প্রিন্ট এর তারিখঃ নভেম্বর ২৫, ২০২৫, ৯:৩৪ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ নভেম্বর ২৪, ২০২৫, ৫:৪১ অপরাহ্ণ
বাঘায় গৃহবধুকে পুড়িয়ে হত্যা মামলায় আসামীদের ফাঁসির দাবিতে মানবন্ধন

দোয়েল,বাঘা(রাজশাহী) প্রতিনিধিঃ
আমাদের দাবি একটাই গৃহবধু অনন্যা খাতুনকে যারা শরীরে ডিজেল ঢেলে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করেছে তাদের ফাঁসি চাই। অনন্যার স্বামী সুরুজ সহ তার পিতা-মাতা ফাঁসির দাবিতে গৃহবধুর পরিবারসহ এলাকাবাসীর ব্যানারে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে দাড়িয়ে হত্যাকান্ডের মামলার আসামীদের ফাঁসির দাবি করা হয়।
সোমবার (২৪ নভেম্বর) বিকেল ৫টায় বাঘা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। বক্তব্য রাখেন নিহত গৃহবধু অনন্যার খালা সপুরা,সহোদরভাই মিঠু আলী,মামাতো ভাই বাউল শিল্পী নূর ইসলাম। পুড়িয়ে হত্যা মামলার আসামী সুরুজ বাঘা পৌরসভার চক নারায়ণপুর গ্রামের শহিদুল-হাজেরা দম্পতির ছেলে। তার পিতা মাতাকেও মামলায় আসামী করা হয়েছে।
হত্যাকান্ডের ঘটনাটি ঘটে নভেম্বর মাসের ১তারিখেরদিন। ভোর ৪টায় যৌতুকের টাকার জন্য অনন্যার উপর রাগ করে বাড়ির উঠানে নিয়ে পুড়িয়ে মারার উদ্দেশ্যে গায়ে ডিজেল ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে দেয় সুরুজ । তার ডাক-চিৎকারে স্থানীয়রা অনন্যাকে উদ্ধার করে বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। সেখানকার চিকিৎসক রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করলে সকাল ৮টায় রামেকের বার্ন ইউনিটে ভর্তির পর বিকাল পৌণে ৬টায় চিকিৎসারত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে। পরে অনন্যার সহোদর বড় ভাই মিঠু বাদি হয়ে সুরুজসহ তার পিতা-মাতাকে আসামী করে বাঘা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
গত শুক্রবার দিবাগত রাতে র্যাব-পুলিশের যৌথ অভিযানে ঢাকা মহানগরীর পল্লবী থানাধীন মিরপুর-১২ (লালডেগ) নামক এলাকায় অভিযান চালিয়ে সুরুজ (৩২)কে গ্রেপ্তার করা হয়। র্যাব-৪,র্যাব-৫ ও পুলিশ যৌথ অভিযান পরিচালনা করেন। সুরুজ ছদ্মবেশে রিকসা চালক হিসেবে কাজ করতো।
জানা যায়, প্রেম ঘটিত সম্পর্কে পরিবারের অমতে বিয়ে করেন সুৃরুজ- অনন্যা দম্পতি। মাদকাসক্ত সুরুজ বিয়ের পর থেকে বিভিন্ন সময় নেশার টাকা ও যৌতুকের দাবিতে নির্যাতন করতেন। মৃত্যুর আগে গৃহবধু তাঁর মাকে ফোন করে নির্যাতনের বিষয়টি জানান। হত্যাকান্ডের পর সুরুজ আত্নগোপনে চলে যায়। তার পরিবারের দাবি ছিল, অভিমানে আত্মহত্যা করেছেন। প্রতিবেশী আজিজুল হক ও সান্টু জানিয়েছেন, বাঁচাও বাঁচাও চিৎকার শুনে তারা ওই বাড়িতে গিয়ে বাড়ির গেট বন্ধ দেখেন। ধাক্কা দিলে বাড়ির লোকজন দরজা খুলে দিলে আগুনে ঝলসানো গৃহবধু অনন্যা খাতুনকে পড়ে থাকতে দেখেছেন।
মামলার সূত্রে জানা যায়, গত ১০ বছর আগে এজাহারনামীয় প্রধান আসামী মোঃ সুরুজ (৩২) এর সাথে অনন্যা খাতুন মুন্নি (২৫)’র বিয়ে হয়। তাদের ২ টি সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর শশুর-শাশুড়ী অনন্যাকে প্রায়শই গালিগালাজ ও অপমান করতো। তাদের প্ররোচনাতেই সুরুজ ২,৫০,০০০/-টাকা যৌতুক দাবি করে। অনন্যার পরিবার তার সংসারে সুখের কথা বিবেচনা করে গত ২০১৮ সালের মে মাসে ১,০০,০০০/- টাকা যৌতুক প্রদান করে। এর পরেও পরিবারের সদস্যদের প্ররোচনায় আরও ১,৫০,০০০/- টাকা যৌতুক দাবি করে সুরুজ । যৌতুকের টাকা দিতে অস্বীকার করলে অনান্যকে বিভিন্ন সময়ে মারপিট এবং শারীরিক নির্যাতন ও মানসিক ভাবে নির্যাতন করতো সুরুজ । এ নিয়ে গত মাসের ৩১ তারিখ অনন্যার সাথে সুরুজ এর ঝগড়া হয়। এক পর্যায়ে চড়-থাপ্পড় মারে। এই মাসের ১তারিখে ভোর ৪টায় যৌতুকের টাকার জন্য অনন্যার উপর রাগ করে বাড়ির উঠানে নিয়ে পুড়িয়ে মারার উদ্দেশ্যে গায়ে ডিজেল ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে দেয় সুরুজ ।
বাঘা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফম আছাদুজ্জামান জানান, গ্রেপ্তার সুরুজকে গত শনিবার সকালে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। মামলায় জড়িত অন্যদেও গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
RED TIMES LIMITED
116-117, Concord Emporium, Kataban, Dhaka-1205.
Mobile: 017111-66826
Email: redtimesnews@gmail.com
Copyright © 2025 RED TIMES. All rights reserved.