আজ রবিবার, ২রা নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৭ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হত্যায় জড়িত কাকনসহ তার বাহিনীর ফাঁসির দাবিতে বাঘায় মানববন্ধন,কাঁদলেন নিহতের স্বজন -শিশুরাও

editor
প্রকাশিত নভেম্বর ১, ২০২৫, ০৬:২৯ অপরাহ্ণ
হত্যায় জড়িত কাকনসহ তার বাহিনীর  ফাঁসির দাবিতে বাঘায় মানববন্ধন,কাঁদলেন নিহতের স্বজন -শিশুরাও

Sharing is caring!

Manual5 Ad Code
দোয়েল,বাঘা (রাজশাহী) প্রতিনিধিঃ
হত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের শিকার নিহতের বাবা-মাসহ স্বজনরা হত্যার বিচার চেয়ে নিজেরা অঝোরে কেঁদেছেন। চোখের পানি আটকে রাখতে পারেননি অন্যরাও।
শুক্রবার(৩১ অক্টোবর)নিহত-আহতের পরিবার ও এলাবাসীবাসীর ব্যানারে  বাঘা উপজেলার গড়গড়ি ইউনিয়নের খানপুর বাজারে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে  আমান মন্ডল, নাজমুল মন্ডলকে গুলি করে হত্যাসহ মুনতাজ মন্ডল ও  রাবিক হোসেনকে আহত করার  প্রতিবাদ এবং দোষীদের বিচার দাবিতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নারি-পুরুষ অংশ নেন।
মানববন্ধনের ব্যানারের এক পাশে নিহত-আহতের ছবি আরেকপাশে হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে সাতজনের ছবি সাঁটিয়ে তাদের  সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসির দাবি জানান তারা। ৪৮ ঘন্টার মধ্যে আসামিদের  গ্রেপ্তার না করা হলে কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন।
উপজেলার নীচ খানপুর গ্রামের নিহত আমান মন্ডলের বাবা মিনাজ মন্ডল বলেন, দিন দুপুরে গুলি করে আমার ছেলেসহ নাজমুল মন্ডলকে হত্যাসহ মুনতাজ মন্ডল ও  রাবিক হোসেনকে গুরুতর আহত করার পরেও আসামীরা  এখানো গ্রেপ্তার হয়নি। তাদের স্বজনরাও ঘুরে বেড়াচ্ছে বুক ফুলিয়ে। প্রশাসনকে হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি করেছেন তিনি।
স্থানীয় বাসিন্দা বেলাল হোসেনের ভাষ্য, হত্যাকাণ্ডের ৫ দিন পার হলেও মূল আসামিদের ধরতে না পারা রহস্যজনক। খানপুর গ্রামের বাসিন্দা আশরাফ মন্ডল  বলেন, হত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করলে তাদের ব্যবহৃত অস্ত্রও উদ্ধার করা যাবে।
হত্যাকাণ্ডের শিকার নাজমুলের বাবা শুকুর মন্ডল মানববন্ধনে ছেলে হত্যার বিচার চেয়ে আর কিছু বলতে পারেননি। তারা হাউমাউ করে কেঁদে ফেলেন।
জানা যায়, সোমবার (২৭ অক্টোবর) রাজশাহীর বাঘা ও কুষ্টিয়ার  দৌলতপুর সীমান্তের ১৪ হাজার মাঠ নামে পরিচিত চাকলার চর এলাকায় কাশবন/খড়ের ক্ষেত নিয়ে বাক বিতন্ডার এক পর্যায়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষের  ঘটনা ঘটে। গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন- রাজশাহীর বাঘা উপজেলার নীচ খানপুর গ্রামের মিনাজ মন্ডলে ছেলে আমান মন্ডল (৩৬), শুকুর মন্ডলের ছেলে নাজমুল মন্ডল(২৬) চান মন্ডলের ছেলে মুনতাজ মন্ডল(৩২) ও আশরাফ মন্ডলের  ছেলে রাকিব হোসেন (১৮)। এর মধ্যে আমান মন্ডল ও নাজমুল মন্ডল মারা যায়। অপর দুইজন রামেক হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।
চান মন্ডল জানান, নদী ভাঙনের শিকার হয়ে তারা বর্তমানে রাজশাহীর বাঘা উপজেলার নীচ খানপুর গ্রামে বসবাস করছেন। রাজশাহীর বাঘা,কুষ্টিয়ার  দৌলতপুর সীমান্তের ১৪ হাজার মাঠ নামে পরিচিত চাকলার চর এলাকায় তাদের পৈত্রিক জমি রয়েছে। সেই জমিতে তারা কাশবনের খড় কাটছিলেন। কথিত ‘কাকন বাহিনী’র লোকজন আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে সেই জমি দখলে নিতে এলোপাথাড়ি  গুলি ছুঁড়ে। এতে গুলিবিদ্ধ ৪জনের মধ্যে দুইজন মারা গেছে।
এ ঘটনায় বাহিনীর প্রধান দৌলতপুর থানার মাঝদিয়াড় বৈরাগী চরের জমির উদ্দীন মাষ্টারের ছেলে হাসানুজ্জামান ওরফে কাকন ইঞ্জিনিয়ারকে প্রধান আসামী করে ২২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত২০/৩০জনকে আসামী করে নিহত আমান মন্ডলের বাবা মিনাজ মন্ডল বাদী হয়ে দৌলতপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলার এজাহার সুত্রে জানা গেছে,পবর্তীতে পুলিশ শর্টগানের কার্তুজের ৫৫ রাউন্ড খালি খোসা ও ১৫ রাউন্ড গুলির খোসা উদ্ধার করেছে।
 এদিকে ঘটনার পরদিন মঙ্গলবার (২৮-১০-২০২৫) দুপুর অনুমান ১২টার সময় কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা থানার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের রায়টা এলাকার পদ্মা নদীতে ভাসমান অবস্থায় লিটন ঘোষ (৩০) নামে একজনের মরদেহ উদ্ধার করে নৌ-পুলিশ। পরে মরদেহের ময়না তদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। লিটন ঘোষ কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা থানার রায়টা ঘোষপাড়া গ্রামের মৃত জামরুল ঘোষ এর ছেলে।
 বিষয়টি নিশ্চিত করে ঈশ্বরদী লক্ষ্মীকুণ্ডা নৌ-পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই শফিউদ্দিন বলেন,তার শরীরে অসংখ্য জখমের চিহ্ন ছিল। সংঘর্ষের ঘটনার পর থেকে লিটনও নিখোঁজ ছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে, দৌলতপুর-বাঘা সীমান্তে চর দখলকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের সময় তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে নদীতে ফেলে দেওয়া হয়েছে।
 দৌলতপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সোলাইমান সেখ জানান,  হত্যার ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। মিনাজ মন্ডল বাদী হয়ে ২২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত২০/৩০জনকে আসামী করে মামলাটি দায়ের করেছেন। আসামী গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান।
Manual1 Ad Code
Manual5 Ad Code