প্রিন্ট এর তারিখঃ সেপ্টেম্বর ১২, ২০২৫, ১:৩৫ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ সেপ্টেম্বর ১১, ২০২৫, ১১:০৬ পূর্বাহ্ণ

তিমির বনিক,মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:
লন্ডনে অশ্রুভেজা স্মরণে এম সাইফুর রহমান বাংলাদেশের সাবেক সফল অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী, প্রয়াত এম সাইফুর রহমানের ১৬তম শাহাদাৎ বার্ষিকীতে লন্ডনে আয়োজন করা হয় স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিলের। মঙ্গলবার স্থানীয় সময় (৯ই সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় The Atrium-এ এম সাইফুর রহমান স্মৃতি পরিষদ যুক্তরাজ্যের উদ্যোগে প্রবাসীরা স্মৃতির আবেগে ভেসে ওঠেন।
সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি সাইদুর রহমান রেনু এবং সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মো. অদুদ আলম। শুরুতেই কোরআন তেলাওয়াত করেন সাবেক ছাত্রদল নেতা দেলোয়ার হোসেন আহাদ।
প্রধান অতিথি ছিলেন মরহুমের জ্যেষ্ঠ সন্তান, সাবেক সংসদ সদস্য ও পরিষদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক এম নাসের রহমান। তিনি আবেগভরে বলেন—“বাবা শুধু অর্থমন্ত্রী ছিলেন না, তিনি ছিলেন বাংলাদেশের অর্থনীতির স্বপ্নদ্রষ্টা। তাঁর হাতে গড়া পথ আজও আমাদের জাতিকে পথ দেখাচ্ছে।”
ড. হাসনাত হোসেন এমবিই, প্রেসিডেন্ট ভয়েস ফর গ্লোবাল বাংলাদেশীস, বলেন—“এম সাইফুর রহমান ছিলেন অর্থনীতির স্থপতি, যিনি বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন।”
এম এ মালিক, সভাপতি যুক্তরাজ্য বিএনপি, বলেন—“বাংলাদেশের উন্নয়নের ইতিহাসে তাঁর অবদান প্রজন্মের পর প্রজন্ম স্মরণ করবে।”
ড. ওয়ালী তসর উদ্দিন ও প্রফেসর শাহগির বখত ফারুক, ব্রিটিশ বাংলাদেশ চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সাবেক প্রেসিডেন্ট, বলেন—“সাইফুর রহমান ছিলেন প্রবাসীদের কাছে এক আত্মবিশ্বাসের প্রতীক। তিনি দেখিয়েছিলেন কিভাবে প্রবাসীদের অবদান দেশের অর্থনীতিতে যুক্ত হতে পারে।”
নজরুল ইসলাম বলেন, সাবেক সম্পাদক সাপ্তাহিক সুরমা, বলেন-“তিনি শুধু রাজনীতিবিদ ছিলেন না, ছিলেন জাতীয় ইতিহাসের এক উজ্জ্বল অধ্যায়।”
তাইসির মাহমুদ, সম্পাদক লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাব, বলেন—“বাংলাদেশের গণমাধ্যম ইতিহাসেও তাঁর চিন্তা ও দর্শন ছিল প্রেরণার উৎস।”
সবচেয়ে আবেগঘন মুহূর্ত আসে যখন মঞ্চে ওঠেন মরহুমের নাতনী আমেরা রহমান। কণ্ঠরুদ্ধ আবেগে তিনি বলেন—“দাদুর স্মৃতি আজও আমাকে পথ দেখায়। তিনি ছিলেন আমার সবচেয়ে বড় প্রেরণা।”
এম শরিফুজ্জামান চৌধুরী তপন, সহ-সভাপতি স্মৃতি পরিষদ, বলেন—“তাঁর রচিত উন্নয়ন নীতি প্রবাসীদের হৃদয়ে অম্লান হয়ে আছে।”
নুরুল ইসলাম, সহ-সভাপতি স্মৃতি পরিষদ, বলেন—“তিনি ছিলেন এমন এক নেতা, যিনি দেশকে অর্থনৈতিক মুক্তির পথে নিয়ে গেছেন।”
আব্দুল মুহিত খাঁন বাদশা, সহ-সভাপতি স্মৃতি পরিষদ, বলেন—“তাঁর প্রজ্ঞা ও বিচক্ষণতা আজও আমাদের কাছে দিশারীর মতো।”
সায়কুল হাসান সেকুল, সাবেক সভাপতি মৌলভীবাজার থানা ছাত্রদল, বলেন—
“ছাত্ররাজনীতি থেকে জাতীয় পর্যায়—প্রতিটি ধাপে সাইফুর রহমান ছিলেন তরুণ প্রজন্মের অনুপ্রেরণা।”
সোয়ালেহীন করিম চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক স্মৃতি পরিষদ, বলেন—
“বাংলাদেশের অর্থনীতি আজও তাঁর পরিকল্পনার ছায়াতলে দাঁড়িয়ে আছে।”
রিয়াদ আহাদ, প্রচার সম্পাদক স্মৃতি পরিষদ যুক্তরাজ্য, বলেন—“প্রবাসীরা সবসময় তাঁকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে। তিনি ছিলেন প্রবাসী বাংলাদেশিদের আত্মবিশ্বাসের প্রতীক।”
অনুষ্ঠানে প্রদর্শিত হয় এম সাইফুর রহমানের বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবনের উপর নির্মিত দুটি প্রামাণ্যচিত্র, যা উপস্থিত সবাইকে আবেগে ভাসিয়ে তোলে।
শেষে মোনাজাত পরিচালনা করেন মাওলানা নজরুল ইসলাম, খতিব, ব্রিকলেন জামে মসজিদ। তাঁর কণ্ঠে দোয়া ওঠে আকাশে—“হে আল্লাহ, এই মহান মানুষটির আত্মাকে শান্তি দাও।”
যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন শহর থেকে আগত বিপুলসংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশির অংশগ্রহণে নৈশভোজের মধ্য দিয়ে আবেগময় এই স্মরণসভা শেষ হয়। তবে উপস্থিত সবার হৃদয়ে একটি অনুভূতি স্পষ্ট হয়ে ওঠে—এম সাইফুর রহমান নেই, কিন্তু তাঁর আলোকিত পথচলা আজও বেঁচে আছে বাংলাদেশ ও প্রবাসের প্রতিটি হৃদয়ে জাগ্রত চিত্রে জাগিয়ে তোলে।