্য ও সেবার যে নিদর্শন রেখেছে, তা আমি ভুলতে পারবো না। সে হাসিমুখে সব সহ্য করেছে, এই দিনটির অপেক্ষায়। তাই আমার সাফল্য তার সাফল্যও।”
বিসিএস প্রস্তুতির বিষয়ে তিনি বলেন, আমি পরিকল্পনা অনুযায়ী পড়াশোনা করেছি। যেটা দরকার, সেটাই পড়েছি। আর আমি মুখস্থে একদমই ভালো না, তাই যা পড়েছি মন দিয়ে বুঝে পড়েছি।
নোমান বলেন, বিসিএসে ভালো করতে হলে নিজের শক্তির জায়গায় বেশি ফোকাস করা জরুরি। সব জায়গায় সমান মনোযোগ না দিয়ে, যে বিষয়ে আমি ভালো, সেখান থেকে বেশি নম্বর তোলার চেষ্টা করেছি। দুর্বল জায়গাগুলোও একেবারে ছেড়ে দেইনি।
তিনি আরও বলেন, শিক্ষা ক্যাডার আমার প্রথম পছন্দ ছিল। আমি নিজেকে কোথায় দেখতে চাই, সেটার ওপর ভিত্তি করেই ক্যাডার চয়েজ সাজিয়েছি। অন্যদের মত নয়, নিজের চাওয়াটাই এখানে মুখ্য।
বিসিএস প্রত্যাশীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, পরিকল্পনা অনুযায়ী পড়া, অভিজ্ঞদের কথা শোনা, অল্প কিন্তু গভীরভাবে পড়া, এবং নিজেকে চেনা—এই বিষয়গুলোই সাফল্যের পথে নিয়ে যেতে পারে। বইয়ের পাহাড় গড়ার প্রয়োজন নেই, হৃদয় দিয়ে অল্প পড়লেই যথেষ্ট।
তবে বিসিএসকে জীবনের একমাত্র লক্ষ্য বানানোর বিষয়ে নোমান সতর্ক করেন। তিনি বলেন, “যাদের সামনে বিকল্প ভালো সুযোগ আছে, তাদের উচিত সে পথে এগিয়ে যাওয়া। কারণ বিসিএস এক ধরনের ধৈর্যের পরীক্ষা, এবং এ পথে সফল হতে সময় দেওয়ার মানসিকতা থাকতে হবে।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার বিষয়ে নোমান জানান, আমি চাই আমার কর্মক্ষেত্রে সেরা হতে এবং অন্য চাকরিপ্রার্থীদের সহায়তা করতে, যেন তারা সঠিকভাবে প্রস্তুতি নিয়ে তাদের স্বপ্ন পূরণ করতে ।
ভোলার কৃতি সন্তান মোঃ নোমান হাসানের বর্তমান ও অনাগত ভবিষ্যত কর্মজীবন হোক দেশ ও জাতির কল্যাণে নির্মোহ ও নিবেদিতপ্রাণ, এ প্রত্যাশা তাঁর নিজ এলাকার আত্মীয়-স্বজন এবং সকল মানুষের।
RED TIMES LIMITED
116-117, Concord Emporium, Kataban, Dhaka-1205.
Mobile: 017111-66826
Email: redtimesnews@gmail.com
Copyright © 2025 RED TIMES. All rights reserved.