মোহাম্মদ কামরুজ্জামান হিমু:
রবিবার (২৫ মে) ভিডিও বার্তার মাধ্যমে ভূমি ভবনে ভূমি মেলার উদ্বোধন করেন অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড.মোহাম্মদ ইউনুস।
তিনি বলেন ভূমি সেবা নিতে আমাদের সকলের জন্য নতুন দ্বার উদ্বোধন হলো ।
জনবান্ধব ও ডিজিটাইলাইজড ভূমি সেবা দেওয়া ও জনসচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যে ভূমি ভবন থেকে এই মেলা সারা বাংলাদেশ ও মহানগর প্রতিটি রাজস্ব সার্কেলের ভূমি ভবন প্রাঙ্গণ প্রতিটি সার্কেলের মেলার স্টল তিন দিন একযোগ থাকবে। ভূমির মালিকগণ সরাসরি এসে মেলা থেকে ভূমি যে কোন সেবা নিতে পারবেন এই মেলা চলমান তিন দিন সারা বাংলাদেশ ব্যাপি।
উপজেলা পর্যায়ে এসিল্যান্ড অফিস, তহসিল অফিস ভূমি অফিসে মেলার মাধ্যমে সেবাদিতে প্রতিশ্রুতি বদ্ধ ভূমি মন্ত্রণালয়।
প্রতিবছর ন্যায় এই মেলা এবারে প্রধান উপদেষ্টা ঘোষণা দিলেন অনলাইনে আবেদন করে ঘরে বসেই নামজারি করাতে পারবেন ভূমি অফিসে যেতে হবে না। তিনি ভিডিও বার্তার মাধ্যমে এই ভূমি সেবা সারা বাংলাদেশের জনগণের মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে তিনি আরো বলেন সশরীরে যাওয়ার প্রয়োজন নেই।
ভূমি ভবনে ভূমি মেলায় ভূমি সেবায় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো উঠে আসেন যারা ভূমি সেবা হয়রানি হচ্ছেন যাদেরকে সশরীরে বিভিন্ন অজুহাতে দেখিয়ে নামজারি না মঞ্জুর হয় তারা ভূমিভবনে এসে অথবা ভূমি সেবা হট লাইনে কমপ্লেন দিতে পারবেন।
রোববার রাজধানী ভূমি ভবন সেমিনার কক্ষে অনুষ্ঠিত ভূমি মেলা ২০২৫ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বার্তা প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যেও উঠে আসে। অনুষ্ঠানের সভাপতি করেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এ এস এম সালেহ আহমেদ।
ভূমি অফিস সবচেয়ে বেশি দুর্নীতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে বলে মেলায় জানালেন ভূমি মন্ত্রণালয় উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার কারণ হিসেবে তিনি বলেন বেশিরভাগ জরিপের মাধ্যমে প্রকৃতি মালিকের নাম নেই, অন্যজনের নাম লিখে রাখা হয়েছে যাতে সাধারণ মানুষ ভোগান্তিবাড়ে।
রোববার (২৫ মে) ভূমি মেলা ২০২৫ এর উদ্বোধনী আয়োজনে এই মন্তব্য করেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা। তিনি আরো বলেন সমস্যা গুলো চিহ্নিত করে ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে দ্রুত সমাধান পথ খুঁজতে হবে। সার্ভার সমস্যার কারণে তিন থেকে চার কোটি টাকার বেশি আদায় করা সম্ভব হয় না।
ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী বলেন ভূমি মেলা ভূমি মন্ত্রণালয় কর্তৃক আয়োজন। ভূমির সাথে মানুষের সম্পর্ক নিবিড়। ভূমি আছে, ভূমি মালিক আছে কিন্তু ভূমি নিয়ে জটিলতা পড়েছেন এমন মালিক খুঁজে পাওয়া যাবেনা। ভূমি সেবা কে খুব কাছাকাছি নিতে চাই আমরা। ভূমি সেবা সহায়তা কেন্দ্র চালু পাইলট প্রকল্প শুরু হয়েছে এই সহায়তা কেন্দ্র চালু করলে জনগণ সেবা পাবে। তিনি আর বলেন তহসিল অফিস থেকে আমাদের সেবা দেবার কাজ শুরু হয় সেখানে যারা আছেন কিভাবে মানুষকে সেবা দিতে পারবে সেদিকে লক্ষ্য রাখা উচিত। দুটি মন্ত্রণালয়ে অধীনে দুটি বিভাগ আমাদের দেশে দলিল লেখা নিয়ে একটি জটিলতা রয়েছে দলিলগুলো সহজীকরণ হয় সেই বক্তব্য তিনি তুলে ধরেন ।
ঢাকা জেলা প্রশাসক তানভীর আহমেদ তিনি বলেন ভূমি মেলার মত অনুষ্ঠানগুলো আমাদের কাজের ফোকাসগুলো বৃদ্ধি পায়। ভূমি সেবা গুলো সব সময় দিতে পারলে আমরা তখনি সার্থক হব। ভূমি উন্নয়ন কর কাজটি দীর্ঘদিন থেকে হয়ে আসছে। ভূমি যখন হস্তান্তর রেজিস্ট্রেশন হয় এখনো অফলাইনে রয়ে গেছে ভূমি রেজিস্ট্রেশন এখনো অনলাইনে হচ্ছে না। আমাদের পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্রে ভূমি রেজিস্ট্রেশন শতভাগ অনলাইনে বাস্তবায়ন হচ্ছে। ঢাকায় অনেক সরকারি জমি রয়েছে সেগুলো সিএস, এস এ, আর এস ও মহানগর বিভিন্ন রেকর্ড হয়ে আছে। কিন্তু এসিল্যান্ডের কাছে পৌঁছে দিতে হবে কোন দাগে কোন মৌজায় সরকারি সম্পত্তি রয়েছে। ঢাকা জেলা প্রশাসক উদ্যোগে সরকারি সম্পত্তি একটি ডাটাবেজতৈরীর কাজ হাতে নিয়েছেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, গত ১৫ বছর বলা হয়েছে ডিজিটাল বাংলাদেশ অথচ বাস্তবে তা হয়েছে কিছু ডিজিটাল দ্বীপ’ বা আইল্যান্ড। তবে এ আইল্যান্ডগুলোর মধ্যে ইন্টারকানেক্টিভিটি তৈরি করা হয়েছে।
ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যব বলেন, ভূমি মন্ত্রণালয়ের বিচ্ছিন্ন ডিজিটাল সার্ভিস এখন একটি জায়গায় পাওয়া যাবে; এর মাধ্যমে ডিজিটাল ট্রান্সফর্মেশন গতি পাবে। এ ট্রান্সফরমেশনকে দুইভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে। একটি হলো মন্ত্রণালয় বা বিভাগগুলোর ট্রান্সফরমেশন। দ্বিতীয়টি হচ্ছে নাগরিক সেবা নামে একটি প্লাটফর্ম। এই নাগরিক সেবা নামটি প্রধান উপদেষ্টা নির্ধারণ করেছেন।
ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যব আরো বলেন, ভূমি জরিপ কাজ জিপিএস ও জিও ফেন্সিং প্রযুক্তির মাধ্যমে সম্পন্ন হবে। জমির মালিক চাইলে জরিপ কার্য গুগল আর্থে দেখতে পারবে। ভবিষ্যতে এই জরিপের সাথে ভূমির মালিকানার ম্যাপিং, কোনো মামলা আছে কি না থাকলে মামলার বর্তমান অবস্থা ও রাজস্ব আদায়ের তথ্য সংযুক্ত থাকবে। অর্থাৎ একটা সিঙ্গেল গেটওয়েতে বসে ভূমির ডিজিটাল ম্যাপের সাথে তার মালিকানাসহ বর্তমান অবস্থা দেখা যাবে। আর এই কাজটি করতে পারলে সেটিই হবে প্রকৃত ডিজিটালাইজেশন।
সভায় উপস্থিত ছিলেন তথ্য প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী, ভূমি সংস্কার বোর্ডের চেয়ারম্যান (সচিব) এজেএম সালাউদ্দিন নাগরী, ভূমি আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান (সচিব) মুহম্মদ ইবরাহিম। আলোচনার শুরুতে মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন অনুবিভাগ) মো. এমদাদুল হক চৌধুরী ভূমি মন্ত্রণালয়ের সার্বিক কার্যক্রম উপস্থাপনা করেন।
আলোচনা শেষে প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথি ও অতিথিবৃন্দ ভূমি জাদুঘর ও মেলার স্টল পরিদর্শন করেন।
RED TIMES LIMITED
116-117, Concord Emporium, Kataban, Dhaka-1205.
Mobile: 017111-66826
Email: redtimesnews@gmail.com
Copyright © 2025 RED TIMES. All rights reserved.