তাপস দাশ, শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি
চা-বাগান আর নৈসর্গিক সৌন্দর্যের জন্য সুপরিচিত মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এখানে পর্যটন বেড়েছে দ্রুত। পরিবার, একক ভ্রমণকারী কিংবা বিদেশি অতিথি— সবাই নিশ্চিন্তে ঘুরছেন। কারণ, নিরাপত্তায় আস্থা জুগিয়ে যাচ্ছে ট্যুরিস্ট পুলিশ।
রাধানগর জোন অফিস থেকে প্রতিদিনই মাঠে থাকে ট্যুরিস্ট পুলিশ সদস্যরা। পর্যটন এলাকা, রিসোর্ট, হোটেল, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান বা মাধবপুর লেক— ভিড় ও প্রয়োজন অনুযায়ী থাকে টহল, পাহারা ও গাইডলাইন। পথ নির্দেশনা, অভিযোগ গ্রহণ, জরুরি সহায়তা ও হারানো জিনিসপত্র উদ্ধারে তারা এখন পরিচিত একটি নিরাপদ আশ্বাসবোধের নাম।
স্থানীয় পর্যটন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পুলিশ সদস্যদের দ্রুত সাড়া ও সহনশীল ব্যবহারের কারণে শ্রীমঙ্গলে পর্যটনের অনুকূল পরিবেশ তৈরি হয়েছে। রাতে পর্যটকদের চলাচলও অনেক বেশি নিরাপদ মনে হয়।
রাধানগর পর্যটন কল্যাণ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. তারেকুর রহমান পাপ্পু বলেন,
“শ্রীমঙ্গলে পর্যটন শুধু ব্যবসা নয়, এটি আমাদের সংস্কৃতি ও অর্থনীতির বড় অংশ। ট্যুরিস্ট পুলিশের উপস্থিতি পর্যটকদের স্বস্তি ও আস্থা দিয়েছে। যদি তাদের জনবল ও প্রযুক্তিগত সুবিধা বাড়ানো যায়, শ্রীমঙ্গল আন্তর্জাতিক মানের নিরাপদ পর্যটন নগরী হিসেবে আরও শক্ত অবস্থান তৈরি করবে।”
ট্যুরিস্ট পুলিশ শ্রীমঙ্গল জোনের অফিসার ইনচার্জ মো. কামরুল হাসান চৌধুরী জানান,
“পর্যটকের নিরাপত্তাই আমাদের মূল দায়িত্ব। যেকোনো জরুরি পরিস্থিতিতে দ্রুততম সহায়তা দেওয়ার চেষ্টা করি। আচরণে সৌহার্দ্য বজায় রাখা, প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেওয়া এবং আইনগত সহায়তা নিশ্চিত করাকেই আমরা গুরুত্ব দিই।”
তিনি আরও বলেন, “শ্রীমঙ্গল ছাড়াও কমলগঞ্জ এলাকার গুরুত্বপূর্ণ স্পটগুলো আমাদের নজরদারিতে থাকে। লাউয়াছড়া ও মাধবপুরে পর্যটকদের ভিড় বেশি। তাই সেখানে টহল আরও জোরদার রাখা হয়।”
পর্যটন সংশ্লিষ্টদের মতে, ট্যুরিস্ট পুলিশের জন্য যানবাহন সুবিধা, আধুনিক যন্ত্রপাতি ও অতিরিক্ত জনবল বরাদ্দ হলে শ্রীমঙ্গলের পর্যটন আরও গতিশীল হবে। এতে পর্যটক সন্তুষ্টি বাড়বে, কর্মসংস্থানও বৃদ্ধি পাবে।
সবশেষে বলা যায়— পুলিশের উদ্যোগ, ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা এবং স্থানীয়দের ভ্রমণবান্ধব মানসিকতা— তিনটি মিলে শ্রীমঙ্গলকে এখন দেশের অন্যতম নিরাপদ পর্যটন অঞ্চল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করছে।