২৯শে এপ্রিল ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৬ই বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৫:১৮ অপরাহ্ণ, জুলাই ৩১, ২০২০
এলিজা আজাদ
একটা সাদামাটা জীবনের কথা লিখতে চেয়েছিল অমরাবতী
কোনরকমে কলেজে পেরুতেই বাবার ঠিক করা পাত্রের সাথেই তড়িঘড়ি বিয়ে
এরপর, সংসার-স্বামীসহ পরিবারের সকলের যত্নআত্তি-
সৎ মানুষের গৃহিণী হয়ে সংসারের টানাপোড়ন—
সুখ আর আকাঙ্ক্ষাগুলোর মুহুর্তপতন
এক-দুই-তিন করেই—
এরমাঝে সন্তানাদি-
মাতৃত্বসুখ তাকে ছুঁয়েছিল আকাশচুম্বী স্বপ্ন নিয়ে—
ওদের নরম-কোমল স্পর্শ ভালো লাগার স্বাধটাকে সুদৃঢ় আর পাকাপোক্ত করেছিল
এই একটি জায়গায় তার স্বপ্নগুলো ছিল রঙিন ঘুড়ির মতই অবলীলায় উড়ে বেড়াত।
অথচ, জীবন নামক খাতাটি থেকে-
সুখ নামক বস্তুটি যেন ডুমুরেরফুল।
এর আগমন অনুভব সব সে ভুলে যেতে লাগল।
ক্রমেই স্বামীর সাথে তার মানসিক দূরত্ব গিয়ে ঠেকল শারীরিক দূরত্বের চরম পর্যায়ে
ওদের দৈহিক মিলন প্রথমে সাপ্তাহিক এরপর পাক্ষিক আরেকটু বেড়ে তা মাসিক
আর এখন নেই বললেই চলে!!
না না, চলে বলে এখানে কোন শব্দ নেই
এটা এখন একেবারেই বন্ধ!!
ওদের একে অপরের প্রতি রুচি উঠে গেছে
স্বামী নামক বস্তুটি এখন নিত্য নতুন মেয়ের কাছে যায়।
সবথেকে অবাক বিষয় এটাই তার পরিবার এমনকি সমাজ তা নির্বিঘ্নে মেনেও নিয়েছে!
তার ভাইবোনেরা বলে ঘরের বউ ঠিক না থাকলে সক্ষম পুরুষ যাবে কোথায়?
প্রথম প্রথম অবাক হত এরপর অবাক হওয়াও সে ছেড়ে দিয়েছে।
অথচ, অমরাবতীর জীবনে স্বামীই ছিল একমাত্র পুরুষ
সেই অমরাবতীকেই প্রতিদিন তার স্বামীই অপমান করতে বাকী রাখেনি।
দোষ তার ছিলোনা যা করেছে বা ঘটেছে তার স্বামীর জন্যই ঘটেছে।
আজ থেকে পাঁচ বছর আগে এক বৃষ্টির রাতে স্বামীর বাড়ি ফিরতে দেরি দেখে অমরাবতীর খুব টেনশন হচ্ছিল।
সারা ঘরময় পায়চারী করছিল সে,
অনেকরাতে কলিং বেলের শব্দে সে দরজা খুলে দেখে এক বন্ধুকে সাথে নিয়ে স্বামী বাসায় ফিরেছে
হাতে কিসের যেন একটা প্যাকেট, সেখান থেকে মাংসের ধোঁয়াটে গন্ধ আসছে।
ঘরে ঢুকেই পরিচয় করিয়ে দিল লোকটির সাথে
আমার ছোট বেলার বন্ধু লন্ডন থেকে দশ বছর পর দেশে এসেছে। আমার জন্য দামী ব্রান্ডের মদ এনেছে। অমরাবতীর চোখ যেন কপালে। কোনদিন সে মদের বোতল সামনাসামনি চোখে দেখেনি, তা দেশি বিদেশী যাই হোক না কেন। হ্যাঁ নাটক-সিনেমায় যতটুকু দেখা যায় ততটুকুই তার জানা ও দেখা।
অনেকদিন পর বন্ধুকে পেয়ে অমরাবতীর স্বামী ভীষণ খুশি। তারা বাইরে থেকেই রাতের খাবার খেয়ে এসেছিল। ওরা ফ্রেশ হয়ে ড্রইং রুমে বসল। তারপর অনভ্যস্ত স্বামী বেশ উৎফুল্লতার সাথে প্যাকেট থেকে দামী ওয়াইনের বোতল বের করল। ওরা খাচ্ছিল আর ছেলেবেলায় ফিরে যাচ্ছিল।
হা হা-হো হো আর গল্পের তুফান মেইল তুলে দিয়েছিল। ওদের এই এলেবেলে কথোপকথন অমরাবতীও বেশ উপভোগ করছিল। এদিকে ঘড়ির কাটায় তখন অনেক রাত। দু’জনেই একপ্রকার জোর করেই অমরাবতীকে খেতে বলে। অনেকটা উৎসাহিত হয়ে অমরাবতীও ওয়াইনের গ্লাসে চুমুক দেয়। ব্যাস, দু-তিন পেগ পেটে যেতেই অমরাবতী আর নিজের মধ্যে ছিলোনা।
এদিকে স্বামী বেচারা সোফায় কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছে তা দু’জনের কারোই মনে নেই। যখন ঘুম ভাঙল অমরাবতী তার বিছানায় স্বামীর বদলে তার বন্ধুকে দেখতে পেল। সে নিশ্চিত বুঝে গেল তার সাথে রাতে কি ঘটেছে। তার শরীরে কাপড় ছিলোনা বললেই চলে। ভয়ে, লজ্জায় বন্ধুটি এবং অমরাবতী উভয়ের দিকে তাকাতে পারছিল না। হঠাৎ, ওদের চোখ পড়ল দরজার দিকে, অমরাবতীর স্বামী বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে আছে। তার চোখ থেকে যেন আগুনের স্ফুলিঙ্গ চতুরপাশে ঝরে পড়ছে। বন্ধু, ভয় আর লজ্জায় লাল হয়ে আড়ষ্ট হতে থাকল। এরপর, ঝটপট কাপড় পরে ঝড়ের বেগে ঘর থেকে বেরিয়ে গেল। যাবার সময় দু’জনের দিকে হাতজোর করে, সরি বলে চলে গেল। অমরাবতীও নিজেকে কাপড়ে ঢেকে নিল।
সেদিনের পর থেকে স্বামীর সাথে তার কথা ও শারীরিক সম্পর্ক কমে যেতে থাকল। এখন তারা দু’জনেই দু’জনার কাছ থেকে পালিয়ে বেড়ায়। শারীরিক ক্ষুধা মেটাতে তার স্বামী প্রায়ই বাইরে রাত কাটায় কিন্তু, সতেজ দেহী অমরাবতীর শারীরিক ক্ষুধা ধিরে ধিরে নির্জিব হতে বসেছে। সে তার স্বামীকে স্পষ্ট বলে দিয়েছে, আমি ডিভোর্স
চাই। তোমার সাথে একসাথে বাকীপথ চলা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। আই এম রিয়েলি ভেরি সরি। সহজ সরল অমরাবতী এখন জটিল জীবনের ব্যস্ততম নায়িকা।
RED TIMES LIMITED
116-117, Concord Emporium,
Kataban, Dhaka-1205.
Mobile: 017111-66826
Email: redtimesnews@gmail.com