ব্যারিষ্টার সুমন ব্যক্তিজীবনে হিন্দুধর্মাবলম্বীদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল

প্রকাশিত: ৬:৫৬ অপরাহ্ণ, জুলাই ২৩, ২০১৯

ব্যারিষ্টার  সুমন ব্যক্তিজীবনে হিন্দুধর্মাবলম্বীদের প্রতি  শ্রদ্ধাশীল

অঞ্জন কর

অনেক সময় ষড়যন্ত্রকারীরা স্বনামধন্য ব্যক্তিদের ফেসবুক আইডি বা পেজ ক্লোন করে, তাদের ছবি এবং অন্য তথ্য ব্যবহার করে হুবহু আইডি বা পেজ বানিয়ে ফেলে। ফেইসবুক থেকে ভেরিফাইড কিংবা গুরুত্বপূর্ণ ফলোয়ার সমৃদ্ধ পেজ কিংবা আইডিও ক্লোন করা যায় অথবা মূল আইডির অনুরূপ ফেইক আইডি বানানো যায়। অনেক ক্ষেত্রে মূল আইডির ব্যক্তি চাইলেও ফেইসবুকে কমপ্লেইন করে বা অন্য উপায়েও ফেইক আইডিগুলোকে বন্ধ করতে পারেন না। ধরুন, আপনার আইডি বা পেইজের অনুরূপ তেমন কোন ফেইক আইডি বা পেইজ কেউ খুলে ফেলেছে এবং সেই আইডি বা পেইজ থেকে বিভ্রান্তিকর কিছু পোস্ট করা হয়েছে এবং আপনাকে ফাসানোর জন্য তা সোশ্যাল নেটওয়ার্কে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে। সেক্ষেত্রে আপনার দায়টা কোথায়? মোট কথা, তার জন্য আপনি কোন ভাবেই দায়ী নন। কিন্তু তবুও আপনার প্রতিপক্ষ এটাকে উদ্দেশ্য করে আপনাকে নানা ভাবে হেয় করার চেষ্টা করবে বা করতে পারে অথচ এখানে আপনি সম্পূর্ণ নিষ্পাপ কিংবা নিরপরাধ।

সুপ্রীম কোর্টের স্বনামধন্য আইনজীবী, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (বাংলাদেশ) এর প্রসিকিউটর এবং সোশ্যাল এক্টিভিস্ট ব্যারিষ্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের ক্ষেত্রেও এমনটা হয়েছে। গত ১৯ জুলাই ওনার নামে একটা ফেইক আইডি থেকে হিন্দুধর্মাবলম্বীদের অনুভূতিতে আঘাত লাগে এমন একটি উস্কানিমূলক পোস্ট ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে।

হবিগঞ্জের সায়েদুল হক সুমন ২০০৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ সম্পন্ন করার পর ২০০৯ সালে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে চলে যান। সেখানে সিটি ইউনিভার্সিটি থেকে বার অ্যাট ল’সম্পন্ন করেন তিনি। সুপ্রিম কোর্টের এ আইনজীবী এখন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর। আইনজীবী হলেও সুমন পরিচিতমুখ হয়ে উঠেছেন সমাজের বিভিন্ন অসঙ্গতি কিংবা অনিয়মের বিরুদ্ধে তার ‘ফেসবুক লাইভ’ এর মাধ্যমে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার মধ্য দিয়ে। ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন একটি সামাজিক আন্দোলনের নাম। যেখানেই অনিয়ম, সেখানেই ফেসবুক খুলে লাইভে আওয়াজ তুলছেন তিনি। শত শত ব্যবহারকারী সেই ফেসবুক লাইভ শেয়ার করে ছড়িয়ে দিচ্ছেন, আর হাজার হাজার ভিউ’র সেই ভিডিও নজরে নিতে বাধ্য হচ্ছে কর্তৃপক্ষ। প্রতিবেদনের প্রথমে যে ক’টি অনিয়মের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, সেই অনিয়মগুলো দিনের পর দিন চলতে থাকলেও ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমনের এমন ‘ফেসবুক লাইভ আন্দোলন’র ফলে অবিলম্বে সমাধান দিতে বাধ্য হয়েছে কর্তৃপক্ষ। অনেকে তার বিরুদ্ধে নানা মুখরোচক কথা বললেও নিঃসন্দেহে ব্যারিস্টার সুমনের একটি সফল ও কার্যকরী উদ্যোগ।

এখানে উল্লখ্য যে, ব্যারিষ্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের নামে ভূয়া ফেইসবুক পেইজ খুলে তাকে ফাঁসানোর ষড়যন্ত্র হতে পারে ভেবে তিনি বিগত ২৮-০৫-২০১৯ইং তারিখে ঢাকার শাহবাগ থানায় বিভিন্ন ভুয়া পেইজের নাম উল্লেখ করে সাধারন ডায়েরি করেন যার নম্বর হচ্ছে ১৭০৯। তারপরেও গত ১৯ জুলাই হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অনুভূতিতে আঘাত লাগে এমন একটি পোস্ট তার নামের কোন এক ভূয়া ফেইসবুক পেইজ থেকে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। উক্ত ফেইক পোস্টটি ছড়িয়ে পড়ার পর পরই অর্থাৎ গত ২০ জুলাই ২০১৯ইং বিকেল ৩.০৩ মিনিটে তিনি তার ফেরিফায়েড ফেইসবুক পেইজ থেকে বিষয়টি নিয়ে একটি পোস্ট শেয়ার করেন ব্যারিস্টার সুমন। পোস্টটি নিম্নরূপঃ ” আমার নাম ব্যাবহার করে একটি ফেইক পেইজ হিন্দু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে বিষেদগার করছে। আমি এ বিষয়টি পুলিশকে জানিয়েছি। আপনারা সচেতন থাকবেন। এটাই আমার একমাত্র পেইজ যার ফলোয়ার ২০ লক্ষের অধিক।”

ব্যারিস্টার সুমনের নামের ভূয়া ফেইসবুক পেইজের সেই উস্কানীমূলক পোষ্টকে উদ্দেশ্য করে গত ২২ জুলাই, সোমবার হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কটূক্তি ও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার অভিযোগে ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মমলা করেন গৌতম কুমার এডবর নামে এক বেসরকারি কর্মকর্তা। উক্ত মামলাটি পুলিশকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

গণমাধ্যম থেকে জানতে পারলাম- ব্যারিষ্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন বলেছেন, “ভুয়া পেইজ ব্যবহার করে আজকে যে মামলাটি আমার বিরুদ্ধে করা হলো এটি একটি বড় ষড়যন্ত্র বলে আমি মনে করি। আমার বিশ্বাস সৎ পথে থাকলে আল্লাহ সহায় হবেন এবং সকল ষড়যন্ত্র নস্যাৎ হবে।”

ব্যারিষ্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন আর আমি জন্মসূত্রে একই জেলার বাসিন্দা। মেধা ও মননে, চিন্তা ও চেতনায় ওনি একজন ভালো মনের মানুষ- সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। ব্যক্তিগত আগ্রহে ওনার এলাকার মানুষদের কাছ থেকে খবর নিয়ে জেনেছি, ওনি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের প্রতি খুবই আন্তরিক এবং শ্রদ্ধাশীল। ওনার আন্তরিকতার জন্যই ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই ওনাকে খুব ভালোবাসেন। সুতরাং যার ভেতর হিন্দুধর্মাবলম্বীদের প্রতি এতো শ্রদ্ধা, ভালোবাসা কিংবা আন্তরিকতা বিরাজমান তার মতো স্বশিক্ষিত ব্যরিস্টার কখনোই হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অনুভূতিতে আঘাত লাগে এমন কিছু বলতে বা করতে পারেন না- এটা কখনোই বিশ্বাসযোগ্য নয়।

ব্যারিষ্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন ব্যক্তিজীবনে যেমন একজন সৎ চরিত্র ও স্বচ্ছ হৃদয়ের অধিকারী ব্যক্তিত্ব তেমনি একজন ভালো আইনজীবীও বটে। আর্ত সামাজিক প্রেক্ষাপট তথা মানবিক মূল্যবোধের জাগরণসহ বহুমুখী উন্নয়নে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছেন। এক কথায়, জীবনের হুমকি স্বত্তেও সারা বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে থাকা অনেক অসংগতি দূর করার ক্ষেত্রে তিনি নির্ভীক ভূমিকা পালন করে চলেছেন। এমন একজন ভালো মানুষের বিরুদ্ধে একটি মিথ্যে মামলা একটি বড় ষড়যন্ত্র ছাড়া আর কিছুই নয়। স্থান-কাল-পাত্র, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে আমাদের সবার উচিৎ ব্যারিষ্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের বিরুদ্ধে সংঘটিত মিথ্যে মামলাটির ব্যাপারে প্রতিবাদ করা এবং ওনার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের যে আবাস পাওয়া যাচ্ছে সেই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলা। কারণ নানা অসংসগতিতে, বিপদে যে মানুষ নিঃস্বার্থভাবে আমাদের পাশে দাড়ান সেই নিঃস্বার্থ মানুষের পাশে দাঁড়ানো আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। না হলে ভবিষ্যতে আমাদের বিপদে, আপদে কিংবা অসংগতিতে পাশে দাড়ানোর মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর হয়ে পড়বে।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

লাইভ রেডিও

Calendar

May 2024
S M T W T F S
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031